ভাস্বর এবং নবনীতা।
বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়, নবমিতা চট্টোপাধ্যায়ের। সেই খবর প্রথম সারির একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত। ভাস্বর সেখানে স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, ‘‘১২ অগস্ট আমাদের ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এটি একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। ঢাকঢোল পিটিয়ে বলার প্রয়োজন মনে করিনি।’’
নবমিতার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি এই ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি। ভাস্বরের আক্ষেপ, গত বছর বন্ধু হিসেবেও নিমন্ত্রণ পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এ বার সেই সৌজন্যটুকুও পাননি। এ দিকে কাশ্মীরে বাড়ি কেনার পরিকল্পনা করছেন ভাস্বর। শিখছেন নতুন ভাষাও।
এর পরে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি লম্বা পোস্ট শেয়ার করেন। সেখানে তাঁর অনুভূতি, সাধারণের অকারণ কৌতূহলে খারাপ লাগা, সাংবাদিকদের প্রশ্নবাণের খোঁচা--- সমস্ত কিছু নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেছেন।
ভাস্বর কী বলেছেন পোস্টে? অভিনেতা কথা শুরুই করেছেন বাংলার পুরনো প্রবাদ দিয়ে, ‘কথায় বলে যার বিয়ে তার হুঁশ নেই, পাড়া-পড়শির ঘুম নেই। কিন্তু এখন ডেফিনেশন পাল্টে গিয়েছে। এখন হয়েছে যার ডিভোর্স তার হুঁশ নেই, পাড়া-পড়শির ঘুম নেই!’
এর পরেই তিনি প্রশ্ন ছুড়েছেন সাংবাদিকদের, ‘আচ্ছা, ডিভোর্স হওয়াটা খুব আনন্দের না সুখের? যে আপনারা নিউজটা করার জন্য অস্থির হয়ে যাচ্ছেন? আপনাদের ঘরে ডিভোর্স হয় না? নাকি আপনারা ডিভোর্স শব্দটা ইন্ডাস্ট্রির ভিতর ছাড়া অন্য কোথাও শোনেননি!’
নিজেদের সিদ্ধান্ত খোলাখুলি জানিয়েছেন অভিনেতা
তারকাদের নিয়ে সব সময়েই আগ্রহী সাধারণ মানুষ। তাঁদের বিয়ে, বিচ্ছেদ নিয়ে সবার উগ্র কৌতূহল। সেদিকেও আঙুল রেখেছেন অভিনেতা। শ্রাবন্তীর তৃতীয় বিয়ে ভাঙছে, এমন খবরে সামাজিক পাতা এবং সংবাদমাধ্যম ছয়লাপ। সেই নিয়ে ভাস্বরের মন্তব্য, ‘শ্রাবন্তীর পিছনে তো আদাজল খেয়ে লেগেছেন। ওঁর তৃতীয় বিয়ে ভাঙছে কি না তাই নিয়ে। এক বারও ভেবে দেখেছেন, ওর ছেলের উপর দিয়ে কী ঝড় যায়? তার তো মা! নাকি, আপনাদের সেই সেন্টিমেন্টও নেই? শুধু যে করে হোক মুখরোচক খবর করলেই হল!’
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর নিজের মুখে ভাস্বর জানান, তাঁদের ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে। যুক্তি, দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ বিয়ে করেছিলেন। কিছু সমস্যা তৈরি হওয়ায় বিয়ে ভেঙেছেন তাঁরা। এটা নিয়ে সবার এত অস্থিরতার কী আছে?
আরও পড়ুন: সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বাঙালিকে ঈশ্বরের অমর উপহার: বাবুল
অস্থিরতার উদাহরণ হিসেবে তিনি তুলে ধরেন কিছু কথোপকথনও। খবর পড়ে একজন নাকি তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘আচ্ছা এই যে আপনার ডিভোর্স হল, কেমন লাগছে?’ তাঁর কাছে এমনটাও জানতে চাওয়া হয়েছে, ‘ক’দিন আগে একজনের সঙ্গে দীপাবলির ছবি তুলে পোস্ট করেছো। সে কী তোমার নতুন জীবন সঙ্গিনী?’ জনৈক সাংবাদিকের সঙ্গে হওয়া কথাবার্তাও তুলে ধরেছেন তিনি, ‘কী করব, আমার বস চাপ দিচ্ছে নিউজ করতে। আমার ব্যক্তিগত প্রশ্ন করতে ভাল লাগে না।’
প্রত্যেকের প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন ভাস্বর এক এক করে। প্রথম জনকে বলেছেন, ‘কী বলব? ডিভোর্স হয়ে আনন্দ হচ্ছে?’ সাংবাদিকের জানিয়েছেন, ‘বসের বোধহয় ডিভোর্স সম্বন্ধে সেই এক ধারণা, একমাত্র সেলেব্রিটিরই ডিভোর্স হয়।’
সবাইকে পাল্টা প্রশ্ন ভাস্বরেরও, ‘‘ভগবান না করুন যদি ‘বস’ আপনার হয়! আর যদি আপনাকে কেউ ফোন করে জিজ্ঞেস করে ডিভোর্সের পর কেমন লাগছে? আপনি হাসিমুখে সেলফি তুলে তাকে পাঠিয়ে দেবেন তো?’’
আরও পড়ুন: আমার লাল ডায়েরিতে এখনও ফাঁকা পড়ে আছে ডিসেম্বরের ডেট
শেষে নিজেদের সিদ্ধান্ত খোলাখুলি জানিয়েছেন, ‘আমি আর নবমিতা ঠিক করেছি, এই নিয়ে কোনও কথা বলব না। কারণ, বিষয়টি অত্যন্ত ব্যক্তিগত। সেটাকে সবার সামনে নিয়ে এসে খবর বানিয়ে আজ অনেকের ভীষণ আনন্দ হচ্ছে।’