Koushani Mukherjee

Bengal Polls: চ্যালেঞ্জ নিতে শিখেছি, পোশাক থেকে আচরণ— সবেতেই বদলে গিয়েছি

প্রথম বার প্রার্থী হয়ে কম পরিশ্রম করিনি। আমার জনসমর্থন দেখে থমকে গিয়েছিলেন মুকুল। ধুলোবালি মেখে ঘুরেছি। রাস্তায় রাস্তায় হেঁটেছি।

Advertisement

কৌশানী মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০২ মে ২০২১ ১৮:৩৬
Share:

কৌশানী মুখোপাধ্যায় —ফাইল চিত্র

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল বাংলা থেকে বহিরাগতদের বিতাড়িত করে ছাড়বেই! এমন আশা নিয়ে রাজনীতিতে এসেছিলাম। কৃষ্ণনগর উত্তর আসনেও তেমন প্রবণতাই দেখেছিলাম। মানছি, আমার বিপক্ষে ছিলেন মুকুল রায়। দেশের প্রাক্তন রেলমন্ত্রী এবং বিজেপি-র সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি। কিন্তু তাঁকে কখনওই ‘বিশাল কেউ’ বলে মানতে পারিনি। ২০০১ সালে শেষবার ভোটে লড়েছিলেন তিনি। এটুকুই মাথায় ছিল। তাঁর কাছে আমি হারলেও দল বড় জয় পেয়েছে অন্যত্র।

Advertisement

প্রথম বার প্রার্থী হয়ে কম পরিশ্রম করিনি। আমার জনসমর্থন দেখে থমকে গিয়েছিলেন মুকুল। ধুলোবালি মেখে ঘুরেছি। রাস্তায় রাস্তায় হেঁটেছি। কৃষ্ণনগরের প্রতিটা মানুষের মুখ চিনে গিয়েছি। চেয়েছিলাম, বাংলা যেন বাংলার মেয়ের কাছেই থাকে। কিন্তু প্রথম বারের অভিজ্ঞতার কথা লিখতে গিয়ে দেখছি, অনেক কাঁটা এসেছিল পথে। ব্যক্তিগত জীবনের প্রসঙ্গ তুলে এনে কটাক্ষ করা হয়েছে। আমার আর বনির ব্যক্তিগত সম্পর্ক আলাদা। রাজনৈতিক মতাদর্শও আলাদা। একে অন্যকে সম্মান করি। ও যখন কোনও চিত্রনাট্য বেছেছে, আমি নাক গলাইনি। রাজনীতির ক্ষেত্রেও একই নীতি মেনে চলেছি। প্রত্যেকের স্বাধীন মতামত আছে। বিশ্বাস আছে। মতাদর্শ আছে। কেউ কারও উপরে জোর করে কিচ্ছু চাপিয়ে দিইনি। বনি যখন বিজেপি-কে বেছে নিয়েছিল, সেটা একান্তই ওর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত বলে সম্মান জানিয়েছি।

আংশিক ভিডিয়ো দেখিয়ে বিজেপি আমার বিরুদ্ধে প্রচার করার চেষ্টা করেছিল। ‘মুকুল রায়’ নামের এক ফেসবুক পেজে আমার একটি ভিডিয়ো থেকে কিছু অংশ কেটে ‘ভাইরাল’ করা হয়েছিল। যেখানে আমাকে বলতে দেখা গিয়েছিল, ‘ঘরে সবার মা বোন আছে, ভোটটা ভেবে দিবি’। আমি প্রথম থেকেই বলেছিলাম, যে অর্থে আমি ওই কথাটি বলেছিলাম, তার ভুল ব্যাখ্যা করেছে বিজেপি। এমনকি মুকুল রায়ও বলেছিলেন, ওটা তাঁর ‘অফিশিয়াল পেজ’ নয়। আমি বলেছিলাম, বাড়িতে সবারই মা-বোনেরা আছে, ভোটটা ভেবে দেবেন। তার উদ্দেশ্য হুমকি দেওয়া ছিল না। উত্তরপ্রদেশের হাথরাসের ঘটনার কথা তো ভুলতে পারিনি আমরা। কেন্দ্রীয় সরকারের হিসেব অনুযায়ীও পশ্চিমবঙ্গ মহিলাদের জন্য সবচেয়ে সুরক্ষিত রাজ্য। এক দিকে যখন বিজেপি শাসিত রাজ্যে হাথরসের মতো ঘটনা ঘটছে, তখন পশ্চিমবঙ্গে মহিলারা নিরাপদে আছেন। আমি এই বিষয়টাই তুলে ধরতে চেয়েছিলাম সাধারণ মানুষের কাছে।

Advertisement

ওটা নিয়ে রাজনৈতিক নোংরামি করা হল। আমার বিরুদ্ধে কোনও অস্ত্র ছিল না কারও কাছে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই আসল ভিডিয়ো নেটমাধ্যমে পোস্ট করতে সবাই বুঝেছিলেন, কতটা দুধ আর কতটা জল। তবে মনে মনে ধাক্কা খেয়েছিলাম। ছ’বছরের অভিনয় জীবনে কাউকে আমার দিকে আঙুল তুলতে দিইনি। রাজনীতিতে পা রাখতে না রাখতেই নারীদের নিরাপত্তার মতো বিষয় নিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে রটনা! খুব সস্তা আর নোংরা রাজনীতি। বিরোধী পক্ষকে দাবিয়ে রাখতে চাইলে আমিও তেমন কিছু করতেই পারতাম। কিন্তু একবারও নোংরামির ধারপাশ দিয়ে হাঁটিনি। এক মাত্র বিজেপি ছাড়া বাকি সমস্ত শিক্ষিত নিরপেক্ষ জনগণকে পাশে পেয়েছি। তাই ওই ঘটনাকে আলাদা করে দেখে আর সময় নষ্ট করতে চাইনি।

তবে এই ক’দিনে নতুন ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বেশ ভাল লেগেছে। অনেক কিছু শিখেছি। অভিনয় জীবনের থেকেও বেশি চ্যালেঞ্জ নিতে শিখেছি। রোজ ৫-৬ ঘণ্টা হেঁটে ঘুরেছি। বাড়ি বাড়ি পৌঁছেছি। তার পরে দু’ঘণ্টার জন্য ছুটি। স্নান, খাওয়া, ফ্রেশ হওয়া। বিকেলে আবার বেরিয়েছি। সন্ধেয় ফিরে চা খেয়ে বৈঠক করেছি। দায়িত্ব বেড়ে গিয়েছিল। দম ফেলার সময় পাইনি। রাতের খাবার খেতে খেতে সেই ১২টা! পোশাক থেকে আচরণ— সবেতেই বদলে গিয়েছি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement