Bollywood

বলিউডে ব্যর্থ হলেও কাদের খানই এখনও ‘ভরসা’ তাঁর ছেলের

কাদের খান সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং‌ পাশ করার পরে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। অধ্যাপনার পাশাপাশি কাদের খান সময় দিতেন তাঁর থিয়েটারের শখ পূর্ণ করার জন্যেও।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২০ ১০:২২
Share:
০১ ১৮

‘তুমি কোথাকার অমিতাভ বচ্চন যে তোমায় ফিল্মে অভিনয়ের সুযোগ দেওয়া হবে?’ বড় ছেলে সরফরাজ যখন বলেছিলেন তিনি অভিনয় করতে চান, তখন তাঁর কাছে এ কথাই জানতে চেয়েছিলেন কাদের খান।

০২ ১৮

নিজেরা তারকা হলেই যে সন্তানদেরও ইন্ডাস্ট্রিতে লঞ্চ করতে হবে, এই ধারনার একেবারে বিপরীত মেরুতে অবস্থান ছিল এই প্রবীণ অভিনেতার। ছেলেদের অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য কোনও দিন নিজের থেকে উদ্যোগী হননি তিনি।

Advertisement
০৩ ১৮

খলনায়কের পাশাপাশি অন্য যে কোনও ভূমিকায় সমান তালে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন কাদের খান। অবশ্য শুধু অভিনেতা বললে তাঁর সব পরিচয় দেওয়া হয় না। তিনি এক জন সফল চিত্রনাট্যকারও।

০৪ ১৮

তবে কাদের খানের নিজের জীবনে যদি কোনও ‘তারকা’ থেকে থাকে, তা হল তাঁর জীবন সংগ্রাম। তিনি চেয়েছিলেন তাঁর তিন ছেলেও নিজেদের যোগ্যতায় পরিচয় অর্জন করুক। বাবার পরিচয়ের ছায়ায় নয়।

০৫ ১৮

কাদের খানের জন্ম অবিভক্ত ভারতের পিশিন প্রদেশে ১৯৩৭ সালের ২২ অক্টোবর। এখন এই অংশ পড়ে বালুচিস্তানে। তাঁর বাবা ছিলেন আফগানিস্তানের কন্দহরের। মা ছিলেন পিশিন প্রদেশের-ই বাসিন্দা। পরবর্তী কালে তাঁরা স্থায়ী ভাবে মুম্বইয়ে বসবাস করেন।

০৬ ১৮

কাদের খান সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং‌ পাশ করার পরে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। অধ্যাপনার পাশাপাশি কাদের খান সময় দিতেন তাঁর থিয়েটারের শখ পূর্ণ করার জন্যেও। তবে তিনি মূলত নাটকের স্ক্রিপ্ট লিখতেন আর মাঝে মাঝে অভিনয় করতেন। ‘তাস কে পাত্তে’ নাটকে তাঁর অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়ে যান দিলীপকুমার।

০৭ ১৮

দিলীপকুমার তাঁকে সুযোগ দেন ‘সাগিনা মাহাতো’ এবং ‘বৈরাগ’ ছবিতে। সেইসঙ্গে আসে চিত্রনাট্য লেখার সুযোগও। ১৯৭২ সালে মুক্তি পাওয়া ছবি ‘জওয়ানি দিওয়ানি’ ছবিতে কাদের খান প্রথম স্ত্রিপ্ট লেখেন।

০৮ ১৮

তিনশোরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন কাদের খান। চিত্রনাট্য লিখেছেন আড়াইশোর বেশি ছবিতে। রাজেশ খন্নার অনুরোধে প্রযোজক মনমোহন দেশাই তাঁকে সেই আমলে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন ‘রোটি’ সিনেমার চিত্রনাট্য লেখার জন্য। ১৯৭৪ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘রোটি’।

০৯ ১৮

এক দিকে আসরানি, শক্তি কপূর, জনি লিভারের পাশাপাশি কমেডিয়ান হিসেবে, অন্য দিকে অমরীশ পুরী, প্রেম চোপড়ার পাশাপাশি খলনায়ক হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেন কাদের খান।

