ব্যাগবন্দি খেলা

সময় খুব কম। বেড়াতে যাচ্ছেন আজ বা কাল? পরিকল্পনামাফিক প্যাকিংটা সারবেন কী ভাবে? পরামর্শ দিলেন ঋতা ভিমানি।পুজোর ছুটিতে বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যানিং করাটা একটা দারুণ আনন্দের ব্যাপার। কি একটা উত্তেজনা মনকে অধীর করে রাখে। কেউ কেউ আবার পুজোয় বেড়াতে যাওয়ার আগে মালপত্র প্যাকিং করা নিয়ে অতিরিক্ত স্নায়বিক চাপে ভুগতে থাকেন।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:০০
Share:

পুজোর ছুটিতে বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যানিং করাটা একটা দারুণ আনন্দের ব্যাপার। কি একটা উত্তেজনা মনকে অধীর করে রাখে। কেউ কেউ আবার পুজোয় বেড়াতে যাওয়ার আগে মালপত্র প্যাকিং করা নিয়ে অতিরিক্ত স্নায়বিক চাপে ভুগতে থাকেন।

Advertisement

কিন্তু ঠিকঠাক ছকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার প্যাকিং করতে পারার আনন্দই আলাদা। প্লেনে যেতে গেলে নিয়ম বাঁধা আছে পনেরো কিলোর বেশি জিনিস নেওয়া যাবে না। কিন্তু পনেরো কিলো মাল যদি আগেই ভর্তি করে নেন স্যুটকেসে কিংবা ব্যাগে তা হলে যেখানে বেড়াতে যাচ্ছেন সেখান থেকে কেনাকাটার মজাটাই তো হবে না। নিশ্চয়ই অতিরিক্ত মালপত্রের জন্য বিমান মাশুলও আপনি দিতে চান না।

বিমানে যে অতিরিক্ত মাশুল দিতে হয় তেমন ট্রেনেও অল্প জায়গার জন্য বেশি মাল তুলে নিজে বিব্রত হওয়া সহযাত্রীদের বেকায়দায় ফেলার কোনও মানে নেই। ট্রেনেও স্যুটকেস যদি বারবার মালপত্রের জন্য বারবার খুলতে বন্ধ করতে হয় তখন সহযাত্রীদের অসুবিধে হয়। ফেরার সময় কেনাকাটার মালপত্র যদি বেড়ে যদি বেড়ে যায় তখন ওই স্যুটকেসই যথেষ্ট হবে না। নতুন ব্যাগ কিনতে হবে।

Advertisement

দেশভ্রমণে যাওয়ার আগে কী ভাবে হাল্কা জিনিসপত্র নিয়ে ব্যাগ গোছাবেন তা নিয়ে কিছু টিপস দিচ্ছি।

প্রথমেই টয়েলেট্রি অর্থাত্‌ সাবান-টুথ-পেস্ট-ব্রাশ-স্নানের জিনিস প্যাক করুন। আপনার সেই ব্যাগে যেখানে একাধিক খাপ আছে। সেই খাপে দু’টাকা দামের ডিটারজেন্ট সাবানের প্যাকেট নিন। হোটেলেই উঠুন বা কোনও বন্ধুর বাড়িতেই বেড়াতে যান না কেন নিজের ছোটখাটো ব্যক্তিগত জিনিস ধুয়ে নেওয়ার জন্য নিজস্ব গুঁড়ো সাবানের প্যাকেটই ভাল। একটা ডিওডোরেন্ট স্টিক, ছোট হার্বাল সাবান, বেসিক মেক আপ, ক্রিম, ছোট প্লাস্টিক বোতলে শ্যাম্পু বা স্যাশে, সানস্ক্রিন লোশনের টিউব, টিপের পাতা সবই যেন এই টয়লেট ব্যাগে ঢুকে যায়। আর সেফটিপিন অবশ্যই রাখবেন। দাড়ি কামাবার সব আয়োজন পুরুষেরা নিন তাঁদের ব্যাগে। সঙ্গে আফটার শেভ, পারফিউমের ছোট বোতল নিতেই পারেন। স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে গেলেও টয়েলেট্রি পাউচ কিন্তু আলাদা করে নিন।

ওষুধের প্যাকেট রেডি করতে একদম ভুলবেন না। ওষুধবিষুধ জিপওয়ালা পাউচে গুছিয়ে নিন অবশ্যই। পেটখারাপ, মাথা ধরা, জ্বর এই সবের ওষুধ অবশ্যই থাকবে। বাইরে গেলে খাওয়াদাওয়ার অনিয়ম বা অনভ্যস্ত খাবার খেতে হতেই পারে। আর তা থেকে বদহজমের আশঙ্কা। তাই হজমের ওষুধ, ইসবগুল সঙ্গে নিন। ওষুধের পাউচে অবশ্যই থাকবে ব্যান্ড-এড।

আসল সমস্যার কথা বলি এই বার। তা হল পোশাকআশাক। আমাদের বাড়াবাড়ি রকম জামাকাপড় নেওয়ার একটা প্রবণতা আছেই। যাঁরা শাড়ি পরেন, তাঁদের পক্ষে তিনটে চারটে শাড়ি ফ্ল্যাট ভাঁজ করে প্যাক করে নেওয়া কোনও ব্যাপারই নয়। এর সঙ্গে একটু রঙের ম্যাচিংয়েরও চেষ্টা করুন। এমন ভাবে শাড়ির রং বাছাই করুন যাতে চারটে শাড়ির জন্য চারটে সায়া নেওয়ার দরকার না পড়ে। যদি ঠাণ্ডার দেশে বেড়াতে যান তা হলে সিল্ক নিন। আর যদি উষ্ণ জলবায়ুর দেশে যান, তো সঙ্গে পলিয়েস্টার ব্লেন্ডেড ক্রেপ, ফুলিয়ার হাল্কা তসর সিল্কও নিতে পারেন। যেখানে যাচ্ছেন সেখানে যদি কোনও অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার থাকে, সঙ্গে নিন সিক্যুইন বা রেশমের কাজ করা শাড়ি। নিতে পারেন জমকালো ঢাকাই শাড়িও। ব্যবহার করুন কস্টিউম জুয়েলারি।

