মীনা কুমারী। ছবি— সংগৃহীত।
(তিন তালাক নিয়ে মঙ্গলবারই (২২ অগস্ট) সুপ্রিম কোর্ট ঐতিহাসিক রায় দান করেছে। এই প্রথা অসাংবিধানিক, বেআইনি ও ধর্মবিরুদ্ধে বলে জানিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। এই ঘোষণার পরই বলিউড অভিনেত্রী মীনা কুমারীকে নিয়ে একটি খবর হয় দেশের সংবাদমাধ্যমে। হিন্দি, ইংরেজি ও বাংলা-সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষার বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমেই খবর হয় যে, মীনা কুমারীও তিন তালাকের শিকার হয়েছিলেন। সেই ‘খবর’ আমরাও করেছিলাম। কিন্তু বুধবার (২৩ অগস্ট) এই খবর ঠিক নয় বলে দাবি করা হয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে। মীনা কুমারী বা তাঁর স্বামী কমল আমরোহী কেউই জীবিত না থাকায় এ নিয়ে সরাসরি কোনও তথ্য পাওয়া সম্ভব নয়। তবে তাঁদের জীবন ও কাজের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তি জানিয়েছেন, মীনা কুমারীর সঙ্গে কমল আমরোহীর পারিবারিক অশান্তির কথা জানলেও, তিন তালাকের পর পুনর্বিবাহের কোনও ঘটনা তাঁদের জানা নেই। এই দাবি সত্যি হলে, অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত।)
তিন তালাকের অবসান চেয়ে আবেদন করেছিলেন মুসলিম মহিলা ও মানবাধিকার সংগঠনের সদস্যরা। মঙ্গলবার সর্বোচ্চ আদালত তিন তালাক নিয়ে ঐতিহাসিক রায় জানিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জেএস খেহরের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে তিন তালাক প্রথা অসাংবিধানিক।
এই তিন তালাক প্রথার জেরেই বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়েছিল বলিউড অভিনেত্রী মীনা কুমারীর। অভিনেত্রীর স্বামী পরিচালক কমল আমরোহী তাঁকে তিন বার তালাক বলে ফেলেছিলেন। তিন তালাক উচ্চারণের ফলেই ‘নিকাহ’ ভেঙে গিয়েছিল ছ-এর দশকের ‘দ্য ট্র্যাজেডি কুইন’-এর।
মীনা কুমারী ও কমল আমরোহী। ছবি— সংগৃহীত।
আরও পড়ুন, তিন তালাক সংবিধান বিরোধী, জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট
আরও পড়ুন, চ্যাঙ্কি পাণ্ডের মেয়ের ডিএনএ টেস্টের দাবি তুললেন ফারহা?
‘তামাশা’ ছবির সেটে অভিনেতা অশোক কুমার মীনা কুমারীর সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেন কমল আমরোহীর। এর পরই নিজের ‘আনারকলি’ ছবির জন্য মীনা কুমারীকে বেছে নেন আমরোহী। ছবির শুটিং শুরু হওয়ার আগেই একটি ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েন মীনা কুমারী। তাঁকে হাসপাতালে দেখতে যান আমরোহী। মীনা কুমারী জানতে চান, দুর্ঘটনার পরেও তিনিই কি ‘আনারকলি’ ছবির নায়িকা? কমল আমরোহী নাকি একটি পেন দিয়ে তাঁর হাতে লিখে দিয়েছিলেন ‘মেরি আনারকলি’। অর্থাৎ ‘আমার আনারকলি’।
১৯৫২ সালে গোপনে ‘নিকাহ’ হয় দু’জনের। যদিও দু’জনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির জেরেই, প্রায় ১২ বছর পর ১৯৬৪-তে বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁদের। শোনা যায়, রাগের বশেই নাকি এক দিন তিন বার তালাক বলে ফেলেছিলেন আমরোহী। যদিও পরে মীনা কুমারীকে ফিরে পেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিন তালাক প্রথায় সেটি কার্যত অসম্ভব ছিল। হালালা প্রথার নিয়ম অনুযায়ী, জিনাত আমানের বাবা আমান উল্লাহ খানের সঙ্গে ‘নিকাহ’ করতে হত মীনার। তাঁর সঙ্গে পারস্পরিক সহমতে বিচ্ছেদের পর, ফের আমরোহীর সঙ্গে ‘নিকাহ’ হতে পারত মীনা কুমারীর। যদিও শেষ পর্যন্ত তা হয়েছিল কিনা জানা যায়নি।