চারিদিকে চাপা উত্তেজনা। সকাল ৯ টাতেই মিষ্টি আলোর খোলস ছেড়ে সূর্যের তাপ বেশ খানিকটা প্রখর। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই নন্দীগ্রামের স্টেট ব্যাঙ্ক সংলগ্ন চত্বরে জোরাল হচ্ছে তৎপরতা। কারণ আর কিছুক্ষণ বাদেই এই মাঠে পৌঁছবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আকাশযানে চেপে তিনি নামবেন ‘যুদ্ধের’ ময়দানে।
আগেও নন্দীগ্রামে এসেছেন একাধিকবার। কখনও সড়ক পথে, কখনও বা কপ্টারে। তবে এ বারের পরিস্থিতিটা এক্কেবারে আলাদা। এ বার নন্দীগ্রামে ভোট যুদ্ধে নিজেকে বাজি রেখেছেন তৃণমূল নেত্রী। বেলা আড়াইটে নাগাদ তাঁর কপ্টার এসে পৌঁছবে নন্দীগ্রামের এই অস্থায়ী হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে। সেখানেই একটি ছোটখাট কর্মীসভা সেরে নেবেন মমতা।
দলনেত্রীকে স্বাগত জানাতে ইতিমধ্যেই অস্থায়ী হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডের আশেপাশে লাগানো হয়েছে ঘাসফুল প্রতীকের বেশ কিছু পতাকা। প্রস্তুত ছোট্ট সভামঞ্চ। সামনের খোলা অংশে কয়েক হাজার মানুষের বসার ব্যবস্থা হয়েছে। নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনের নেতা আবু তাহের জানালেন, নিছকই কর্মীসভায় যোগ দেবেন দলনেত্রী। বুথ কমিটি, অঞ্চল কমিটি, ত্রিস্তর পঞ্চায়েত সদস্য, শিক্ষক সংগঠন, শ্রমিক সংগঠনের প্রায় ৮ হাজার নেতাকর্মীকে এই কর্মীসভায় ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইতিমধ্যে সভাস্থলের চারপাশে মোতায়েন হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। তবে এখনও কেন্দ্রীয় বাহিনী সেভাবে না আসায় সিভিক ভলেন্টিয়ার আর পুলিশ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সামাল দিচ্ছে সবটা। তবে অন্যান্য সময় দলনেত্রীর সভাকে কেন্দ্র করে রাস্তাঘাট যেভাবে দলীয় পতাকায় মুড়ে ফেলা হত, এখন তা আর নজরে আসছে না। তৃণমূল সূত্রে খবর, নির্বাচন কমিশনের কড়াকড়িতেই এ সবে রাশ টানা হয়েছে।
যদিও নন্দীগ্রামের সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের কাছেই গোটা ছয়েক বড়বড় ফ্লেক্স ঝুলছে যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া ক্যাপশান জ্বলজ্বল করছে ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’। সেই সঙ্গে তৃণমূল নেত্রীর সাদামাটা একটি প্রমাণ সাইজের কাটআউট রয়েছে নন্দীগ্রাম শহরের প্রবেশ পথে। এছাড়াও চৌরঙ্গী রোডে ঢোকার মুখেও একই ধরনের কাটআউট রয়েছে।
দলনেত্রীর নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান বললেন, ‘‘তৃণমূল নেত্রী পৌঁছনোর আগেই তাঁর ৩ বিশ্বস্ত সৈনিক সুব্রত বক্সি, পূর্ণেন্দু বসু এবং দোলা সেন এসেছেন। তাঁরা এসেই সভাস্থল পরিদর্শন করেন। সেই সঙ্গে সভা সেরে দলনেত্রী একটি ‘রুদ্ধদ্বার’ বৈঠক করবেন তারও প্রস্তুতি সারবেন এই ৩ নেতা।
সভার সময় বেলা আড়াইটে হলেও সকাল থেকেই স্থানীয় বাসিন্দারা উৎসুক হয়ে ভিড় জমাচ্ছেন হেলিপ্যাডের আশপাশে। সুফিয়ান জানাচ্ছেন, বেলা বাড়লেই মাঠ ভরে যাবে। নন্দীগ্রামের মানুষ মমতার সঙ্গেই আছে তা তাঁরা ভোট বাক্সেই প্রমাণ দিয়ে দেবে বলেই দাবী তাঁর।