মহম্মদ সেলিম।
এ বার হুগলিতে সিপিএমের ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী একজনই।মহম্মদ সেলিম।দলের এই পলিটব্যুরো সদস্য বিজেপি-তৃণমূলকে পিছনে ফেলে চণ্ডীতলায় বাজিমাত করতে পারবেন কিনা, সময়ই বলবে। কিন্তু বাম শিবির যে রীতিমতো অঙ্ক কষে সেলিমকে চণ্ডীতলায় প্রার্থী করেছে, তা অনেক নেতাই ঠারেঠোরে স্বীকার করছেন।
প্রায় আড়াই লক্ষ ভোটার রয়েছেন এই বিধানসভা এলাকায়। ২৩ শতাংশেরও বেশি মুসলিম ভোটার। সেলিম দলের প্রধান ‘সংখ্যালঘু মুখ’। তা ছাড়া, জাঙ্গিপাড়া লাগোয়া এই বিধানসভার কয়েকটি সংখ্যালঘু প্রধান পঞ্চায়েতে (যেমন, নবাবপুর, ভগবতীপুর, কুমিরমোড়া ইত্যাদি) ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) আব্বাস সিদ্দিকির প্রভাব রয়েছে। আইএসএফ যে হেতু বামেদের সঙ্গে সংযুক্ত মোর্চায় রয়েছে, ফলে, সেলিমের ভোট-ভাগ্য প্রসন্ন হবে বলে মনে করছেন অনেকে।
বতর্মানে রাজ্য সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য রয়েছেন তিন জন। সেলিম, বিমান বসু এবং দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। বিমানবাবু ভোটে লড়েন না। সূর্যবাবুও এ বার নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। ফলে, পলিটব্যুরো সদস্য হিসেবে একমাত্র সেলিমই এ বার ভোটে লড়ছেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘নানা কর্মসূচিতে মানুষের প্রবল সাড়া পাচ্ছি। চণ্ডীতলায় ভাল ফলের আশা করছি।’’
কিন্তু সেলিমের লড়াই কি আদৌ সহজ হবে?
বিজেপি এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি ঠিকই। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যে ডানকুনি পুর এলাকা এবং গঙ্গাধরপুর ও কৃষ্ণরামপুর পঞ্চায়েত এলাকায় তারা ভাল প্রভাব বাড়িয়ে নিয়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনে জনাই এবং গরলগাছা ছাড়া অন্য পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতেও বিজেপির তুলনায় শাসকদল
পিছিয়ে ছিল। ফলে, গেরুয়া-শিবিরের সঙ্গে সেলিমের লড়াইটা হাড্ডাহাড্ডি হবে বলেই মনে
করছেন অনেকে।
তুলনায় তৃণমূলের সঙ্গে লড়াইটা সহজ বলে দাবি স্থানীয় সিপিএম নেতাদের একাংশে। এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী করেছে বিদায়ী বিধায়ক স্বাতী খন্দকারকেই। তা নিয়ে দলের একাংশ ক্ষুব্ধ।
গত পুর নির্বাচনে সিপিএম সর্বত্র খারাপ ফল করলেও ডানকুনিতে ভাল ফল করে।
২১ আসনের ওই পুরসভায় তৃণমূল বোর্ড গড়ে ঠিকই।
কিন্তু বিদায়ী ভাইস-চেয়ারম্যান দেবাশিস মুখোপাধ্যায়-সহ মোট চার তৃণমূল কাউন্সিলর সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দেন। ফলে, সংখ্যার নিরিখে বিদায়ী পুরবোর্ডে শাসকদলকে পিছনে ফেলে সিপিএম এগিয়ে গিয়েছে।
সব মিলিয়ে ভোট কাটাকাটির সুফল ঘরে তুলতে ‘হেভিওয়েট’ সেলিমকেই চণ্ডীতলায় বাজি ধরেছেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব।