পশ্চিমবঙ্গে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ভাল ব্যবসা করেছে বলে দাবি করলেন ছবির পরিবেশক। ছবি: সংগৃহীত।
পশ্চিমবঙ্গে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ছবিটিকে রাজ্য সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণার পরেই বিভিন্ন মহলে শুরু হয়েছে বিতর্ক। এ দিকে রবিবার পর্যন্ত ছবিটি দেশের বক্স অফিসে ৪৫ কোটি ৭২ লক্ষ টাকার ব্যবসা করেছে। এই রাজ্যে ছবিটি তিন দিনে কী রকম ব্যবসা করল?
পশ্চিমবঙ্গে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ছবিটির পরিবেশনার দায়িত্বে রয়েছেন শতদীপ সাহা। তিনি জানালেন রাজ্যে মোট ৯২ টি প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল। ছবির ব্যবসাও নাকি বেশ ভাল হচ্ছিল। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে কি তিনি সমর্থন করেন? শতদীপ বললেন, ‘‘মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী যা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটা তো মানতেই হবে। তার আগে পর্যন্ত ছবিটা যেখানে যেখানে চলছিল সেখানে কিন্তু কোনও সমস্যা হয়েছে বলে শুনিনি।’’
প্রযোজকদের গিল্ডের তরফে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র সমর্থনে প্রকাশিত বিবৃতি। ছবি: সংগৃহীত।
প্রথম তিন দিনে এই ছবি রাজ্যে বেশ ভাল ব্যাবসা করেছে বলে জানালেন ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র পরিবেশক। শতদীপের দাবি ছবিটি রবিবার পর্যন্ত রাজ্যে দেড় কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। তাই এই ছবিকে হল থেকে তুলে নেওয়ায় কিছুটা হলে তিনি হতাশ। বললেন, ‘‘পাঠান-এর পর এই ছবিটা নিয়ে দর্শকের মধ্যে একটা উৎসাহ ছিল। ভাল সাড়া পেয়েছিলাম। প্রচুর টাকা দিয়ে ছবিটা নিয়েছিলাম। আমার তো সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়ে গেল। একটু হলেও খারাপ লাগছে।’’ অন্য দিকে, শতদীপ ছবির যে বক্স অফিস পরিসংখ্যান দিয়েছেন তা ‘খুব ভাল’ কি না তা নিয়েও মতানৈক্য রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, রবিবার রাতেও কলকাতার একাধিক প্রেক্ষাগৃহে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ দেখতে ভিড় করেছিলেন দর্শক। তবে যে মুহূর্তে সরকারি নির্দেশ হাতে এসেছে, তার পর আর ছবিটি প্রদর্শন করেননি হল মালিকরা। মঙ্গলবার এই প্রসঙ্গে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ছবির পরিচালক সুদীপ্ত সেন সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছবিটি না দেখেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেন। এটা দুর্ভাগ্যজনক।’’ এই প্রসঙ্গেই তিনি আরও বলেন, ‘‘ছবিটার জন্য পশ্চিমবঙ্গে কোনও অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেনি। এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক মদতপুষ্ট।’’ এরই সঙ্গে পরিচালক মুখ্যমন্ত্রীকে ছবিটি দেখার জন্যও অনুরোধ জানিয়েছেন।
সঞ্জয় লীলা ভন্সালী পরিচালিত ‘পদ্মাবত’ ছবি মুক্তির আগে ছবিকে সমর্থন করে টুইট করেছিলেন মমতা। সেই প্রসঙ্গ মনে করিয়ে সুদীপ্ত বলেন, ‘‘পদ্মাবত ছবি নিয়ে যখন বিতর্ক দানা বাঁধে, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবার আগে ছবিটিকে সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু আমার ছবির ক্ষেত্রে হঠাৎ করে উনি আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হতে পারে বলে কেন মনে করলেন বুঝতে পারলাম না।’’
অন্য দিকে, দেশের এই ছবির সমর্থনে সোচ্চার হয়েছে মুম্বইয়ের প্রযোজকদের সংগঠন। প্রোডিউসার’স গিল্ড অব ইন্ডিয়ার তরফে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, তারা ছবির উপর কোনও রাজ্য সরকারের নিষেধাজ্ঞার বিরোধী। তাঁদের বিবিৃতে লেখা হয়েছে, ‘‘আমরা বার বার বলেছি কোনও ছবির মুক্তি নির্ধারণ করে সিবিএফসি (সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশন)। তাদের তরফে ছাড়পত্র পেলে আর কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’ এরই সঙ্গে তারা উল্লেখ করেছে, কোনও ছবি দেখবেন কি দেখবেন না, সেটা দর্শকের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত সিবিএফসি ছাড়া অন্য কেউ তাঁদের উপর চাপিয়ে দিতে পারে না।