—ফাইল চিত্র।
হুগলির ডানকুনির জনসভা থেকে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজীবের হুঙ্কার, ‘‘উনি বলছেন, ‘আয় রাজীব খেলবি আয়, ডোমজুড়েতে খেলবি আয়।’ আমি চ্যালেঞ্জ করলাম, ডোমজুড়েতেই খেলব। তোমার কত সাহস আছে দেখাও।’’রাজীবের এ হেন মন্তব্য নিয়ে পাল্টা তোপ দেগেছেন তৃণমূলের হুগলি জেলার সভাপতি দিলীপ যাদব।
শনিবার ডানকুনির সভায় তৃণমূলকে সার্বিক ভাবে আক্রমণ করেছেন রাজীব। তবে তাঁর বক্তৃতার একটি বড় অংশই ছিল কল্যাণকে ঘিরে। দলত্যাগের সময় থেকেই বার বার রাজীবকে নিশানা করেছেন কল্যাণ। তার জবাবও দিয়েছেন রাজীব। কিন্তু শনিবার আক্ষরিক অর্থেই প্রাক্তন সতীর্থর প্রতি ফেটে পড়েছেন ওই বিজেপি নেতা। চাঁছাছোলা ভাষায় কল্যাণকে আক্রমণ করে রাজীবের দাবি, ‘‘কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এত বড় বড় কথা বলছেন। অথচ, ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনে দল থেকে ৪ জনের নাম নিয়ে সার্ভে হয়েছিল। সেই তালিকায় শেষ নাম ছিল আপনার। আপনার নেতানেত্রীরা আমাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, লোকসভা নির্বাচনে শ্রীরামপুর থেকে কল্যাণ জিততে পারবে না। এক মাত্র জেতাতে পার তুমি। তোমার কী বক্তব্য বল। আর আপনি আজকে বলছেন, ‘আয় রাজীব খেলবি আয়, ডোমজুড়েতে খেলবি আয়।’ আমি চ্যালেঞ্জ করলাম, ডোমজুড়েতেই খেলব। তোমার কত সাহস আছে দেখাও।’’
এখানেই থামেননি রাজীব। লোকসভা নির্বাচনের ‘ইতিহাস’ টেনে তাঁর বক্তব্য, ‘‘ডোমজুড়ের মানুষ আমার মুখের দিকে তাকিয়ে তোমাকে ৫৫ হাজার লিড দিয়েছিল। আমাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করেছিল, আমরা কী করব? শ্রীরামপুরে প্রার্থী বদলাব? আমি বলেছিলাম, ছেড়ে দিন। ওখান থেকে বলা হয়েছিল, আপনার ব্যবহার ভাল নয়। কর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। আপনি ডোমজুড়ে বলেছেন, রাজীবের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও। আমি এই হাত দিয়ে মানুষের জন্য কাজ করি। ওপেন চ্যালেঞ্জ করছি, আপনি আসুন, আমার হাত ভেঙে দিন।’’ লোকসভা নির্বাচনে কল্যাণের জয় নিয়ে রাজীবের আরও দাবি, ‘‘আপনি সর্বত্র হেরেছেন। হাওড়ার দু’টো বিধানসভা কেন্দ্র আপনাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। ২০১৪ সালে কথা দিয়েছিলাম আপনাকে ৪০ হাজার মার্জিনে জেতাব। এ বারে কথা দিয়েছিলাম ৬০ হাজার মার্জিনে জেতাব। ৫৫ হাজারে জিতেছেন।’’ কল্যাণের পেশাদারিত্বও নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন রাজীবের তোপ, ‘‘অনেক বড়বড় কথা বলছেন। আপনি সরকারের পক্ষেও লড়েন, বিপক্ষেও লড়েন। আপনার ছেলে সরকারের পক্ষেও লড়ে, সরকারের বিপক্ষেও লড়ে। আপনি টাকা রোজগার করেন সরকারের ওকালতি করে।’’
রাজীবের আক্রমণের জবাব দিয়েছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ। কল্যাণ পাল্টা বলেন, ‘‘২০০৬ সালে হেরে ও পালিয়ে গিয়েছিল। ২০১১ সালে নাম ঘোষণার পর প্রথম কর্মিসভায় মঞ্চে আসতে ভয় পাচ্ছিল। আমি জায়গা ঠিক করে দেওয়ার পরে সাহস করে দাঁড়িয়েছিল।’’ কল্যাণের আরও অভিযোগ,‘‘ও (রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়) ডোমজুড়ে চক্রান্ত করেছিল। ২০১৪ সালে আমি প্রায় ৬৯ হাজার ভোটে জিতি। ওর জন্য কমে হয়েছিল ৫৫ হাজার। রাজীবের সঙ্গে খেলা আমার হবেই। ও যেন চলে না যায়। এমন হারান হারাব যে ৩ বছর তুমি ঘুম থেকে উঠতে পারবে না।’’ পেশা নিয়ে রাজীবের আক্রমণের জবাব দিতে গিয়ে কল্যাণ বলেন, ‘‘আমি পেশাদার লোক। সরকারি লোক নই। রাজীবও এসে পায়ে ধরেছিল। মামলা যখন হারছিল তখন বলেছিল, ‘দাদা বাঁচান’।’’