উস্কানি নয়, সমাধান চাইছিলেন নির্মাতা
আমির খানের ‘লাল সিংহ চাড্ডা’ তৃতীয় দিনে কিছুটা সামলে নিলেও রক্ষা পেল না অক্ষয় কুমারের ‘রক্ষা বন্ধন’। নতুন প্রজন্মকে আকৃষ্ট করতে পারেনি ছবির বিষয়বস্তু। তৃতীয় দিনে বক্স অফিসের সংগ্রহে মাত্র ৫.৭৫ কোটি টাকা। উল্টে, আনন্দ এল রাই পরিচালিত ‘রক্ষা বন্ধন’ জনরোষের কারণ হয়ে উঠেছে। ভারতীয় সমাজব্যবস্থা, বর্ণবিদ্বেষ, পণপ্রথা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে গিয়ে নিজেরাই বিপদে পড়েছেন নির্মাতারা।
সমীক্ষা বলছে, হিন্দিভাষী রাজ্য যেমন উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি এবং রাজস্থানে ‘রক্ষা বন্ধন’ চলছে ভাল। তবে মুম্বই, পুণে, কলকাতা, বেঙ্গালুরু এবং হায়দরাবাদে এ ছবি নিয়ে মানুষের তেমন আগ্রহ নেই। শুক্রবার এবং শনিবার গুজরাত থেকেও তেমন আয় করেনি এই ছবি।
পরিবারের এক মাত্র ছেলে লালা কেদারনাথ তার তিন বোনের বিয়ে দিতে গিয়ে হিমসিম। তার কাঁধে গুরুদায়িত্ব। বোনেদের পাত্রস্থ না করে নিজে বিয়ে করবে না, এমনটাই কথা দিয়েছিল মায়ের মৃত্যুশয্যায়। সেই কর্তব্য পালন করতে গিয়ে লালাকে যা কিছু ক্লেদ-গ্লানির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তাতে দাদা-বোনের সম্পর্কের আর এক দিক উঠে এসেছে। যা নিয়ে জীবন্ত হয়ে উঠেছে ‘রক্ষা বন্ধন’। বিয়ের সময় যৌতুক নিয়ে দর কষাকষি। শরীর নিয়ে কটাক্ষের মাঝে নারীদের কী ভাবে পণ্য করে তোলে এ সমাজ, ছবিতে তারই প্রতিফলন ঘটিয়েছেন পরিচালক। বড় দাদা লালার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অক্ষয় কুমার। চার বোনের চরিত্রে সাদিয়া খতিব, সহজমিন কৌর, দীপিকা খান্না এবং স্মৃতি শ্রীকান্ত।
এ হেন ছবি ঘিরে প্রথম যে প্রতিবাদ উঠছে তা হল, এটি একটি পিছিয়ে পড়া ছবি। রক্ষণশীল সমাজ, লিঙ্গবৈষম্য, পণপ্রথার মতো অন্ধকার দিকগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করছে, উৎসাহিত করছে এই ছবি— এমনটাই দাবি নিন্দকদের। তাই এই ছবি বয়কট করার ডাক দিয়েছেন অনেকে।
যদিও আনন্দ এল রাইয়ের দাবি, প্রসঙ্গগুলো তুলে আনাই নাকি লক্ষ্য ছিল তাঁর! এগুলো তো নির্মূল হয়ে যায়নি। হোক তা-ই চান তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘পিছিয়ে পড়া ধারণাগুলোকে উপেক্ষা করা যায় না। আমাদের আরও প্রগতিশীল হওয়া উচিত। সেই সময়েই বাস করছি আমরা। এমন অনেক বিষয় রয়েছে যেগুলির যত্ন নেওয়া দরকার। চারপাশে ঘটছে যখন, তখন তো চোখ বন্ধ করে থাকা যায় না। সমাজকে সংশোধন করা আমাদেরও কর্তব্য।’’ তিনি আরও বলেন, ‘রক্ষা বন্ধন’-এর মতো গল্প বলার পিছনে কোনও উস্কানিমূলক উদ্দেশ্য ছিল না। কেবল, দর্শকদের মনে করানোর ছিল যে এ সব ঘটনা চাইলেই শুধরে নেওয়া যায়।