বুধবার রাজভবনে মমতা ও ধনখড়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানেও উঠে এল রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার প্রসঙ্গ। তৃতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার দিনই মমতাকে হিংসা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী হতে আর্জি জানালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। জবাবে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাংলা এই ধরনের আচরণ পছন্দ করে না। হিংসাকে যে তিনি কোনও ভাবেই প্রশ্রয় দেবেন না, তাও জানান মুখ্যমন্ত্রী। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবেন না বলেও জানিয়ে দেন তিনি।
বুধবার সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনে শপথ নেন মমতা। তার পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন। সেখানেই মমতাকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে ভোট পরবর্তী হিংসার কথা উঠে আসে ধনখড়ের মুখে। মমতাকে ‘ছোট বোন’ হিসেবে সম্বোধন করে ধনখড় বলেন, ‘‘পর পর তিন বার ক্ষমতায় আসার ঘটনা অত্যন্ত বিরল। শুভেচ্ছা জানাই। তবে এই মুহূর্তে রাজ্যে অহেতুক হিংসা বন্ধ করাই প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। কারণ এর ফলে সমাজের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। মুখ্যমন্ত্রীর উপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে। আশা করি, রাজনীতির ঊর্ধ্বে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেত শীঘ্রই ব্যবস্থা নেবেন তিনি।’’
রবিবার ভোটের ফলাফল সামনে আসার পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত হিংসার ঘটনায় তৃণমূলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে বিজেপি। রাজভবনে মমতার শপথগ্রহণের আগেও সকালে টুইটারে এ নিয়ে সরব হন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য এবং কলকাতা পুলিশকে এ নিয়ে সতর্ক করেও কোনও লাভ হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
তার পর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ফের সেই প্রসঙ্গ উঠে এলে মমতা বলেন, ‘‘বাংলা অশান্তি পছন্দ করে না। আমি নিজেও করি না। রাজ্যে ভোট চলায় ৩ মাস আমার হাতে ক্ষমতা ছিল না। সকলকে বলব, শান্তি, শৃঙ্খলা এবং সংহতি বজায় রাখুন। ভোটের পর কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটে। আজ থেকে আইনশৃঙ্খলা আমার হাতে। কঠোর হাতে এই অশান্তির মোকাবিলা করব। ফিরে গিয়ে যেখানে যেখানে যাদের পোস্টিং করার করব। অশান্তি করলে আমি কিন্তু কড়া পদক্ষেপ করতে পিছপা হব না। সকলকে বলব, রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ করবেন না।’’
রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা নিযে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে ফোন করেছেন বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন ধনখড়। রবিবারের শপথগ্রহণে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তৃণমূলই এই হিংসায় মদত দিচ্ছে বলে লাগাতার অভিযোগ করে আসছেন তিনি। তার প্রতিবাদেই মমতার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যাননি তিনি।