গ্রাফিক: নিরুপম পাল।
শুধু তৃণমূল নেতা-নেত্রীরাই নন, এ বার কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে দিয়ে সরকারি আধিকারিকদের হেনস্থার অভিযোগও তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব হরিকৃষ্ণ ত্রিবেদীকে সিবিআই চিঠি পাঠিয়েছে বলে মঙ্গলবার ছাতনার সভায় জানালেন তৃণমূল নেত্রী। তবে কেন বা কী কারণে সেই চিঠি পাঠানো হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু বললেনি মমতা।
বিজেপি-র বিরুদ্ধে ভোটের মুখে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের হেনস্থার অভিযোগ তুলে বিভিন্ন সভায় সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। মঙ্গলবার আরও এক ধাপ এগিয়ে সরকারি আধিকারিকদের হয়রানির অভিযোগও তুললেন। বাঁকুড়ার শালতোড়া বিধানসভা এলাকার মেজিয়ার সভা থেকে তিনি এই অভিযোগ তুললেও কারও নাম করেননি। কিন্তু ছাতনার সভায় সরাসরি স্বরাষ্ট্রসচিবকে সিবিআই চিঠি দিয়েছে বলে তীব্র প্রতিবাদ করেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘সারা ক্ষণ একে মার, ওকে গ্রেফতার করে বেড়াচ্ছে। এর বাড়িতে আয়কর হানা। ওর বাড়িতে সিবিআই পাঠিয়ে দাও। নির্বাচন চলছে। এখন এ সব হওয়া উচিত? এমনকি আমার হোম সেক্রেটারিকে পর্যন্ত নোটিস পাঠিয়েছে।’’
কিন্তু এই ভাবে তাঁকে দমানো যাবে না বলেও হুঙ্কার ছাড়েন মমতা। সরাসরি বিজেপি-র নাম করেই তিনি বলেন, ‘‘ওরা ভাবছে, এই করে ওদের মুখ বন্ধ করে দাও। আমি বিজেপি-কে বলি, যত ক্ষণ বেঁচে থাকব, আমার কণ্ঠ চলবে। তোমরা আমাকে স্তব্ধ করতে পারবে না। ভারতবর্ষে একটা লোকও যদি প্রতিবাদ করার না থাকে, আমি থাকব জেনে রেখো।’’
কিছু দিন আগেই কয়লা কাণ্ডে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা নারুলা ও তাঁর বোন মেনকা ও তাঁর পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। দীর্ঘ দিন বাদে সারদা কাণ্ডে ইডির জেরার মুখে পড়তে হয়েছে কুণাল ঘোষকে। আইকোর মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে তলব করেছে ইডি। পার্থ অবশ্য হাজিরা দেননি। অন্য দিকে তলব পেয়ে ইডি-র জেরার মুখোমুখি হয়েছেন চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্নও। রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিজেপি-র নির্দেশেই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি ভোটের মুখে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
কিন্তু কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে প্রশাসনিক আধিকারিকদের হেনস্থার অভিযোগ আগেও তুলেছেন মমতা। কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে সিবিআই হানা নিয়েও সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি-র বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের অভিযোগ তুলে ধর্মতলায় অবস্থান-বিক্ষোভেও বসেছিলেন মমতা। তার পর এ বার রাজ্যের এক পদস্থ আমলাকে সিবিআই-এর চিঠি ঘিরে রাজনৈতিক জল্পনা শুরু হয়েছে। সিবিআই-এর চিঠির বিষয়বস্তু নিয়ে তৈরি হয়েছে কৌতূহল।