কাপড়চোপড় এমন ভাবে নেবেন যাতে ইস্ত্রি করার বা যত্নআত্তি করার দরকার না পড়ে। একজোড়া গাঢ় রঙের ট্রাউজার বা ওয়েলফিটেড এক জোড়া জিনস্ আর এক জোড়া কেপ্রি সঙ্গে নিন। নিতে পারেন বাছাই করা মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ টপ। ভাল কাটিংয়ের বা ফিটিংসের জামা হলে ইন্দো-ওয়েস্টার্ন পোশাক খুব ভাল মানায়। আপনি যদি ঠান্ডার জায়গায় বেড়াতে যান, তো পোলোনেক সোয়েটার আর গরম অন্তর্বাস সঙ্গে নিন অবশ্যই। এই ধরনের সোয়েটার শাড়ি সালোয়ার কামিজ, ট্রাউজারের সঙ্গে ভাল যায়। সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে গেলে টাইমটেস্টেড সুইমওয়্যার, আর সারং তো নেবেনই। যে সমুদ্রের ধারে গেলেন সেখান থেকে টুপিও কিনে নিন। সমুদ্রের ধারের রোদ কিন্তু বড্ড বেশি পুড়িয়ে দেয়।

পুরুষেরা দুটো ফর্মাল শার্ট, ও ট্রাউজার রাখুন অবশ্যই। শীতের জায়গায় গেলে সঙ্গে নিন লাইট পোলোনেক সোয়েটার, গরম ইনারওয়্যার। স্মার্ট জ্যাকেট, উলের মোজা। মাঙ্কি ক্যাপের বদলে কেতাদুরস্ত টুপি ব্যবহার করুন।

চটি সম্পর্কে সেনসিবল হন। ভারি স্পোর্টসওয়্যারের বদলে পাতলা ওয়াকিং-শু্য নিলেই ভাল। একজোড়া সুন্দর হিল জুতো বা স্যান্ডাল নিলেও চলে। জুতোর কালেকশনে যাই থাক, একটা সাধারণ রাবারের চটি নিতেই হবে যেটা কিনা হোটেলের রুমে বা বাইরে সর্বত্রই পড়া যায়। বেড়িয়ে এসে সেটা ছুঁড়ে ফেলে দিলেও চলবে। পুরুষেরা সুইমিং স্যুট সঙ্গে নিন। নিন টি-শার্ট আর বারমুডাও। টুপিও নেবেন। ক্যামেরা, টাকাপয়সা, ক্রেডিট কার্ড, মোবাইল রাখার জন্য ট্র্যাভেলিং পাউচ তো নেবেন অবশ্যই।

বাইরে ঘুরতে যাচ্ছেন। অথচ অ্যাকসেসরি সঙ্গে থাকবে না? রঙিন জামাকাপড়ের সঙ্গে কস্টিউম জুয়েলারি দারুণ দেখায়। চাঙ্কি ইয়ারিং, সুন্দর টপ সঙ্গে নিন। এগুলো পরে বেড়ানোর সময় ছবি তুললে সুন্দর দেখায়। সোনার গয়না যদি পরতেই হয় তো খুব কম পড়বেন।

যথেষ্ট পরিমাণ টাকাপয়সা সঙ্গে রাখুন। ব্যবহার করুন ফ্ল্যাট পাউচ। যাতে পাসপোর্টও ঢুকে যায়।

হ্যান্ডব্যাগে রাখুন ওয়ালেট, কমপ্যাক্ট, কাজল, স্যানিটাইজার, ছাতা, চশমা, সানগ্লাস। ব্যাগে একটা পাতলা শৌখিন চাদর রাখতে পারেন র্যাপ করে।

স্যুটকেস ব্যবহার করুন ঠিকঠাক ভাবে। নামের লেবেল এবং পরিচয় সাঁটিয়ে দিন। স্যুটকেসের ভেতরেও আপনার ঠিকানা লেখা কাগজ সেঁটে দিন।

আজকাল সকলেই গান বাজনা শোনেন হেডফোনে। কিন্তু সকলের উপভোগের জন্য স্পিকার নিন।

আনাচে কানাচে

উমা এল ঘরে : মঙ্গলশঙ্খ হাতে সোহিনী সরকার।

ছবি: কৌশিক সরকার; আলো পরিকল্পনা: প্রেমেন্দু বিকাশ চাকী।
পুজো সৌজন্য: নেতাজি জাতীয় সেবাদল মেক আপ: মৈনাক দাশ।

অষ্টমীতে শহরে বিদ্যা

মোহিত সুরির পরের ছবি ‘হমারি অধুরি কহানি’র শ্যুটিং করতে আগামী কাল শহরে বিদ্যা বালন।
‘কহানি’র মতো এ বারও পুজোমণ্ডপেই হবে শ্যুটিং। সঙ্গে থাকবেন ইমরান হাসমি। ছবি: কৌশিক সরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement