অভিনেতা অঙ্কুশ হাজরা
গায়ে রং মাখতে চাননি তিনি। দূরে থাকলেন দলীয় রাজনীতি থেকে। কিন্তু তাঁর একাধিক বন্ধু এই দলে-সেই দলে। বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের পরে কী ভাবছেন অভিনেতা অঙ্কুশ হাজরা? কেমন হবে নির্বাচন পরবর্তী সম্পর্কগুলি?
প্রশ্ন: বন্ধুরা জিতলে সবাইকে নিয়েই আড্ডা হবে বলেছিলেন। কিন্তু সবাই তো জিতলেন না। তা হলে?
অঙ্কুশ: (হেসে) হ্যাঁ পৃথিবী সেরে উঠলে হবে আড্ডা। পরাজিত, জয়ী সবাইকে নিয়েই। যাঁরা জিতেছেন, তাদের নিয়ে আমি খুবই খুশি। যারা জেতেননি তাঁরাও জিতলে খুশি হতাম। যে দলেরই হোন না কেন। তবে একটা কথা এখানে বলতে চাই, যে সহকর্মীরা জেতেননি, তাঁদের কয়েক জনকে নিয়ে আমার আফসোস নেই। কারণ আমি জানতাম, রাজনীতিতে যোগদান করার আসল উদ্দেশ্যটা একটু গোলমেলে ছিল। কী করতে হবে, সেটা বুঝতেই ওঁরা ৫ বছর সময় নিতেন। কাজের কাজ কিছুই হত না। তাঁরা রাজনীতির কিছুই জানে না।
প্রশ্ন: তাঁদের নামগুলো কি আমরা...
অঙ্কুশ: না না, সেটা অসম্ভব। আপনি জানেন। তবে যশের ব্যাপারে আমার একটা কথা বলার আছে। তাঁর সঙ্গে সরাসরি রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। তাঁর ধ্যানধারণা নিয়ে আমি খুবই সন্তুষ্ট ছিলাম। অভিনয় জগতে তাঁর কাজের কোনও অভাব ছিল না। তাও রাজনীতিতে যোগদান করেছিল কেবল মানুষের কথা ভেবেই। যশ জিতলে আমি আরও খুশি হতাম।
প্রশ্ন: ফলাফল নিয়ে কী বক্তব্য?
অঙ্কুশ: আমি খুশি। আমি কোথাও গিয়ে এটাই হয়তো চাইছিলাম। দিদির সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলেছি একাধিক বার। আমার ধারণা, ভাল কাজ হবে। বিশ্বাস করি এটা। আর যাঁরা যাঁরা এই নির্বাচন জিতেছেন, তাঁদের নিয়েও খুব খুশি আমি। রাজদা, কাঞ্চনদার মতো মানুষরা অত্যন্ত সৎ। তাঁরা সকলের পাশে দাঁড়াবেন আমি জানি।
প্রশ্ন: বিজেপি-র তারকা প্রার্থীদের মধ্যে কেবল রুদ্রনীল ঘোষকেই কটাক্ষের শিকার হতে হচ্ছে কেন?
অঙ্কুশ: রুডি (রুদ্রনীল ঘোষ) আমার খুব ভাল বন্ধু। যখনই আড্ডা মেরেছি রাজনীতি নিয়ে, ওর কথার মধ্যে কোনও দিন স্বার্থের গন্ধ পাইনি। আমার ধারণা, দলবদলের ইতিহাস নিয়ে মানুষের ওর উপরে রাগ।কিন্তু এ রকম কি ঘটে না? কত মানুষই তো রাজনৈতিক দল বদল করেন...
প্রশ্ন: সংযুক্তা মোর্চার এই ফলাফলে আপনার কী বক্তব্য?
অঙ্কুশ: এতটা খারাপ অবস্থা হবে ভাবিনি। তবে এ রকম হতই। তার একটা বড় কারণ, সংবাদমাধ্যম, গণমাধ্যম মানুষের মাথায় হাতুড়ি মেরে মেরে এটাই বুঝিয়ে চলেছে যে বাংলায় দু’টোই দল— তৃণমূল এবং বিজেপি। ওই যে বলে, ‘যো দিখতা হ্যায়, উও বিকতা হ্যায়’। অর্থাৎ যা দেখা যাচ্ছে, সেটাই বিক্রি হচ্ছে। যদিও তারা সেটা প্রমাণ করে দেখিয়েছে। সেটাও অস্বীকার করব না।
প্রশ্ন: নেটমাধ্যমে এখন যে রকম খেয়োখেয়ি চলছে, তার পরে কি আদৌ সুস্থ পরিবেশে টলিউডে কাজ করা সম্ভব?
অঙ্কুশ: নির্বাচনের ফলাফল বেরিয়ে গিয়েছে, যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। আর কেন এই খেয়োখেয়িটা চলছে, কে জানে। আরে হার-জিত তো থাকবেই। এ রকম চলতে থাকলে একাধিক তারকা নিয়ে কি তা হলে ছবি হবে না? হ্যাঁ, নির্বাচন চলাকালীন দলীয় দায়িত্ববোধ থেকে আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণ চলে, সেটা মানছি। এখন সবাইকে এতটুকুই অনুরোধ করব, কিছু দিন পর থেকে এটা যেন বন্ধ হয়ে যায়।
প্রশ্ন: তারকা প্রার্থীদের ফোন নম্বর ফাঁস হওয়া নিয়ে কী বলবেন?
অঙ্কুশ: তারকাদের ফোন নম্বর ফাঁস করে দেওয়াটা কোনও সুরাহা নয়। এ ভাবে মানুষের জন্য কাজ করা যায় না। যদি সত্যিই মানুষের জন্য কাজ করতে হয়, তা হলে নেটমাধ্যম রয়েছে। যে ভাবে আমি বা বিক্রম কাজ করছি। সমস্যায় পড়লে কেউ আমাদের জানাচ্ছেন, যত দূর সম্ভব সাহায্য করার চেষ্টা করছি। এ ভাবে বিপর্যস্ত করাটা একদম অনুচিত। আমি বাজি ধরে বলতে পারি, যিনি এই কাজটা করেছেন, যদি তাঁর ফোন নম্বর ফাঁস করে দেওয়া হত, তা হলে তিনি ৫০০ টা ফোন ধরতেন না! প্রচুর ভুয়ো ফোনও আসছে। কাঞ্চনদাকে যা যা মেসেজ পাঠানো হয়েছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়।