ফাইল চিত্র।
ভোটের আগে শাসকদল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরের পতাকা তুলে নিয়েছিলেন। তবে রাজনৈতিক রং পাল্টেও শেষমেশ ভোটবাক্সে লাভের মুখ দেখতে পারেননি বহু দলবদলু। এমন নেতা-নেত্রীদের তালিকা সংক্ষিপ্ত হলেও ধারে ও ভারে তাঁরা হেভিওয়েট। সব্যসাচী দত্ত, জিতেন তিওয়ারি, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বৈশাখী ডালমিয়া বা প্রবীর ঘোষালের মতো সেই হেভিওয়েটদের পক্ষেই আম জনতার রায় পড়েনি।
নতুন দলে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই বিধানসভার টিকিট হাতে পেয়েছিলেন রাজীব-জিতেনরা। তবে সাধারণ মানুষের মন জয় করতে ব্যর্থ তাঁরা। ডোমজুড় আসনে নিজের পুরনো দলের প্রার্থী কল্যাণেন্দু ঘোষের কাছে হেরেছেন রাজীব। পাণ্ডবেশ্বরের বিদায়ী বিধায়ক জিতেন তিওয়ারি খুইয়েছেন নিজের আসন। উত্তরপাড়ায় প্রবীর ঘোষালের হার হয়েছে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী কাঞ্চন মল্লিকের কাছে। তৃণমূলের রানা চট্টোপাধ্যায়কে বালির আসন ছাড়তে হয়েছে বৈশাখী ডালমিয়াকে।
অথচ সদ্য দলে যোগ দেওয়া এই নেতা-নেত্রীদের জেতাতে প্রচারে দেখা গিয়েছে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে। ভোটপ্রচারে বাংলায় পা রেখেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মতো গেরুয়া শিবিরের হেভিওয়েটরা। তবে এই দলবদলুদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন আম জনতা। ভোটবাক্সে তারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছে।
শাসকদলের থাকাকালীন কেউ ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী, কেউ বা আবার নিজের এলাকার প্রভাবশালী নেতা বা বিধায়ক। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়ার আগে সব্যসাচী দত্ত যেমন ছিলেন বিধাননগর পুরসভার মেয়র। অন্য দিকে, আসানসোল পুরসভার মেয়র তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিদায়ী বিধায়ক ছিলেন জিতেন। তবে নতুন দলেও সকলের মন জয় করতে পারেননি তাঁরা। বিজেপি-তে পা রাখার পর জিতেনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন দলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। বাবুলের সমর্থনে মুখ খুলেছিলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ-সহ অগ্নিমিত্রা পাল, সায়ন্তন বসুরা। দলের একাংশের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের কাছে তাঁদের ভাবমূর্তি নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। শাসকদলে দীর্ঘদিন ক্ষমতা ভোগের পর প্রতিদ্বন্দ্বী দলে যোগদান যে তারা ভাল ভাবে নেননি, তা ভোটের ফলাফলেই স্পষ্ট। ক্ষমতাভোগের প্রবণতাই যেন এই নেতা-নেত্রীদের বিপক্ষে গিয়েছে।