ফাইল চিত্র
রবিবার নন্দীগ্রামে শেষ দফার প্রচার শুরু করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময়ে রেয়াপাড়ার একটি মঞ্চ থেকে তাঁর করা মন্তব্য নিয়ে চর্চা শুরু হয়। সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে মমতা সোমবার কিছু বলেন কি না, সেই দিকেই নজর থাকবে সকলের।
নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে মুখোমুখি লড়াই মমতার। শেষ দফার প্রচার যুদ্ধে শুভেন্দু পুরোদমে লড়াই করছেন। তাই এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে চাইছেন না মমতা। নন্দীগ্রাম ব্লক ২-এ সোমবার প্রথম সভা মমতার। বয়াল ২ নম্বর ব্লকে দ্বিতীয় সভা ও আমদাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে মমতার তৃতীয় সভা রয়েছে।
১.৫৮ ভোট সকাল সকাল দিন। ওরা গুন্ডা নিয়ে ভয় দেখাবে। মনে রাখবেন, যাঁরা ভয় পায়, তাঁরাই ভয় দেখায়। আমি দেখি মা বোনেদের শক্তি বড় না বিহার, উত্তরপ্রদেশের গুন্ডাদের শক্তি বেশি। বাংলার যে কোনও জায়গা থেকে দাঁড়াতে পারতাম। কিন্তু আমি নন্দীগ্রামে এলাম, কারণ এটি আন্দোলনের ভূমি। আমি আন্দোলনকে, লড়াইকে স্যালুট করতে চাই। এটা আমার প্রিয় জায়গা ও পবিত্র জায়গা। আমি চ্যাংড়ামো মেরে জিজ্ঞাসা করলাম, আমি দাঁড়াব নন্দীগ্রামে। সবাই নাচতে শুরু করল। আমি তাই কথা রাখলাম। কারণ, আমি কথা দিলে কথা রাখি। আমার একটা, দুটো, তিনটে জায়গায় দাঁড়ানোর দরকার নেই। এখানে দাঁড়াব, এখানে জিতব, সরকার গড়ব এখানে।
১.৫২ তৃণমূল কংগ্রেস থাকলে সব কাজ হবে। খেলায় জিততে হবে। গুন্ডারা গুন্ডামি করলে হাতা খুন্তি, ঝাড়ু দিয়ে আদর করে দিতে হবে। আপনারা মা বোনেরা আন্দোলন করেছে, তা আমরা জানি। দিনের পর দিন নন্দীগ্রামে মানুষকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। রাতের বেলায় ঘুমনোর উপায় ছিল না। ২৬-২৭ জন মানুষ মারা গিয়েছেন। যারা মেরেছিল, তাদের নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে ভোট কেড়ে নিতে। নব সামন্ত চাইলে ভোট দেবেন? মা বোনেরা হাতা-খুন্তি নিয়ে বেরিয়ে আসবেন। কড়াইয়ে লুচি পড়বে, আর ফুলবে, আর বিজেপি জ্বলবে। নরেন্দ্র মোদীরা কৃষকদের সব অধিকার কেড়ে নিতে চায়, কিন্তু কেড়ে নিতে দেবেন না। ১ এপ্রিল দ্বিতীয় দফার ভোটে তৃণমূলের এজেন্টরা সতর্ক থাকুন। টাকা দিলে খরচ করে দিন। সবাই মাস্ক পরে ভোট কেন্দ্রে যাবেন। মাস্ক না পরে গেলে দিল্লির কিছু পুলিশ ভোট দিতে দিচ্ছে না। মেশিন খারাপ করে দিচ্ছে। তখন ছায়ায় দাঁড়াবেন, অপেক্ষা করবেন, ভোট দেওয়ার জন্য। ভিভিপ্যাট মেশিনে কোথায় ভোট পড়ছে খেয়াল রাখুন। গণনার দিন কারও থেকে কিছু খাবেন না। একমাস পাহারা দিতে হবে মেশিন। কোনও পরিচিত বন্ধু হলেও ছাড়বেন না।
