নিজস্ব চিত্র।
করোনা আবহে ৫০ জন অতিথি নিয়ে অনাড়ম্বর আয়োজন করা হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয় বারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বিজেপি, কংগ্রেস এবং সিপিএম-এর একাধিক নেতাকেও। কিন্তু অনুষ্ঠানে দেখা গেল না প্রায় কাউকে। যদিও তৃণমূলের প্রথম সারির প্রায় সকলেই ছিলেন অনুষ্ঠানে। রাজভবনের অনুষ্ঠানে খোশমেজাজে দেখা গেল রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে প্রশান্ত কিশোর— সকলের সঙ্গেই কথা বললেন তিনি। দেখা গেল, অভিষেকের হাত জড়িয়ে ধরেছেন ধনখড়। তরুণ রাজনীতিকের কাঁধে দু’হাত রেখে কথধা বলতেও দেখা গেল তাঁকে। অবশ্য দু’জনেই মাস্ক পরে ছিলেন। তবে শপথের পর সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় ভোট পরবর্তী হিংসা বন্ধ করার জন্য নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন করেন তিনি।
বুধবারের শপথ অনুষ্ঠানে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী, প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, কংগ্রেসের সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, সিপিএম-এর বর্ষীয়ান নেতা বিমান বসু, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বিজেপি নেতা মনোজ টিজ্ঞা প্রমুখকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। অসুস্থতার কারণে যেতে পারেননি বুদ্ধদেব। একমাত্র প্রদীপ ছাড়া আর কোনও বিরোধী নেতাকে দেখা যায়নি রাজভবনে। দিলীপ বলেছেন, ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকে যে ভাবে রাজ্যে বিজেপি কর্মীদের উপর অত্যাচার চলছে তার প্রতিবাদ স্বরূপ অনুষ্ঠানে যাননি তিনি। ঘটনাচক্রে, প্রায় একই সময়ে হেস্টিংসের কার্যালয়ে এই সঙ্কটসময়ে দলবদ্ধ হয়ে কাজ করার শপথ নিলেন বিজেপি বিধায়ক এবং নেতারা। দিলীপ ছিলেন সেখানেই। ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীও। শপথ বাক্য পাঠ করান দিলীপ। সবাই ডান হাত আগে বাড়িয়ে বলেন, ‘‘রাজ্যের মানুষের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসাবে এই রাজনৈতিক হিংসাকে নির্মূল করার জন্য সর্বতো ভাবে চেষ্টা করব।’’
মমতার শপথে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কেও। কিন্তু তাঁকে রাজভবনে দেখা যায়নি।
তবে তৃণমূলের শীর্ষনেতারা প্রায় সকলেই ছিলেন। অভিষেক, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত বক্সি, ভাবী স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিনেতা-সাংসদ শতাব্দী রায়, দেব প্রমুখ ছিলেন অনুষ্ঠানে। রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ প্রশাসনের অন্য আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন। অভিষেকের পাশের আসনেই ছিলেন ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। মমতা রাজভবনের থ্রোন রুমে পৌঁছনোর কিছুক্ষণ পর পৌঁছন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। মমতাকে বাংলায় শপথবাক্য পাঠ করান তিনি। তার পরে অভিষেক, পিকে-সহ তৃণমূলের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলেন। মমতার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা গেল রাজ্যপালের স্ত্রী-কে। অনুষ্ঠানের শেষ লগ্নে নতুন মুখ্যমন্ত্রীর সংক্ষিপ্ত বক্তৃতার ভোট-পরবর্তী হিংসার কথা বলেন রাজ্যপাল। মমতাকে ‘ছোট বোন’ বলে সম্বোধন করে রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আবেদন করেন তিনি।