‘অভিনেতার দিক থেকে আমার কাছে চিত্রনাট্যই সব’—ছবি:সোশ্যাল মিডিয়া
লকডাউন ওঠায় যশের সমস্যা আরও বাড়ল?
সুমন: (একটু থমকে হেসে ফেলে) যশ ভীষণ ক্রুশিয়াল পয়েন্টে দাঁড়িয়ে। ক্যানসার ভাল মতো থাবা বসিয়েছে শরীরে। অন্য দিকে, রোহিণী সাড়া না পেয়ে ‘দেখে নেব’ বলে হুমকি দিচ্ছে! সত্যিই চাপে আছি।
রোহিণী নাকি অপহরণের প্ল্যানও কষছে?
সুমন: আসলে যশের প্রতি রোহিনীর ভালবাসায় এখন ‘অবসেশন’ আর ‘সম্মান’ জড়িয়ে গিয়েছে। অনেকটা শাহরুখ খানের ‘ডর’-এর মতো। ফলে, যেনতেনপ্রকারেণ শবনমের থেকে যশকে দূরে রাখাই তার একমাত্র লক্ষ্য।
যশ এমনিতেই তো শবনমের থেকে দূরে....
সুমন: শবনমের জীবনে যশের অস্তিত্ব নেই আর। দ্বিতীয় স্বামী দেবদীপ সেনের সঙ্গে ভাল আছে সে। যশ চায়ও না তাঁর রোগক্লিষ্ট জীবনের সঙ্গে শবনমকে জড়াতে। কিন্তু শবনমের প্রতি তার ভালবাসা আজও গভীর। তাই রোজ এক বার শবনমকে দেখতে পেলেই সে খুশি। এর বেশি আর কিছুই চায় না।
প্লেটোনিক লাভ?
সুমন: (হেসে ফেলে) এখন অনেকটাই তেমন চলছে যশ-শবনমের মধ্যে।
একটি শটে রোহিণীকে যশের হাঁটু জড়িয়ে অনুনয় করতে দেখা গিয়েছে। শটটি লকডাউনের আগের?
সুমন: একদম। তখনও আমি ভারিক্কি। শবনম, রোহিণীর সঙ্গে মানানসই দেখানোর জন্য। লকডাউনের পরের শটে আমি অনেকটাই স্লিম।
প্রায় প্রতি ধারাবাহিকে এখন একাধিক বউ, প্রেম, পরকীয়া। এগুলো কেন?
সুমন: দুটো উত্তর দেব। অভিনেতার দিক থেকে আমার কাছে চিত্রনাট্যই সব। কাহিনি যা বলবে তাকে জীবন্ত করাই আমার দায়িত্ব। ধারাবাহিকের শুরুতেও স্ক্রোলে দেখানো হয়, সব চরিত্র কাল্পনিক। সেটা মনে রেখেই অভিনয়। তাই অভিনয় শেষ হলেই এ সব আর মাথায় থাকে না। পাশাপাশি আমি দর্শকও। অন্য ধারাবাহিক দেখি নিয়মিত। ফলে, সে জায়গা থেকে কখনও কখনও হয়ত অস্বস্তি লাগে। এ ক্ষেত্রে একটা কথা বলি, আমি শিলিগুড়ির ছেলে। একই ভাবে কলকাতারও। শিলিগুড়িতে ‘ডিভোর্স’ ততটাও জাঁকিয়ে বসেনি। কিন্তু কলকাতায় মেয়েরা ছেলেদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সব জায়গায় লড়ছেন বলে এগুলো যথেষ্ট পরিচিত। তারই ঝলক পর্দায় উঠে এলে খুব অবাক হই না!
‘রাজামশাই হিসেবে থাকছি ক্ষীরের পুতুল-এ’, ছবি:সোশ্যাল মিডিয়া
শিলিগুড়ির দর্শকেরা প্রশ্ন তোলেন না যশের কাছে এই নিয়ে?
সুমন: বলেন তো। তাঁদের বলি, এটাই তো এখন বাস্তব। কোথাও কম কোথাও বেশি। পর্দা তো বাস্তবেরই ছায়া।
ধারাবাহিকের গল্প যে ভাবে এগোচ্ছে, মনে হচ্ছে যশের ছুটি নেওয়ার সময় হচ্ছে?
সুমন: হচ্ছে। তবে কবে বা কত দেরি, এখনই বলতে পারব না। এটা হওয়ারই ছিল। কারণ, ‘ক্ষীরের পুতুল’-এর কাজ শুরু হবে খুব শিগগিরি। ফলে, যশের ছুটি পাওয়া খুব দরকার।
আরও পড়ুন: পিছু হঠার পালা?
নতুন ধারাবাহিকে শুট কবে থেকে শুরু?
সুমন: (হাসি) হ্যাঁ...রাজামশাই হিসেবে থাকছি ‘ক্ষীরের পুতুল’ এ। তার জন্য ওজন ঝরিয়ে স্লিম হতে হয়েছে। শুট শুরু সম্ভবত জুলাই মাসে। তবে আমি শিওর নই।
এত দিনের চেনা সেট, ধারাবাহিক, চরিত্র ছেড়ে যেতে মন খারাপ করছে না?
সুমন: ভীষণ মন খারাপ করছে। সেটটাই তো ঘর-বাড়ি হয়ে উঠেছিল। যেখানে শবনম, রোহিণী, পরিচালক, প্রযোজক, পর্দার মা-বাবা, এমনকি ভক্তেরাও ডাকত ‘যশ’ বলে। সোশ্যালে প্রচুর প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি। ভাল লাগছে, কষ্টও হচ্ছে। মনে হচ্ছে, নিজের চেনা সংসার ছেড়ে বিদায় নিচ্ছি।
আরও পড়ুন: মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য
শবনম কী বলছে?
সুমন: মানালিরও মন খারাপ। বলেছে, “চলেই যাচ্ছিস যখন অফ স্ক্রিনে আর ঝগড়া না করারই চেষ্টা করব।’ খুব ভাল বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল সবার সঙ্গে।
যশের জীবনে শবনম, রোহিণী দুই নারী। রাজামশাইয়ের জীবনেও সুয়োরানি, দুয়োরানির উপস্থিতি। সুমন প্লেটোনিক লাভে বিশ্বাসী নাকি একাধিক প্রেম, বিয়েতে?
সুমন: বলতে দ্বিধা নেই, অনেক বার প্রেমে পড়েছি, একাধিক সম্পর্কে জড়িয়েছি। তার পরেও গত দু’বছর ধরে একা। এখন মনে হয়, আমি জোর খাটাতে পারিনি বলে, অন্যের স্বাধীনতাকে সম্মান করেছি বলে যেমন এত সম্পর্কে জড়িয়েছি, তেমনই একাধিক সম্পর্কে হয়তো বিশ্বাসী বলেই এত বার প্রেমে পড়েছি। আবার, আমার এখনকার একাকিত্বই কিন্তু শবনমকে দূর থেকে ভালবাসার অভিনয়ে জীবন্ত করেছে।