বিভিন্ন লুকে আবীর চট্টোপাধ্যায়।
বয়স্ক চরিত্রে তাঁকে আগে দেখা গিয়েছে, পিরিয়ড লুকেও। কিন্তু ‘মায়াকুমারী’র মতো এত ধরনের বেশ বদল আগে করতে হয়নি অভিনেতা আবীর চট্টোপাধ্যায়কে। আর প্রতিটি লুকেই রয়েছে খানিক তারতম্য। সিনেমার মধ্যে আর একটি সিনেমা, মিশে যাচ্ছে রিল আর রিয়্যাল। তাই এত চরিত্র আর লুকের ঘনঘটা। লকডাউনের অনেক আগেই পরিচালক অরিন্দম শীল ছবির শুটিং সেরে ফেলেছিলেন। এখন চলছে পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ।
এই ছবির লুক নিয়ে আবীরও বেশ উত্তেজিত। ‘মায়াকুমারী’তে কাননকুমার এবং আহির চট্টোপাধ্যায়, এই দুই চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে। কাননকুমার বাংলা ছবির প্রথম যুগের অভিনেতা-পরিচালক। আহির তার নাতি, যে নিজেও সিনেমা করে। আবীর বলছিলেন, ‘‘পিরিয়ড চরিত্র মানে শুধু লুক নয়, বডি ল্যাঙ্গোয়েজেরও একটা ভূমিকা থাকে। আগেকার দিনের তারকাদের একটা অরা ছিল। এখনকার ফিল্মস্টাররা যতটা খোলামেলা নিজেদের জীবন নিয়ে, তখন সেটা ছিল না। কাননকুমারের চরিত্রের জন্য সেই ব্যাপারটা আমাকে ফুটিয়ে তুলতে হয়েছে। তুলনামূলক ভাবে আহিরের চরিত্র সমকালীন হওয়ায়, কাজটা খানিক সহজ ছিল।’’ ঢেউখেলানো চুল, গ্যালিস দেওয়া জামা, মুখে পাইপ— কাননকুমারের লুক খানিকটা এমনই। পরিচালক অরিন্দম শীল জানালেন, প্রমথেশ বড়ুয়া এবং তিরিশ-চল্লিশের দশকের অন্যান্য অভিনেতাদের চেহারার রেফারেন্স তিনি এখানে ব্যবহার করেছেন। কাননকুমারের বয়স্ক চরিত্রে আবীরকে দেখা যাবে প্রস্থেটিক মেকআপে। এই ধরনের লুক তিনি ‘বিদায় ব্যোমকেশ’-এর সময়েও করেছেন। ‘মায়াকুমারী’র এই লুকের পুরো কৃতিত্ব অভিনেতা দিচ্ছেন ছবির মেকআপ শিল্পী সোমনাথ কুণ্ডুকে। ‘‘আমরা শীতকালে শুটিং করেছি ঠিকই। তবে প্রস্থেটিক মেকআপ সব সময়েই ঝুঁকির। আর সোমনাথদা একশো শতাংশ নিখুঁত না হয়ে কোনও কাজ করেন না। তবে এ বার ঘণ্টা দুয়েকের বেশি লাগেনি মেকআপ করতে,’’ বলছিলেন আবীর। যেহেতু ছবির মধ্যে ছবি, তাই কাননকুমার যখন পর্দার নায়ক, সেই চরিত্রগুলোর জন্যও আবীরকে বেশ কয়েক রকমের লুক নিতে হয়েছে।
‘মায়াকুমারী’তে আবীর ছাড়াও রয়েছেন রজতাভ দত্ত, অরুণিমা ঘোষ, সৌরসেনী মৈত্র, ইন্দ্রাশিস রায়ের মতো অভিনেতারা। ঠিক ছিল, পুজোর সময়ে ছবিটি রিলিজ় করবে। কিন্তু করোনার প্রকোপ কমার কোনও লক্ষণ নেই। সিনেমা হল খুলে গেলেও দর্শক ছবি দেখতে আসবেন কি না, সে প্রশ্নও রয়েছে। আবীরের মতে, ‘‘এখন যা পরিস্থিতি, তাতে আগামী দিনের কোনও প্ল্যান করা যাচ্ছে না। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে।’’ তবে পরিচালক জানালেন, তিনি এবং প্রযোজনা সংস্থা ক্যামেলিয়া প্রোডাকশনের পরিকল্পনা রয়েছে পুজোয় ছবি রিলিজ় করার। অরিন্দমের কথায়, ‘‘লন্ডনে ক্রিস্টোফার নোলানের ছবি ‘টেনেট’ রিলিজ়ের প্রথম দিন ৫৫ শতাংশ দর্শক হলে এসে দেখেছেন। অ্যাডভান্স বুকিং হচ্ছে। করোনা পরিস্থিতিতে এটা খুবই আশাব্যঞ্জক।’’