ধর্মেন্দ্র প্রধান,শুভেন্দু অধিকারী ও স্মৃতি ইরানি।
বুধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রে শুভেন্দু অধিকারী। নীলবাড়ির লড়াইয়ে ‘হাইভোল্টেজ’ আসন নন্দীগ্রামের জন্য ১০ মার্চ তিনি মনোনয়ন জমা দেবেন বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার রাজ্য বিজেপি জানিয়ে দিল, দলের নন্দীগ্রামের প্রার্থী শুভেন্দু মনোনয়ন জমা দেবেন শুক্রবার। অর্থাৎ, মুখ্যমন্ত্রীর ৪৮ ঘন্টা পর। শুধু তা-ই নয়, বিজেপি-র পরিকল্পনা— সে দিন মনোনয়ন পেশের আগে শুভেন্দুর মিছিলে অংশ নেবেন কেন্দ্রের দুই মন্ত্রী। এখনও পর্যন্ত যা জানা যাচ্ছে, তাতে ওই মিছিলে থাকার কথা স্মৃতি ইরানি এবং ধর্মেন্দ্র প্রধানের।
কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র এর আগেও হলদিয়ায় নরেন্দ্র মোদীর সভার সময় পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেই ছিলেন। অন্য দিকে, অমিত শাহর সফর বাতিল হওয়ায় হাওড়ার ডুমুরজলার সভায় এসেছিলেন স্মৃতি। এর পরে বিজেপি-র ‘পরিবর্তন যাত্রা’ কর্মসূচিতে যোগ দিতেও রাজ্যে এসেছিলেন স্মৃতি। পেট্রোপণ্যের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে তার আগেই ই-স্কুটার চালিয়ে নবান্নে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। স্মৃতিও তার পাল্টা বাংলায় এসে স্কুটার চালিয়ে দেখান। শুভেন্দুর মনোনয়নের সময় ধর্মেন্দ্র ও স্মৃতিকে বিজেপি হাজির করতে চাইছে মনোনয়নকে আরও ওজনদার এবং রংদার করার জন্য। শুধু শুভেন্দু বা রাজ্য বিজেপি নয়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা প্রার্থী হওয়ায় নন্দীগ্রাম আসনকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন পদ্মের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। খোদ প্রধানমন্ত্রী মোদীও রবিবার ব্রিগেড সমাবেশ থেকে একটি মাত্র বিধানসভা এলাকার নামই উল্লেখ করেছেন— নন্দীগ্রাম।
সেই প্রেক্ষিতেই মোদীর মুখে শোনা যায় মমতার পুরনো কেন্দ্র ভবানীপুরের কথা। শুভেন্দুর উপস্থিতিতেই মোদী কার্যত মমতাকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘ভবানীপুরে তো আপনার স্কুটি ভাল চলছিল। দেখলাম আপনার স্কুটি নন্দীগ্রামের দিকে টার্ন নিয়েছে। সেখানে যদি আপনার স্কুটি উল্টে যায়, তা হলে আবার আমাদের কিছু বলবেন না! আমরা কিন্তু আপনার ভালই চাই।’’ মোদীর এমন কথার সময় মঞ্চে বসা শুভেন্দুর মুখে হাসি দেখা যায়। নন্দীগ্রামের প্রতি সেই গুরুত্ব বুঝিয়েই এ বার বিজেপি নেতৃত্ব শুভেন্দুর মনোনয়নকেও ‘ঐতিহাসিক’ করে তুলতে চাইছেন। কারণ, একটি বিধানসভা কেন্দ্রের মনোনয়ন জমা দেওয়ার মিছিলে দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর উপস্থিতির নজির সাম্প্রতিককালে সারা দেশে রয়েছে বলে তথ্যাভিজ্ঞরা মনে করতে পারছেন না। বাংলায় তো নয়ই। ভোট ঘোষণার আগে থেকেই শুভেন্দু নন্দীগ্রাম তথা পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে মনোনিবেশ করেছেন। মনোযোগ দিয়েছেন ঝাড়গ্রাম জেলাতেও।
প্রসঙ্গত, এতদিন হলদিয়ার ভোটার থাকলেও এবার শুভেন্দু নন্দীগ্রামের ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন। তা-ও নির্বাচনে প্রার্থিপদ ঘোষণার যথেষ্ট আগেই। সম্প্রতি তাঁ নাম নন্দীগ্রামের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণার পর শুভেন্দু একটি জনসভায প্রকাশ্যেই বলেছেন, ‘‘এবার কিন্তু আমি নন্দীগ্রামে ভোট দেব। আপনাদের সঙ্গেই ভোট দেব। ভোটের আগে, ভোটের দিন দেখা হবে। আর ভোটের পর সবসময় দেখা হবে। যেমন গত কুড়ি বছর ধরে হয়ে এসেছে।’’