বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছে বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবায় বোমায় জখমদের মধ্যে মৃত্যু হল এক জনের। মৃতের নাম শোভন দেবনাথ(৪০)। অই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন দু’জন। শুক্রবার রাতের দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমায় জখম হলেন ৬ জন। ঘটনাটি ঘটে গোসাবা থানার আরামপুর এলাকায়। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তাঁদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাঁদের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে শনিবার।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় আতঙ্ক যেমন ছড়িয়েছে, পাশাপাশি শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। বিজেপি-র দাবি, আহতরা সকলেই তাদের কর্মী। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই কর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। তবে বিজেপি-র তোলা এই অভিযোগকে অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তাদের দাবি, বিজেপি-র লোকজনই এলাকায় সন্ত্রাস ছড়াতে গোপনে বোমা বাঁধছিল। তা ফেটে যেতেই বিপত্তি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে আরামপুর এলাকায় বোমা বিস্ফোরণের বিকট শব্দ হয়। শব্দ শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে গিয়ে দেখেন এলাকার একটি পরিত্যক্ত ঘরে বিস্ফোরণ হয়েছে। সেখানেই জখম হয়ে পড়ে রয়েছেন ৬ জন। তড়িঘড়ি তাঁদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসে গোসাবা থানার পুলিশ। যে বাড়িটিতে বিস্ফোরণ হয়েছিল, তা চার দিক ঘিরে রেখে বম্ব স্কোয়াডে খবর দেওয়া হয়। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
এই ঘটনার পর থেকেই শাসক এবং বিরোধী দলের মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে চাপানউতর। স্থানীয় বিজেপি নেতা সঞ্জয়কুমার নায়েকের অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই বিজেপি কর্মীদের লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ে। তাঁর কথায়, “আসন্ন ভোটে তৃণমূল হারবে এটা বুঝতে পেরেই আমাদের দলের কর্মীদের উপর হামলা চালাচ্ছে ওরা। বিয়ে বাড়ি থেকে ফেরার পথে আমাদের কর্মীদের উপর বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। অভিযুক্তদের দ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।”
তৃণমূলের বিদায়ী বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর পাল্টা বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল-এর কোনও যোগ নেই। ভোটে সন্ত্রাস ছড়াতে বিজেপি-র লোকজন গোপনে বোমা বাঁধছিল। তখন বিস্ফোরণ হওয়ায় জখম হয়েছেন বেশ কয়েক জন। আগে তৃণমূল-এ ছিলেন চিত্ত প্রামাণিক নামে এক ব্যক্তি। তিনি বিজেপি-তে যোগ দিয়ে এই সব অসামাজিক কাজকর্ম শুরু করেছেন।”
অন্য দিকে, এই ঘটনার পিছনের জয়ন্তর হাত আছে বলে পাল্টা দাবি করেছে বিজেপি। দলের নেতা চিত্ত প্রামাণিক বলেন, “আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ করে কোনও লাভ নেই। এলাকার মানুষকে আর ধমকে বিশেষ লাভ হবে না তৃণমূল-এর। জয়ন্ত নস্করের মতো লোক নিজের হাতে ক্ষমতা ধরে রাখতে আর কতটা নীচে নামবেন, সেটাই ভাবছি। বোমা ছোড়ার ঘটনা তাঁরই মদতে হয়েছে।”