১০ ১৮

তাঁর ফিল্মোগ্রাফিতে উল্লেখযোগ্য হল ‘মাস্টারজি’, ‘দোস্তি দুশমনি’, ‘ঘর সংসার’, ‘লোহা’, ‘খুন ভরি মাং’, ‘বিবি হো তো অ্যায়সি’ এবং ‘ঘর হো তো অ্যায়সা’। আশির দশকের শেষ থেকে তাঁকে বেশি দেখা গিয়েছে কৌতুকাভিনয়ে।

১১ ১৮

‘হিম্মতওয়ালা’, ‘আজ কা দৌড়’, ‘সিক্কা’, ‘ঘর পরিবার’, ‘বোল রাধা বোল’, ‘আঁখে’, ‘তকদিরওয়ালা’, ‘দুলহে রাজা’, ‘কুলি নাম্বার ওয়ান’, ‘আন্টি নাম্বার ওয়ান’, ‘ছোটে সরকার’, ‘ঘরওয়ালি বাহারওয়ালি’, ‘হিরো হিন্দুস্তানি’-র মতো ছবির সাফল্যের অন্যতম শর্ত ছিল কাদের খানের কৌতুকাভিনয়।

১২ ১৮

চিত্রনাট্যকার কাদের খানকেও মনে রাখবে বলিউড। ‘মহা চোর’, ‘ধর্ম কাঁটা’, ‘নয়া কদম’, ‘ফিফটি ফিফটি’, ‘মাস্টারজি’-র মতো ছবি তাঁর লেখক হিসেবে কেরিয়ারের প্রথম দিকের ছবি

১৩ ১৮

অমিতাভ বচ্চনের বহু সুপারহিট ছবির চিত্রনাট্যকার কাদের খান। ‘মিস্টার নটবরলাল’, ‘খুন পসিনা’, ‘দো অউর দো পাঁচ’, ‘সত্তে পে সত্তা’, ‘ইনকিলাব’, ‘হম’ ‘কুলি’, ‘অমর আকবর অ্যান্টনি’, ‘মুকদ্দর কা সিকন্দর’ এবং ‘অগ্নিপথ’-এর মতো ছবির সাফল্যের পিছনে অন্যতম শর্ত কাদের খানের স্ক্রিপ্ট।

১৪ ১৮

প্রবীণ বয়সে কাদের খান সপরিবারে মুম্বই থেকে কানাডার টরন্টোয় চলে গিয়েছিলেন। সেখানেই তিনি প্রয়াত হন ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর।

১৫ ১৮

কাদের খানের তিন ছেলে। সরফরাজ, শাহনওয়াজ এবং কুদ্দুস। তাঁদের মধ্যে সরফরাজ ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন বলিউডে কেরিয়ার করার। তাঁকে কাদের খান স্পষ্ট বলে দেন, তিনি যেন কোথাও বাবার নাম উল্লেখ না করেন। এবং ভুলেও আশা না করেন, যে কাদের খান তাঁর জন্য কোথাও সুপারিশ করবেন।

১৬ ১৮

সরফরাজ অভিনয় করেছেন সলমন খানের সঙ্গে। ‘তেরে নাম’ এবং ‘ওয়ান্টেড’ ছবিতে। তবে তার পরে তিনি বিশেষ সুযোগ পাননি। এর পর কাদের খান সপরিবারে টরন্টো পাড়ি দেওয়ায় বলিউড থেকে হারিয়েই যান সরফরাজ খান।

১৭ ১৮

কানাডায় একটি অভিনয়-শিক্ষণের প্রতিষ্ঠান চালান সরফরাজ খান। প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়েছেন ‘অ্যক্টিং অ্যাকাডেমি ফ্রম দ্য হাউস অব কাদের খান’। এ ছাড়া কাদের খানের নাটকের দলকেও নতুন করে শুরু করেছেন তাঁর ছেলে সরফরাজ।

১৮ ১৮

এই নাটকরে দল থেকেই বিনোদন মঞ্চে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন কাদের খান। বলিউডে কেরিয়ার করতে না পারলেও সরফরাজ বাঁচিয়ে রেখেছেন ‘কাদের খান’ নামটিকে। কাদের চেয়েছিলেন, নিজের যোগ্যতায় যেটুকু পারবে, সেটুকু-ই যেন করেন তাঁর সন্তানরা। অভিনেতার সেই ইচ্ছেই শেষ অবধি সফল হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement