জনসংযোগ বাড়াতে সাধারণ মানুষের বাড়িতে রাত্রিযাপন করছেন তৃণমূল নেতা। —নিজস্ব চিত্র।
ভোটারদের বাড়িতে রাত্রি যাপন থেকে দেওয়াল লিখন, বিধানসভা ভোটের আগে নানা ভাবেই ভোটারদের মন জয়ে নেমে পড়ল শাসক এবং বিরোধী, দু’পক্ষই। তবে তার মাঝেই কড়া হাতে নিয়ম পালনে দেখা গেল নির্বাচন কমিশনকেও।
ভোটারদের মন জয়ে কোচবিহারের যুব তৃণমূলের সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক রাত কাটালেন জেলার মদনমোহন মন্দিরের রাজপুরোহিত হীরেন্দ্র ভট্টাচার্যর বাড়িতে। তবে ভোটের আগে শুধুমাত্র জনসংযোগ বাড়াতেই এমনটা করেননি বলে দাবি করলেন তিনি। অভিজিৎ বলেন, ‘‘মানুষের সুবিধা-অসুবিধা বুঝতে গেলে তাঁদের সঙ্গে মিশতে হয়। তাঁদের অভাব-অভিযোগ শুনতেই রাত্রিযাপন করছি। ভোটের জন্য নয়, এক জন রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে আমার এই কর্মসূচি।’’ তবে কারণ যা-ই হোক, অভিজিতের এই কর্মসূচি নিয়ে খুশি রাজপুরোহিত হীরেন্দ্র ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘এ ভাবে আগে কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আমার বাড়িতে এসে রাত্রিযাপন করেননি। এটাই প্রথম। পরিবারের পাশাপাশি আমার ভাই দীনেন ভট্টাচার্য ও তাঁর পরিবারও এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন।’’
যদিও তৃণমূলের ওই কর্মসূচিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপি-র জেলা সভাপতি মালতি রাভা রায় বলেন, ‘‘ভোটের আগে এ ভাবে মানুষের বাড়িতে গিয়ে রাত কাটালে তাঁদের মন পাওয়া যায় না। সারা বছর মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয়। একুশের নির্বাচনে মানুষ আমাদের পাশে রয়েছে। জয় আমাদের নিশ্চিত।’’
ভোটারদের বাড়িতে রাত কাটানো ছাড়াও দেওয়াল লিখনের মাধ্যমেও প্রচার সারছে শাসকদল। পিছিয়ে নেই বিজেপি-ও। দেওয়াল লিখনের যুদ্ধেও কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা তাদের মধ্যে। বিজেপি যখন লিখছে, ‘হরে কৃষ্ণ হরে হরে, বিজেপি ঘরে ঘরে’। সে সময় তৃণমূল লিখছে, ‘হরে কৃষ্ণ হরে হরে, যত চোর বিজেপির ঘরে’। দক্ষিণের হুগলি থেকে চুঁচুড়া— সব জায়গাতেই দেওয়াল-যুদ্ধ দেখা গিয়েছে। চুঁচু্ড়া বড় বাজারে দেওয়ালে ভিনাইল স্টিকার দিয়ে ভোটপ্রচার করছে বিজেপি। এলাকার বিজেপি নেতা সপ্তর্ষী বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা নির্বাচন ঘোষণার আগে থেকেই প্রচার শুরু করেছিলাম। তবে নির্ঘণ্ট প্রকাশ হতেই দলীয় কর্মীরা নেমে পড়েছেন দেওয়াল লিখতে।’’ অন্য দিকে, প্রতাপপুরের তৃণমূল নেতা জয়দেব অধিকারী বলেন, ‘‘ভোট এলেই দেওয়াল লেখায় কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ থাকে। মিটিং-মিছিলের পাশাপাশি দেওয়াল লিখনও ভোটপ্রচারের অন্যতম আকর্ষণ। দেওয়ালে নানান ছড়া ছবি-আঁকা যায়। দেওয়াল লেখার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মানা হচ্ছে।’’
শাসক-বিরোধীর পাশাপাশি তৎপরতা দেখা দিচ্ছে নির্বাচন কমিশনের মধ্যেও। দিনক্ষণ ঘোষণার পর নিয়মমাফিক আদর্শ আচরণবিধি চালু হয়ে গিয়েছে। কমিশনের সমস্ত নির্দেশকে মান্যতা দিয়েই ধূপগুড়ি শহরের সমস্ত সরকারি প্রকল্পের হোর্ডিং, ব্যানার খোলা হচ্ছে। সরকারি অফিস থেকে ধূপগুড়ি পুরসভার পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলির ফ্ল্যাগ-ফেস্টুন খুলে ওই দলগুলির অফিসে পৌঁছে দেওয়া হয়।