Bangladesh Border

Bengal Election: কাঁটাতারে পেঁচিয়ে জীবন, এই ভোটে মুক্তি চান মালদহের তালতোড়ার বাসিন্দারা

আর পাঁচটা গ্রামের মতোই তালতোড়া। সবুজ মাঠ। মাটির বাড়ি। বাড়ি বাড়ি ধানের গোলা। কাঁচা রাস্তা। শুধু সে সবের স্বীকৃতি নেই। নিজ ভূমে পরবাসী বাসিন্দারা।

Advertisement

জয়শ্রী সিংহ

মালদহ শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২১ ১৭:৫৩
Share:

পুনর্ভবা নদীর তীরে তালতোড়া গ্রাম। —নিজস্ব চিত্র।

জমি আছে। মানুষের বাস আছে। কিন্তু পায়ের তলার সেই জমির স্বীকৃতি নেই। স্বীকৃতির দাবিকে সঙ্গী করেই ফের এক বার ভোট দিতে চলেছেন মালদহের হবিবপুরের তালতোড়ার বাসিন্দারা।

Advertisement

ভারত সীমান্তের কাঁটাতার পেরিয়ে হবিবপুর বিধানসভার অন্তর্গত চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার তালতোড়া গ্রাম। গ্রামের কাছেই পূনর্ভবা নদী। তা পেরোলেই বাংলাদেশ। এমনই ‘না মানুষের জমি’ (নো ম্যান’স ল্যান্ড)-তে বসবাস করছেন বহু মানুষ। শুধু তাই নয়, মালদহ জেলার ১৭২ কিলোমিটার সীমান্ত জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এ রকম ১২ থেকে ১২টি গ্রাম। সেগুলিতে বসবাস করছেন প্রায় ২৫০ টি পরিবার। সীমান্তে বেড়া দেওয়ার সময় কোনও ভাবে বাদ পড়ে গিয়েছিল গ্রামগুলি। তার পর থেকেই ‘বন্দিদশা’ শুরু হয়েছে গ্রামবাসীদের।

আর পাঁচটা গ্রামের মতোই তালতোড়া। সবুজ মাঠ। মাটির বাড়ি। বাড়ি বাড়ি ধানের গোলা। কাঁচা রাস্তা। শুধু সে সবের স্বীকৃতি নেই। প্রশ্নের সঙ্গে অনুরোধ মিশিয়ে গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধ নিতাই বিশ্বাস বললেন, ‘‘নিজ ভূমে আর কত দিন পরবাসী হয়ে থাকব? আমাদের একটা হিল্লে করুন। আমাদের ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যৎ আইনের কাঁটাতারে পেঁচিয়ে গেছে। সরকারি প্রকল্পের সব সুবিধা থেকে আমরা বঞ্চিত। শুধু এই ভোটার এবং আধার কার্ড আমাদের মান বাঁচিয়ে রেখেছে।’’

Advertisement

নদী পেরোলেই বাংলাদেশ। নিজস্ব চিত্র

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এমন একটা জায়গার বাসিন্দা হওয়ায় সকলেই যেন সন্দেহের চোখে দেখে। কোনও আত্মীয়ের বাড়ি গেলে সীমান্ত প্রহরীদের অনুমতি নিয়ে, পরিচয় পত্র জমা দিয়ে তবে যেতে হয় তাঁদের। এমনকি ছেলে বা মেয়ের বিয়ে দিতে গেলেও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অনুমতি নিতে হয় বলে অভিযোগ তাঁদের। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে আসা দুষ্কৃতীদের উৎপাত তো রয়েছেই। তালতোড়ার বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাসের কথায়, ‘‘একশোর বেশি ঘর রয়েছে এই গ্রামে। কৃষিই আমাদের জীবিকা। কিন্তু স্বাধীনতার সুখ এখনও পাইনি। আমরা ভারতীয়। কিন্তু তবু আমাদের সন্দেহ করা হয়।’’

তালতোড়ায় প্রতি ভোটেই ওঠে স্বীকৃতির প্রশ্ন। নিজস্ব চিত্র

বছর পাঁচেক আগে গ্রামে বিদ্যুৎ এসেছে। কিন্তু ‘মুক্তি’ আসবে কবে? শুধু হবিবপুরই নয়, বৈষ্ণবনগর এবং ইংরেজবাজার বিধানসভা কেন্দ্রের এমন গ্রামগুলিতে ভোট এলেই ঘুরপাক খায় এমন প্রশ্ন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement