দিনে দিনে কেন সংখ্যা কমছে বাংলা সিরিয়ালের? —ফাইল চিত্র।
কোনও সিরিয়ালের মেয়াদ তিন মাস, তো কোনওটির বয়স আট মাস। ইদানীং ছোট পর্দার অনেক গল্পই শেষ হয়ে যায় খুব কম দিনের মধ্যে। নেপথ্যে রয়েছে কী কারণ? ইন্ডাস্ট্রির একাংশের মতে, অনেক সময় সিরিয়াল বন্ধের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায় কম টিআরপি। তবে শুধুই কি টিআরপি? এই আলোচনা বহু বার হয়েছে। তবে হিসাব বলছে, বিগত কয়েক মাসে টলিপাড়ায় সিরিয়ালের সংখ্যাও সামগ্রিক ভাবে কমেছে। কয়েক মাস আগেও নাকি বাংলার সব বিনোদন চ্যানেল মিলিয়ে সিরিয়ালের সংখ্যা ছিল প্রায় ৫০-এর উপর। এখন নাকি সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০-এর ঘরে। এই পরিস্থিতি কেন? শুধুই কি টিআরপি ঘটিত সমস্যা, না কি সিরিয়ালের গল্পের কারণেও অনেকটা পিছিয়ে পড়ছে তারা? না কি দর্শক ধীরে ধীরে সিরিয়াল থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন? খোঁজ নিতে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগ করা হয় ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক, অভিনেতা এবং চ্যানেল কর্তাদের সঙ্গে। মতামত জানালেন তাঁরা।
এই মুহূর্তে কাশ্মীরে তাঁর নতুন হিন্দি সিরিয়ালের শুটিংয়ে ব্যস্ত প্রযোজক-পরিচালক-লেখক লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। সেখান থেকেই আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, “প্রথমত, আমার ধারণা ছিল না যে, সিরিয়ালের সংখ্যা অনেকটা কমেছে। তবে ফিকশনের পরিবর্তে বেশ কিছু নন-ফিকশন শো এসেছে তার জায়গায়। এ বার যে চ্যানেলগুলিতে যখন রিয়্যালিটি শো চলছে, তখন অন্য চ্যানেলে সিরিয়াল চললে কিছু তো পার্থক্য হয়ই। কার্রণ অনেকেরই আগ্রহ থাকে নন-ফিকশন শোয়ের জন্য। সেই জন্যই কি এমনটা হচ্ছে, প্রশ্ন আমারও।”
কেউ কেউ আবার এর নেপথ্যে অতিমারিকে দায়ী করছেন। জি বাংলার ক্লাস্টার বিজ়নেস হেড সম্রাট ঘোষ বললেন, “আমাদের প্রাইম টাইম শো কিন্তু একই আছে। সপ্তাহে সাত দিনই সিরিয়াল সম্প্রচারিত হয়। সপ্তাহান্তে নন ফিকশন শো হয়। সে সময় একটু এ দিক-ও দিক করে চালানো হয় সিরিয়াল।’’ বাংলা সিরিয়ালের সংখ্যা কমা প্রসঙ্গে সম্রাট যোগ করলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতির সময় শুটিং বন্ধ ছিল। তাই সিরিয়ালের সংখ্যাও একটু কমেছিল। তবে এখন আবার পুরনো পরিস্থিতি ফিরে এসেছে।” টলিপাড়ার প্রথম সারির সিরিয়াল পরিচালক সুশান্ত দাস কিন্তু বিষয়ভাবনার উপরেও জোর দিতে চাইলেন। এই প্রসঙ্গে তাঁর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, “সত্যিই যদি এই পরিস্থিতি হয়, তা হলে আমাদের গল্প বলার ধরন নিয়ে ভাবতে হবে।”
এই মুহূর্তে টিআরপির তালিকায় প্রথম পাঁচে রয়েছে ‘অনুরাগের ছোঁয়া’, ‘ফুলকি’, ‘জগদ্ধাত্রী’-সহ আরও দুই সিরিয়াল। আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল অভিনেত্রী অঙ্কিতা মল্লিকের সঙ্গে। তিনি বললেন, “আমার কেরিয়ারের বয়স এক বছর। তবে আমি কিন্তু এ রকম কিছু লক্ষ করিনি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে টিআরপি ওঠাপড়া হয় ঠিকই। তবে, তার জন্য সিরিয়াল যে কমে যাচ্ছে, এমন নয়। তবে নতুন ধরনের গল্প না এলে যে দর্শক আগ্রহ হারাবে, এ কথা ঠিক।”