জিতু কমল।
হোলির দুপুরে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে লাল সেলাম জানালেন টেলি পাড়ার জনপ্রিয় অভিনেতা জিতু কমল। জিতু নেট মাধ্যমে আগাগোড়া সক্রিয়। ইনস্টাগ্রামে তাঁর রিল ভিডিয়ো অনুরাগীদের ভীষণ পছন্দ। কিন্তু রাজনীতি নিয়ে সম্ভবত এই প্রথম তিনি প্রকাশ্যে এ ভাবে মুখ খুললেন। কী বলেছেন জিতু? বুদ্ধদেবের একটি পুরনো ছবি শেয়ার করেছেন তিনি। ক্যাপশন, ‘আপনাকে ভালোবাসি স্যর। আপনি বাম রাজনীতি করেন শুধু তাই জন্যে নয়। আপনি সততার, সত্যের, নিষ্ঠার আরেক নাম। আপনি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য’। তার পরেই জুড়ে দিয়েছেন আরও কয়েকটি কথা। যা নজর কেড়েছে সমস্ত নেটাগরিকদের।
অভিনেতার দাবি, ‘এই পোস্টের জন্যেও আমার কাজের ক্ষতি হবে। সংসার চালাতে অসুবিধে হবে। প্রচুর কমপ্লেন পড়বে। তবুও আমি রাজনীতির উর্দ্ধে গিয়ে সত্যের কথা বলবই। বাকি দু’বেলা পেট না হয় ঈশ্বরই চালিয়ে দেবেন। যদি সত্যের পথে থাকতে পারি।’
কেন এমন কথা লিখলেন জিতু? কেন হোলির দিনে তাঁর ‘লাল সেলাম’ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে?
বিশদে জানতে আনন্দবাজার ডিজিটাল যোগাযোগ করেছিল অভিনেতার সঙ্গে। জিতুর সাফ জবাব, ‘‘গতকাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ শুনেছি। তাপসী মালিক খুনের প্রকৃত সত্যের অনেকটাই জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। ১০ বছর আগে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, এটা একটা নোংরা রাজনীতি। মানুষ ১০ বছর পর ঠিক বুঝতে পারবে। তাঁর কথা সত্যি হল। তাই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে আরও একবার কুর্নিশ।’’ তিনি বললিন টলিউডে আপাতত দুটো শিবির দেখা যাচ্ছে। শাসকদল আর বিরোধীপক্ষ। তার মানে, অন্য দলের সমর্থকেরা যে খুব নিরাপদে আছেন তা কিন্তু নয়। প্রমাণ হিসেবে তিনি তুলে ধরেন নিজের কথা, ‘‘তথ্য-সংস্কৃতি দফতর আমাকেও টেলি সম্মান দিয়েছে। আমি লাল শিবিরের সমর্থক এ কথা জানার পর আর শাসকদলের তরফ থেকে পুরস্কার মঞ্চের আমন্ত্রণপত্র পাইনি।’’ গত বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর ভোট নাকি বানচাল করে দেওয়া হয়েছিল বলি দাবি তাঁর। তাই প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েও সামান্য দ্বিধান্বিত তিনি।
টলিউডে চন্দন সেন, বাদশা মৈত্রের মতো বাম সমর্থকেরাও আছেন। তাঁরা কখনও সমস্যায় পড়েছেন? সুরেন্দ্রনাথ কলেজে বাম ছাত্র রাজনীতি করে আসা অভিনেতার জবাব, ‘‘ওঁদের মুখ থেকে কেউ কিছু শোনেননি মানে এটা নয় যে কোনও সমস্যা হয়নি। এমনটা ভাবা ভুল।’’ তাঁর মতে, বাম দলের সদস্যরা তুলনায় কম নালিশ করেন। পাশাপাশি ক্ষোভও উগরে দেন জিতু। বলেন এমনও তারকাকে জানেন যাঁর কথা একটা সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে মুগ্ধ হয়ে শুনেছেন। তখন তিনি ‘দিদি’র ঘোর বিরোধী। এখন অনায়াসে তৃণমূলে। জিতুর কটাক্ষ, শাসকদলে না গেলে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী চলে আসেন তাঁর বিয়েতে। দেখে অস্বস্তি হয়। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আমলে এই দৃশ্য তাঁর সমর্থকদের দেখতে হয়নি।