Firhad Hakim

Bengal Polls: হনুমান জয়ন্তীর শুভেচ্ছা ফিরহাদের, ‘মরণকালে বোধোদয়, তবে দেরি হয়ে গেল’: বিজেপি

ববি ঘনিষ্ঠদের দাবি, সব উৎসবেই নেটমাধ্যমে শুভেচ্ছাবার্তা দেন তিনি। সম্প্রতি রাজ্যবাসীকে রামনবমীর শুভেচ্ছাও জানান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২১ ১৮:০০
Share:

হনুমান জয়ন্তীর শুভেচ্ছা জানানোয় ফিরহাদকে কটাক্ষ সায়ন্তনের।

রাজ্যবাসীকে হনুমান জয়ন্তীর শুভেচ্ছা জানালেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় সারা দেশের সঙ্গে রাজ্যেও সংক্রমণ উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে। বাড়ছে দৈনিক মৃত্যুও। এমন পরিস্থিতিতে সকলের সুস্থতা কামনা করেছেন ববি। তবে বিরোধী বিজেপি-র দাবি, ভোটে পরাজয় নিশ্চিত জেনেই ববি হনুমান বন্দনায় মেতেছেন।

Advertisement

এমনিতে নেটমাধ্যমে তেমন সড়গড় নন ফিরহাদ। তাঁর বড় মেয়ে প্রিয়দর্শিনীই মূলত তাঁর নেটমাধ্যম পরিচালনা করেন। মঙ্গলবার তাঁর ফেসবুকেই হনুমান জয়ন্তীর শুভেচ্ছা জানানো হয়। সেখানে লেখা হয়, ‘হনুমান জয়ন্তীর শুভেচ্ছা রইল। ঈশ্বর আমাদের লড়াই করার শক্তি দিন। প্রত্যেকের সুস্বাস্থ্য কামনা করি’।

প্রসঙ্গত, ফিরহাদ ধরমে মুসলিম হলেও তিনি ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ আদর্শেই বিশ্বাসী। চেতলায় বৃহত্তম দুর্গাপুজোর যাবতীয় দায়দায়িত্ব একার হাতেই সামলান। আবার কলকাতা বন্দরের বিধায়ক হিসেবে ভূকৈলাস মন্দিরে রুদ্রাভিষেকেও অংশ নিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তবে ববির ঘনিষ্ঠদের দাবি, বিভিন্ন উৎসবেই তিনি জনতাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে থাকেন। হনুমান জয়ন্তীও তার ব্যতিক্রম নয়। একে ‘বাঁকা চোখে’ দেখা ঠিক হবে না। কারণ ফিরহাদের কেন্দ্রে ভোট হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। তাঁদের আরও দাবি, আগেও হনুমান জয়ন্তীর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ফিরহাদ। শুধু হনুমান জয়ন্তী নয়, রামনবমী, গণেশ চতুর্থী, রাসপূর্ণিমা, সরস্বতী পুজো— সব উৎসবেই নেটমাধ্যমে শুভেচ্ছাবার্তা জানান তিনি। নেটমাধ্যমে তাঁর অ্যাকাউন্টই ঘাঁটলেই তা স্পষ্ট হয়ে যাবে।

Advertisement

তবে এ সব নিয়ে নানা তির্যক মন্তব্যও শুনতে হয় ববিকে। হনুমান জয়ন্তীর শুভেচ্ছা জানানোর পরেও অন্যথা হয়নি। রাজ্য বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর কথায়, ‘‘ভোটে পরাজয় নিশ্চিত জেনেই উনি হনুমান বন্দনায় মেতেছেন।’’ মঙ্গলবার আনন্দবাজার ডিজিটালকে সায়ন্তন বলেন, ‘‘মরণকালে হরির নাম! বুঝতে পেরেছেন দিন শেষ। তার জন্য এখন রাম মনে আসবেন। হনুমান মনে আসবেন। দেবী দুর্গাও মনে আসবেন। এত দিন রামের নামে গালি দিয়ে এখন হনুমানকে আঁকড়ে ধরেছেন। এটা আমাদের জয়। যাক, চৈতন্য হয়েছে জেনে ভাল লাগল। তবে বড় দেরি করে ফেললেন। উনি জিতবেন না। জিতবেন না বাকিরাও। হার অবধারিত।’’

প্রসঙ্গত, নীলবাড়ির লড়াইয়ে গেরুয়া শিবিরই রাজ্যে তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ। দুই শিবিরই পরস্পরের বিরুদ্ধে ‘মেরুকরণের রাজনীতি’ করার অভিযোগ তুলেছে। এ বার ভোটের ফলাফলে ওই রাজনীতির প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের দাবি, সংখ্যালঘুদের একটি বড় অংশের সমর্থন তৃণমূলের পক্ষে যাবে। কিন্তু পাটিগণিতের হিসেবেই রাজ্যে মুসলিমরা সংখ্যালঘু। তাই তৃণমূলের নেতানেত্রীরা হিন্দু ভোটারদেরও মন জয় করতে চাইছেন। তাঁরা উদাহরণ দিচ্ছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যিনি নির্বাচনী প্রচারে কখনও চণ্ডীমন্ত্র বলছেন। কখনও অন্য নানা সংস্কৃত মন্ত্র বলছেন। গত কয়েক বছরে মুকুল রায়, শোভন চট্টোপাধ্যায়রা দল ছেড়ে চলে যাওয়ার পর তৃণমূলে ববিই মমতার অন্যতম ‘আস্থাভাজন’ নেতা বলে পরিচিত। হিন্দু ভোটের লক্ষ্যে তিনিও মমতার পথেই হাঁটছেন বলে দাবি বিরোধী শিবিরের। যদিও ববি-ঘনিষ্ঠরা সেই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, ববির কেন্দ্রে ভোট হয়ে গিয়েছে। ফলে তিনি রাজনৈতিক ফায়দা তোলার উদ্দেশ্যে হনুমান জয়ন্তীর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন— এই অভিযোগ হাস্যকর এবং অসার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement