(বাঁ দিক থেকে) রাঘব চট্টোপাধ্যায়, এ আর রহমান, মনোময় ভট্টাচার্য। ছবি: সংগৃহীত।
৪৮ ঘণ্টা পার হয়ে গিয়েছে। এ আর রহমানের সুরে মুক্তি পেয়েছে ‘পিপ্পা’ ছবির গান ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’। যে গানের রচয়িতা কবি কাজী নজরুল ইসলাম। গানটি মুক্তি পাওয়ার পর থেকে সোচ্চার হয়েছেন বহু সঙ্গীতশিল্পী। বিরক্ত বাঙালি সঙ্গীতজ্ঞেরা। সমাজমাধ্যমের পাতায় নিজেদের মতামত প্রকাশ করেছেন অনেকেই। তবে এই প্রথম বার নয়। ২৬ বছর আগেও এমনই সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছিল সঙ্গীত পরিচালককে। ১৯৯৭ সালে রহমানের ‘মা তুঝে সালাম’ অ্যালবামের কথা অনেকেরই মনে আছে। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘বন্দে মাতরম্’ গানটিকে নিজের মতো করে তৈরি করেছিলেন। সেই গান এখনও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বা খেলার মাঠে শুনতে পাওয়া যায়। অথচ সে সময় এই গানই বিভিন্ন মহলে সমালোচিত হয়েছিল। কিন্তু সে যুগে ‘সোশ্যাল মিডিয়া’র এত বাড়বাড়ন্ত ছিল না। এখন কি স্বাধীনতার ৫০তম বর্ষে ‘মিউজ়িক মায়েস্ত্রো’র তৈরি সেই গানের কথা কি মনে পড়ছে শিল্পীদের?
আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগ করা হয় রাঘব চট্টোপাধ্যায় এবং মনোময় ভট্টাচার্যর সঙ্গে। শুক্রবার নিজের ইনস্টাগ্রামে একটি লম্বা পোস্ট করেন রাঘব। আবারও এই প্রসঙ্গ উঠতে গায়কের উত্তর, “স্বাধীনতার ৫০ তম বর্ষে রহমানের তৈরি ‘বন্দে মাতরম্’ গানের সঙ্গে এই গানের অনেকটা পার্থক্য আছে। কারণ, সে সময় উনি বঙ্কিমচন্দ্রের লেখা থেকে দু’টি লাইন ব্যবহার করেছিলেন তাঁর নতুন গানে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে উনি নজরুলের পুরো গানই বিকৃত করেছেন। যেটা খুবই অন্যায়। গত বছর ওঁর তৈরি একটি গান নতুন ভাবে সাজিয়ে ছিলেন তনিষ্ক বাগচি নামে এক গায়ক। তখন তো খুবই রেগে গিয়েছিলেন রহমান স্যর। তা হলে ওঁর ক্ষেত্রে এটা ন্যায় কী করে হয়? আমি ওঁর গুণমুগ্ধ ভক্ত। কিন্তু এই গানের ক্ষেত্রে আমি তীব্র বিরোধিতা করছি।”
অন্য দিকে মনোময়ের মত, “১৯৯৭ সালেও কিন্তু সমালোচনা হয়েছিল। কিন্তু তখন সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ ছিল না। এখন যেমন কিছু ঘটুক কি না ঘটুক বিতর্ক, সমালোচনা, নিন্দা শুরু হয়ে যায়। ২৬ বছর আগে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ অন্য ছিল। তবে যদিও সময়ের নিয়মে সেই গান এখন আমরা বিভিন্ন জায়গায় শুনতে পাই। সময়ের নিয়মে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। কিন্তু ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’-এর ক্ষেত্রেও কি তাই হবে সেটা বলা যাচ্ছে না। রবি ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের এক অন্য আবেগ। তাই এই বিষয়টার সঙ্গে ৫০তম বর্ষে তাঁর তৈরি ‘বন্দে মাতরম্’-এর তুলনা না করাই ভাল।”
উল্লেখ্য, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব বিতর্ক, সমালোচনা যে মানুষ ভুলেও যায়, সে কথা সমাজমাধ্যমের পাতায় ইতিমধ্যেই লিখেছেন লোপামুদ্রা মিত্র। তিনি লেখেন, “বাঙালি কোনও রকম অন্যায় সহ্য করে না। তাই জেগে উঠেছে ফেসবুকে। আবার ভুলেও যাবে।”