বুথের ভিতরে গ্লাভস ফেলার জন্য রয়েছে ডাস্টবিন। তবু বুথের বাইরের রাস্তায় যত্রতত্র পড়ে রয়েছে ভোটারদের দেওয়া গ্লাভস। কসবা কেন্দ্রের তিলজলার একটি বুথের সামনে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
বরাবর কসবার ‘ফাঁদ’ তিলজলা। প্রতিবারই ভোটের দিন সেখানে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে অভিযোগ আর পাল্টা অভিযোগ শোনা যায়। হেরে যাওয়া প্রার্থী ওই এলাকা থেকে ‘ভোট লুটের’ অনুযোগ করেন। চতুর্থ দফায় কসবার ভোটও সরগরম রইল সেই তিলজলাকে ঘিরে। শহরের একমাত্র বোমা পড়ার অভিযোগও উঠল এই জায়গা থেকেই।
এ নিয়ে কসবার বিজেপি প্রার্থী ইন্দ্রনীল খাঁ বলেন, ‘‘শান্তিপূ্র্ণ ভাবে ভোট হচ্ছিল। হাওয়া খারাপ বুঝে মানুষকে ভয় দেখাতেই ওই এলাকায় বোমাবাজি করেছে তৃণমূল।’’ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সংযুক্ত মোর্চার সিপিএম প্রার্থী শতরূপ ঘোষেরও দাবি, ‘‘প্রতিবার ওখানে কারা ঝামেলা করেন, তা মানুষ জানেন। শান্তিপূর্ণ ভোটের যে স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল তা আসলে সোনার পাথরবাটি, সেটাই ফের প্রমাণ হল।’’ তৃণমূল প্রার্থী জাভেদ খানের অবশ্য দাবি, ‘‘সিপিএম আর বিজেপি দল বেঁধেছে। হাওয়া খারাপ দেখে ওরাই ওখানে বোমা মেরেছে।’’
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, এলাকা থমথমে। একটি আবাসনের ছাদ থেকে বোমাবাজি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন অনেকে। এক ব্যক্তির কথায়, ‘‘ভোট দিতে যাওয়া আটকাতেই এ দিনের বোমাবাজি। যে আবাসন ঘিরে এই ঘটনা, তার ভিতরেও পুলিশ মোতায়েত করা হয়েছে।
এর সঙ্গেই কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত গন্ডগোল হয়েছে। কয়েকটি ইভিএম বিকল হয়ে যাওয়ার খবরও ছিল। পাশাপাশি দিনের শুরুতেই বেশ কয়েকটি বুথে দলের এজেন্টদের বসতে না দেওয়ার অভিযোগ করেন বিজেপি প্রার্থী। এমনকি তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ ও আটকানোর অভিযোগে সকালেই ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের সিএন রায় রোড থেকে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তার পরে বুথে এজেন্ট বসাতে কার্যত তপসিয়ার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত দৌড়ে বেড়ালেন ইন্দ্রনীল। রাজডাঙার ১০৭ নম্বর বুথে গিয়ে মহিলাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন ওই প্রার্থী। তাঁকে ধাক্কা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এ নিয়ে কসবা থানায় গিয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ইন্দ্রনীল প্রশ্ন তোলেন।
সিপিএম প্রার্থী শতরূপ এ দিন সকাল থেকেই তপসিয়া এলাকার বিভিন্ন বুথ ঘুরে দেখেন। বেশ কয়েকটি বুথে জমায়েত দেখে পুলিশের সঙ্গে তর্কও জুড়ে দেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, বেশ কিছু বুথ জ্যাম করে ছাপ্পা ভোট দেওয়া হয়েছে।
তপসিয়া থেকেই দিনভর ভোটের উপরে নজর রেখেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী জাভেদ খান। সকালের দিকে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরলেও দুপুরে নিজের অফিসে বসেই ভোটে নজর রাখেন তিনি। বিকেলেও ৩৩ নম্বর তপসিয়া রোডে বোমাবাজির অভিযোগ করেন তৃণমূল প্রার্থী।
অভিযোগ যা-ই থাকুক, দিনের শেষে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী সব প্রার্থীই।