ছবির দৃশ্যে তুলিকা এবং সব্যসাচী।
শ্বশুর-জামাই সম্পর্ক। পপুলার মিডিয়ায় যে সম্পর্ক প্রায় ঢাকা পড়ে যায় বউ-শাশুড়ি সম্পর্কের আড়ালে। সেই আড়ালের সম্পর্কই এবার দেখা যাবে টিভির পর্দায়। সৌজন্যে জি বাংলা সিনেমা অরিজিনালস্-এর ‘জামাই এল ঘরে’। কিন্তু সম্পর্কটি ঠিক কেমনভাবে দেখবেন দর্শক?
শ্বশুরের (দিব্যকান্তি) চরিত্রাভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী বললেন, “আমার মেয়ের সম্বন্ধ করে বিয়ে দিয়েছি। খুব ভাল পরিবার। ছেলেটিও ভাল। এ বারে সব ঠিকঠাক, বেশ চলছে। এ দিকে আমি একটা বড় কর্পোরেট কোম্পানির একজন এগজিকিউটিভ। আমার রোজই মিটিং থাকে, রোজই নানান রকম কাণ্ড কারখানা চলে। একদিন কী হল, জানলার বাইরে থেকে ভেসে আসা কোকিলের ডাক শুনে মাথা ঘুরে গেল। হঠাৎ রিয়ালাইজ করলাম, আরে, আমি তো এতদিন হয়ে গেল কোথাও বেড়াতে যাইনি। বউকে নিয়ে কোথাও যাইনি! এটা কি ঠিক হচ্ছে?’’
দিব্যকান্তি ছুটি নিলেন। দেড় মাসের ছুটি বাকি আছে। ছুটি নিয়ে বেড়াতে যাবেন ঠিক করলেন। জামাই হঠাৎ করে বাড়িতে এসে হাজির। জামাই বলে, ‘‘দেড় মাসের ছুটি নিয়েছি। এখানে থাকব।’’ শ্বশুর বোঝেন, তার আর ছুটি নেওা হবে না। এ বার শ্বশুর ফন্দি আঁটে কী করে জামাইকে তাড়ানো যায়। এই নিয়েই গল্প।
আরও পড়ুন, বি গ্রেড ফিল্মেও অভিনয় করেছেন ‘তারক মেহতা...’র দয়াবেন!
ফিল্মের শাশুড়ি তুলিকা বসুকেও কি জামাই খুব জ্বালিয়েছেন? তিনি বললেন, “জামাই আমাকে জ্বালায়নি। আমার বর জামাইকে মনে করছিলেন জ্বালাতন। যেটা হয়, শাশুড়িদের একটা অপত্য স্নেহ থাকে। সেটা জামাইয়ের প্রতি দেখাতে গিয়ে শাশুড়ি একটু বরকে অবহেলা করে ফেলেন। তাঁর ইচ্ছে অনিচ্ছেগুলোকে কম গুরুত্ব দিয়ে ফেলেন। তাতে একটা ডামাডোল তৈরি হয়, যেটা খুব সুইট। অদ্ভুতভাবে নেগেটিভিটির ছোঁয়া নেই, মজার ঘটনার অনেকগুলো স্রোত বয়ে যায়।”
জামাই পলাশের চরিত্রে রয়েছেন সমদর্শী দত্ত। তিনি শেয়ার করলেন, “এটা একটা স্ল্যাপস্টিক কমেডি বলা যায়। নিজের বাড়িতে একটা কমফোর্ট জোন থাকে। আমরা নিজের জিনিস কাউকে জিজ্ঞেস না করে ব্যবহার করি। কোথাও না কোথাও এই জামাইয়ের সেটা নেই। সেই কারণেই মজা সৃষ্টি হয়, কমেডি এলিমেন্ট তৈরি হয়।”
ছবির দৃশ্যে ঋদ্ধিমা এবং সমদর্শী।
অন্যতম পরিচালক অভিজিৎ গুহ ব্যাখ্যা করলেন, “সাধারণত আমরা টেলিভিশনে যা দেখি সবটাই শাশুড়ি-বউমা ওরিয়েন্টেড। আমাদের পারিবারিক জীবনে এই সম্পর্কটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। সেজন্যই সিনেমা বা টেলিভিশনে এই সম্পর্কটাকে এতটা জায়গা দেওয়া হয়। কিন্তু ‘জামাই এলো ঘরে’ জাস্ট উল্টো, শ্বশুর আর জামাইয়ের একটা ক্ল্যাশ বলা যেতে পারে। এমন যদি হত তাহলে কেমন হত- এটা ভেবে মানুষ কিন্তু আনন্দ পেতে পারে। কী ভাবে সম্পর্কের ইকুয়েশনগুলো চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে সেটাই মজার মোড়কে দেখা যাবে।”
শ্বশুরের চরিত্রে অভিনয় করে কেমন অনুভূতি হল? সব্যসাচী বললেন, “আই লাভ কমেডি। আমাদের জীবনে হাসিটাই ভীষণ দরকার। আমাদের বাড়িতেও আমরা এরকম হাসিঠাট্টা করি। আমি, আমার বউ, দুই ছেলে, আমাদের বন্ধুবান্ধব... সবাই মিলে খুব হাসিঠাট্টা করি। আমরা গোমড়ামুখো নই। যেহেতু আমাদের লাইফস্টাইলটাই এরকম, তো হাসার জন্য আমাদের কোনও লাফিং ক্লাবে যেতে হয় না। আই ওয়ান্ট টু লিভ লাইফ ইজি। কারণ আমি একটু মেন্টালি রিটারডেড। আমি এখনও শিশুই আছি। বয়স বেড়ে গেলে লোকে যদি গম্ভীর হয়ে যায় এবং চেষ্টা করে কী ভাবে অন্য লোকের পিছনে লাগা যায়, নিজেরটা গুছিয়ে নেওয়া যায়, রাত্রিবেলা ঘুমের ওষুধ ছাড়া ঘুম হবে না- এরকম যদি হয় তাহলে আমি বড় হতে চাই না। আমার এখনও অ্যানিমেশন ফিল্ম ভাল লাগে, আমার এখনও জন্তু জানোয়ার ভাল লাগে, প্রকৃতি ভাল লাগে। আমার এখনও প্রেমের গল্প দেখলে অস্বস্তি হয়। এখনও মৃত্যু, ঝগড়া, দাঙ্গা দেখলে ভয় করে, কান্না পায়। শিশুরা যেভাবে বাঁচতে ভালোবাসে আমিও সেভাবে বাঁচতে ভালোবাসি। সে জন্য এই চরিত্রটা আমার খুব ভাল লেগেছে।”
আরও পড়ুন, বলিউডের কোন নায়িকারা একে অপরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু জানেন?
বাস্তবের শ্বশুরমশাইয়ের সঙ্গে এই ছবিতে কাজ করে কেমন লাগল? ঋদ্ধিমা এক্সসাইটেড, “প্রথম ছবিতেই বাবার (সব্যসাচী চক্রবর্তী) সঙ্গে কাজ করেছি (‘ফ্রেণ্ড’)। খুব রিসেন্টলি ‘টেনিদা’-র শুটিং করলাম। সেখানেও বাবা-মেয়ের চরিত্রে আমাদের দেখা যাবে। এমনিতেই আমি ওঁর বড় ফ্যান। আই থিং আমাদের কেমিস্ট্রি হ্যাজ ওয়ার্কড অ্যাজ বাবা-মেয়ে। হ্যাঁ, আমরা বাড়িতে যেরকম হাসিঠাট্টা করি এই ছবিতেও সেই মজাটা করেছি। কাজটা করতে গিয়ে একদমই মনে হয়নি কাজ করছি। কারণ স্ক্রিপ্টের যেরকম হাসি মজা ছিল আমরা সবাই সেটে ঠিক ওইরকমই ছিলাম, শুটের বাইরেও। তুলিকাদির সঙ্গে ফার্স্ট টাইম কাজ করলাম। সি ইজ জাস্ট আ সুইট হার্ট। রানাদা- সুদেষ্ণাদিকে দুটো মজার চরিত্রে দেখা যাবে। জাস্ট হিলারিয়াস! আমরা কোথাও জোর করে হাসানোর চেষ্টা করিনি, পুরোটাই সিচুয়েশনাল। মনিটর করতে গিয়ে আমরা প্রচুর হেসেছি (হাসি)। দর্শক যখন ফাইন্যালি ছবিটা দেখবেন তাঁরাও এনজয় করবেন, আই অ্যাম সিওর।” টিভির পর্দায় এই ছবি দেখা যাবে আগামী ২৯ জুন, সন্ধ্যে সাতটায়।
(কোন সিনেমা বক্স অফিস মাত করল, কোন ছবি মুখ থুবড়ে পড়ল - বক্স অফিসের সব খবর জানতে পড়ুন আমাদের বিনোদন বিভাগ।)
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।