১.৪৮ সিপিএম গদ্দারদের কোনও মামলা দেয়নি। ভিনরাজ্যের পুলিশের উর্দি কিনছে। বিজেপি-র গুন্ডারা মোটরবাইক নিয়ে গুন্ডামি করছে। কমিশনের অধীনে পুলিশ কাজ করছে। আমাদেরও তিনজন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। পরের মে মাসের পর থেকে পড়ুয়াদের ব্যাঙ্কের ক্রেডিট কার্ড করে দেওয়া হবে। বিনা পয়সায় স্বাস্থ্য, ৫ লক্ষ টাকার কার্ড। দুয়ারে সরকার প্রতি বছর আপনার বাড়ির দরজার সামনে হবে। দরখাস্ত করলে সরকারের আধিকারিকরা কাজ করে দেবেন না করলে প্রশাসন শাস্তি দেবে। চিন্তা করবেন না, আমাকে কাজ করতে বলতে হয় না। আমি না থাকলেও আমার একটা অফিস চলে। যে কোনও কেউ গেলে তার কাজটা পাবে। নন্দীগ্রামে অফিস তৈরি করে রাখব। সেখানেই আপনাদের কাজ হবে।
১.৪৬ এটা আমার দোষ। ওঁদের প্রশাসনিক ও মন্ত্রীর পদ দেওয়ার পরে অনেক টাকা হয়েছে। এখন বিজেপি ধরছে, এত টাকা রাখবে কোথায়, তাই বিজেপি ধরছে। নন্দীগ্রামে ভূমি আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে, আমি ঠিক জানি না, আপনারা বলুন। বাকি আন্দোলকারীদের মামলাও আমরা স্থগিত করার চেষ্টা করছি। শুধু গদ্দার বাবুর বিরুদ্ধে কোনও কেস দেয়নি। ও সিপিএমকে ডেকে নিয়ে এসেছিল। সে দিন সিপিএমের কর্মীরা পুলিশে পোশাক পরে গুলি চালিয়েছিল নন্দীগ্রামে। আজকেও তাই করছে। পুলিশ সাজিয়ে গোলমাল পাকাবে। কেউ টাকা দিচ্ছে দেখলে খবর দিন, আমি পুরস্কার দেব।
১.৪২ কাঁথিতে তৃণমূলের হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন অখিল গিরি, আর কেউ ভোটে দাঁড়ায়নি। ওঁরা ছিলে না তৃণমূলের জন্মের সময়ে। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে সব জিততে শুরু করল। একদিন কোথাও ঠাঁই হবে না। আমি গণতন্ত্রের মানুষ, গণতন্ত্রের হয়ে লড়াই করি। পাঁচ দিন নন্দীগ্রামে থেকে, ভোট মিটিয়ে যাবো। বাইরে থেকে গুণ্ডা নিয়ে আসছে। কাঁথিতে উত্তরপ্রদেশের ২০ গুণ্ডা ধরা পড়েছে।
১.৩৪ অমিত শাহ টুইট করে বলছেন, ‘বেঙ্গল কা কেয়া হাল হ্যায়’, আরে আপনাদের উত্তরপ্রদেশের হাল কী? নোংরা খেলা খেলছে বিজেপি। সংবাদ মাধ্যমের লোগো নকল করা হচ্ছে। নন্দীগ্রাম আমার প্রিয়, তাই লড়াই করতে চেয়েছিলাম। নন্দীগ্রামে যখন প্রথম আন্দোলন হয়, তখন বাবা ব্যাটাকে দেখা যায়নি, ১০-১৫ দিন। সিপিএম নেতা নব সামন্তকে বিজেপি-তে যোগদান করিয়েছে। যারা মানুষ খুন করল, তাঁদের নেতা গদ্দার।
১.৩০ আমার হাঁটতে ভাল লাগে। সেই মানুষটাকে হুইল চেয়ারে বসে যেতে হচ্ছে। মনের মধ্যে একটা চাপ পড়ে। কিন্তু আমি ভেবে দেখেছি, আমার মা বোনেরা যদি আসতে পারেন, আমিও আসতে পারব। বিজেপি বাইরে থেকে গুণ্ডা এনে ঝামেলা করছে।