গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নন্দীগ্রামে ভোট গণনায় সাপ-লুডোর খেলা শেষে জানা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে ওই আসনে জিতেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তার পর থেকেই তৃণমূল অভিযোগ করে আসছে, গণনায় কারচুপি হয়েছে। স্বয়ং মমতা নিজে ফলপ্রকাশের পর দিন অর্থাৎ সোমবার কালীঘাটের বাড়িতে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘বন্দুকের নলের মুখে কাজ করতে হচ্ছে রিটার্নিং অফিসারকে। তিনি যদি পুনর্গণনার নির্দেশ দেন, তা হলে তাঁর প্রাণ সংশয় হতে পারে।’’ এর পর তিনি নিজের মোবাইলে একটা বার্তা দেখান। ইংরেজিতে সেখানে লেখা ছিল, ‘আমাকে বাঁচান। আমার পরিবার ধ্বংস হয়ে য়াবে। আত্মহত্যা করা ছাড়া আমার আর কোনও উপায় নেই। প্রাণনাশের হুমকি দেওয়াহচ্ছে। আমাকে খুন করা হতে পারে। আমার কিছু করার নেই। আমাকে ক্ষমা করুন। আমার একটি ছোট মেয়ে রয়েছে’। ওই বার্তা নন্দীগ্রামের রিটার্নিং অফিসার (আর ও) কিশোর বিশ্বাসের বলে দাবি করেন মমতা।
এত দিন সেই কিশোরের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। অবশেষে বুধবার দুপুরে ফোনে পাওয়া গেল তাঁকে। আনন্দবাজার ডিজিটালের সঙ্গে কথা বললেন কিশোর। হলদিয়া মহকুমাশাসকের দফতরে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অ্যান্ড ডেপুটি কালেক্টর (ডিএমডিসি) পদে কর্মরত কিশোর। কিশোরকে প্রশ্ন করা হয়, সত্যিই কি গান পয়েন্টে রেখে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করা হয়েছিল তাঁকে? জবাবে কিশোর বলেন, ‘‘প্রাণনাশের হুমকি নিয়ে আমি কিছু মন্তব্য করব না। বাড়ির নিরাপত্তা বা নির্বাচন সংক্রান্ত কোনও বিষয়েই মন্তব্য করার এক্তিয়ার আমার নেই। একমাত্র পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসকই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারেন। আমি কিছু বলব না।’’
সোমবার কালীঘাটে সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা। সেখানে রিটার্নিং অফিসার কিশোরের সঙ্গে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির মেসেজ কথোপকথন তুলে ধরেন তিনি। মমতা বলেন, ‘‘এক জনের কাছ থেকে এসএমএস পেয়েছি। নন্দীগ্রামের এক রিটার্নিং অফিসার জানিয়েছেন, বন্দুকের নলের মুখে কাজ করতে হচ্ছে। তিনি যদি পুনর্গণনার নির্দেশ দেন, তাহলে তাঁর প্রাণ সংশয় হতে পারে। নন্দীগ্রামে মেশিন পাল্টে দেওয়া হয়েছে।’’ ঠিক কার সঙ্গে রিটার্নিং অফিসারের ওই কথা হয়েছে, তা যদিও সে দিন খোলসা করেননি মমতা। তবে জানিয়েছিলেন, বিষয়টি নিয়ে আদালতে যাবে তৃণমূল।