ওয়েবের মঞ্চ এই অভিনেতাদের কেরিয়ার গড়ার দ্বিতীয় সুযোগ দিয়েছে
Sushmita Sen

এ ভাবেও ফিরে আসা যায়

‘মুন্নাভাই’, ‘গোলমাল’-এর মতো ফ্র্যাঞ্চাইজ়িতে কাজ করা অভিনেতার কাছে আসত না কোনও চিত্রনাট্য।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২০ ০৩:১৬
Share:

—ফাইল চিত্র।

লাইমটলাইটের বৃত্ত থেকে সরে যাওয়াটা ঠিক কেমন, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তা বলেছিলেন অভিনেতা আরশাদ ওয়ারসি। ‘‘একটা সময়ে আপনাকে নিয়ে তুমুল মাতামাতি হল। ক্রমশ সেই উন্মাদনাটা কমে গেল। তার পর হয়তো কেউ আর চিনতেও পারল না।’’ আরশাদের মতো অনেক অভিনেতাকে ফের প্রচারের আলোয় এনেছে ওয়েব প্ল্যাটফর্ম, যাঁরা কখনও ফ্লপের মিছিলে বা নতুনদের ভিড়ে হারিয়ে গিয়েছিলেন। ওটিটি যেমন কনটেন্টের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে, তেমনই তৈরি করেছে অভিনয়ের পরিসর। নতুন মুখের পাশাপাশি চর্চায় ফেরত এসেছেন সুস্মিতা সেন, ববি দেওল, আরশাদেরা।

Advertisement

‘মুন্নাভাই’, ‘গোলমাল’-এর মতো ফ্র্যাঞ্চাইজ়িতে কাজ করা অভিনেতার কাছে আসত না কোনও চিত্রনাট্য। আরশাদের ফোন এড়িয়ে যেতেন প্রযোজক, পরিচালকেরা। ওয়েব সিরিজ় ‘অসুর’ বদলে দেয় অনেক কিছু। মূলত কমিক চরিত্রে অভিনয় করে আসা আরশাদের ‘অসুর’-এর পারফরম্যান্স চমকে দিয়েছিল সকলকে। ওয়েব তাঁর কাছে ‘আশীর্বাদের মতো’, বলেছেন ববি দেওল। নেটফ্লিক্সের ছবি ‘ক্লাস অব এইটিথ্রি’তে সিস্টেমের বিরুদ্ধে লড়াই করতে থাকা এক পুলিশ অফিসার তিনি। অন্য দিকে সিরিজ় ‘আশ্রম’-এ হাড় হিম করা খল চরিত্রে। যাঁরা এক সময়ে ববির অভিনয় দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতেন, বাহবা দিয়েছেন তাঁরাও। সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে ববি বলেছেন, কাজের প্রস্তাব আসা কমে যাওয়ার পরে কী ভাবে তিনি হতাশায় ডুবে অ্যালকোহলকে সঙ্গী করেছিলেন। অভিনেতার আশা, কনটেন্টভিত্তিক সিনেমার যুগে বড় পর্দাতেও তিনি চ্যালেঞ্জিং চরিত্র পাবেন। একই ভাবে ওয়েব সিরিজ় ‘আরিয়া’ দিয়ে ক্যামব্যাক করেছেন সুস্মিতা সেন। বিশ্বসুন্দরীর খেতাব জয়ের পরে বলিউডে পা রাখতে সমস্যা হয়নি এই বঙ্গতনয়ার। কিন্তু বলিউডে সেরার মুকুট তিনি কোনও দিনই পাননি। ভুল চরিত্রের বাছাই লড়াইয়ের ট্র্যাক থেকে সরিয়ে দিয়েছিল তাঁকে। ‘ম্যায় হুঁ না’ বা ‘বিবি নাম্বার ওয়ান’-এ নেহাতই আইক্যান্ডি চরিত্র হয়ে থেকে গিয়েছিলেন। বরং ‘ম্যায়নে পেয়ার কিউঁ কিয়া’য় সুস্মিতার অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে। সুস্মিতার স্ক্রিন প্রেজ়েন্স বরাবরই চমৎকার, কিন্তু অভিনয়? একটা গোটা সিরিজ়ের ভার যে তিনি নিতে পারেন, তার প্রমাণ ‘আরিয়া’। সিরিজ়ের সাফল্যের পরে দ্বিতীয় কিস্তিও আসছে। আর এক বিশ্বসুন্দরী লারা দত্ত কেরিয়ার ফেরানোর চেষ্টা করেছেন ওয়েব সিরি‌জ় ‘হানড্রেড’ দিয়ে।

লারা, সুস্মিতার মতো পরিস্থিতি কিন্তু রবিনা টন্ডনের ছিল না। গোটা নব্বইয়ের দশক জুড়ে পরপর হিট ছবি ছিল তাঁর। ‘মোহরা’, ‘আন্দাজ় অপনা অপনা’, ‘দুলহে রাজা’র মতো বাণিজ্যিক ছবির পাশাপাশি তিনি ‘শূল’, ‘দামন’-এর মতো ছবিও করেছেন। নতুনদের উত্থান এবং বয়সমাফিক চরিত্র না পাওয়ায় রবিনাকে সরে যেতে হয়েছিল। তবে তিনি ফিরছেন। অভিনেত্রী এখন হিমাচল প্রদেশে ওয়েব সিরিজ়ের শুট করছেন, যাঁর লেখিকা তিনি নিজেই। ‘মেন্টালহুড’ সিরিজ় দিয়ে ওয়েবে পা রেখেছিলেন আর এক জনপ্রিয় অভিনেত্রী করিশ্মা কপূরও। ওই সিরিজ়েই ছিলেন ডিনো মোরিয়া। শমিতা শেট্টিকে দেখা যাবে হিন্দি সিরি‌জ় ‘ব্ল্যাক উইডো’তে। এঁরা সকলেই চেষ্টা করছেন দ্বিতীয় ইনিংসে পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে।

Advertisement

ওয়েবের মঞ্চ জনপ্রিয়তা দিয়েছে এমন অভিনেতার সংখ্যা কম নয়। জয়দীপ অহলওয়াত, রসিকা দুগ্গল, পঙ্কজ ত্রিপাঠীদের খ্যাতির পরিসর বেড়েছে ওয়েবের কল্যাণেই। কিন্তু দক্ষ অভিনেতা থাকা সত্ত্বেও, ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো কেন সুস্মিতা, ববিদের মতো পুরনো মুখেদের সুযোগ দিচ্ছে? বিশেষজ্ঞদের মতে, বড় পর্দার তুলনায় এখন ওয়েবে প্রতিযোগিতা বেশি। সেই কারণে যেমন অভিনেতার প্রয়োজন, তেমনই আলাদা চমকও দরকার। অভিনেতারাও তাই

ওয়েবের আকর্ষণ উপেক্ষা করতে পারছেন না।

সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে নেটফ্লিক্সের ইংরেজি মুভি ‘দ্য লাইফ অ্যাহেড’-এর ট্রেলার, যেখানে ক্যামব্যাক করছেন সোফিয়া লোরেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement