অতিমারিতে নিজের উপলব্ধি নিয়ে অকপট আবীর চট্টোপাধ্যায়
Abir Chatterjee

Abir Chatterjee: ‘জীবনে কোন জিনিসগুলোর মূল্য আছে, সেটা বুঝতে পারলাম’

অতিমারিতে আত্মবিশ্লেষণের জন্য বেশ কিছুটা সময় পাওয়া গিয়েছে।  আরও একটা জিনিস বুঝলাম যে, কোনও কিছুই নিশ্চিত নয়।

Advertisement

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:০৮
Share:

একান্ত সাক্ষাৎকারে আবীর চট্টোপাধ্যায়।

প্র: কাজ নিয়ে ফের ব্যস্ত আপনি। এটা নিশ্চয়ই স্বস্তিদায়ক?

উ:
অবশ্যই। তবে শুধু প্রথম লকডাউনের সময়ে কাজ কম ছিল। ২০২০-র সেপ্টেম্বর মাস থেকে আমি মোটামুটি পরপর কাজ করে গিয়েছি। ছোট পর্দার রিয়্যালিটি শো, ব্র্যান্ড এনডর্সমেন্টের অনেক কাজ ছিল।

প্র: দীর্ঘ সময় নিজেকে পর্দায় দেখতে না পাওয়া নিয়ে অভিনেতা হিসেবে খারাপ লাগা আছে?

উ:
না, বড় পর্দা তো আর কিছুতেই আগের ছন্দে ফিরছে না। যত বার আমরা মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি, একটা করে ঢেউ এসে সব চেষ্টা ব্যর্থ করছে। অতিমারির মধ্যে আমার দুটো ছবি ‘সুইৎজ়ারল্যান্ড’, ‘ডিকশনারি’ মুক্তি পেয়েছে। সামনেই ‘আবার বছর কুড়ি পরে’র রিলিজ়। তা ছাড়া ‘মায়াকুমারী’, ‘আগন্তুক’ তৈরি হয়ে আছে।

প্র: ‘ডিকশনারি’র মুক্তির সময় নিয়ে নাকি আপনার আপত্তি ছিল?

উ:
ছবির রিলিজ় প্রযোজকের সিদ্ধান্ত, সেখানে আমার কিছু বলার নেই। অতিমারিতে সকলেই আমরা খুব চাপের মধ্যে কাজ করছি। একটা জিনিস আমার মনে হয়, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্ল্যান মাফিক কাজ করলেই ভাল। হঠকারিতায় ভাল ফল পাওয়া যাবে না।

প্র: আপনি তো সোশ্যাল ওয়ার্কও করেছেন এই সময়টায়।

উ:
যতটা পেরেছি, চেষ্টা করেছি। লকডাউনে কাজ বন্ধ থাকলেও, সে পর্যায়টাই বুঝিয়ে দিয়েছিল এখন নিজের কাজ নিয়ে আক্ষেপ করার সময় নয়। ঝড় সামলানো বেশি জরুরি। গত দু’বছরে আমরা প্রত্যেকে কাছের মানুষ, বন্ধু... কাউকে না কাউকে হারিয়েছি। এখন যেমন কাজ করতে গেলে টেনশন হয়। ফের যদি আক্রান্ত হই? বাড়ির লোকের কথাও ভাবতে হয়।

প্র: অতিমারি কি কিছু সুবিধেও দিল?

উ:
আত্মবিশ্লেষণের জন্য বেশ কিছুটা সময় পাওয়া গিয়েছে। আরও একটা জিনিস বুঝলাম যে, কোনও কিছুই নিশ্চিত নয়। জীবনে আসলে কোন জিনিসগুলোর মূল্য আছে, সেটাও বুঝতে পারলাম। তার পর অনেক পুরনো বন্ধুর সঙ্গে রিইউনিয়ন হল। নতুন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি হয়েছে। ভিডিয়ো কলে সেই পুরনো মুখগুলো দেখতে পেয়েছি। শ্রীমন্তর (পরিচালক) ‘আবার বছর কুড়ি পরে’ ছবিটা করার সময়ে যেমন বুঝতে পারলাম, বন্ধুত্ব কখনও পুরনো হয় না। আমরাই সেই প্রজন্ম যাঁরা হাতে চিঠি লিখেছি, কার্ড পাঠিয়েছি, মোবাইল ফোনে শর্ট মেসেজ পাঠিয়েছি। তার পর হোয়াটসঅ্যাপ, ভিডিয়ো কল থেকে জ়ুম মিটিং... ছবির গল্পটা শোনার সময়েই আমার দেজা ভু হচ্ছিল।

Advertisement

প্র: অতিমারি না হলে হয়তো আপনার মুম্বই-যাত্রা হত না এবং ওয়েব সিরিজ়ে কাজও করতেন না...

উ:
ওয়েব সিরিজ়ের কাজ নিয়ে এই মুহূর্তে কথা বলার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কাজটা শেষ হলে কথা বলতে পারব।

প্র: ‘অপরাজিত’ প্রসঙ্গে অনীক দত্তর সঙ্গে কথা হল?

উ:
না। উনি আমাকে কিছু বলেননি, আমিও বলিনি। উনি ব্যস্ত মানুষ। একটা ছবির পিছনে কম কাজ তো থাকে না। হয়তো সময় পাননি।

প্র: ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’য় আপনি শশীর চরিত্রে। কতটা উত্তেজিত?

উ:
ক্লাসিক উপন্যাসের চরিত্রে অভিনয় করার সুবিধে-অসুবিধে দুই-ই আছে। বাংলা সাহিত্য-প্রেমীরা সকলেই ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’ পড়েছেন। অনেকের কাছে শশী পছন্দের চরিত্র। কেউ কেউ আবার মেলাতে চান, তাঁদের কল্পনার মতো হল কি না। সুমনদা (মুখোপাধ্যায়) অত্যন্ত দক্ষ একজন পরিচালক। উনি নিশ্চয়ই নিজের মতো করে ইন্টারপ্রেট করবেন। ওর সঙ্গে আগে কাজ করিনি। আশা করি একটা ভাল অভিজ্ঞতা হবে।

প্র: আপনি সেই বিরলতমদের মধ্যে একজন, যিনি গত বিধানসভা নির্বাচনে রাজনীতি থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছিলেন...

উ:
আমি সব সময়ে একটাই কথা বলি, আমার রাজনীতি করার মতো ক্ষমতা নেই, যোগ্যতাও নেই। তাই দূরত্ব বজায় রাখাই ভাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement