অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজেপি-র রথী-মহারথীদের বিরুদ্ধে হাত ধরাধরি করে লড়াইয়ে পিসি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গী হয়ে, প্রার্থী না হয়েও দলের জন্য বিপুল ‘জয়’ ছিনিয়ে আনলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যা ইঙ্গিতবাহীও বটে।
পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে দলের তরফে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তো বটেই, সেই সঙ্গে কেন্দ্রের প্রায় পুরো মন্ত্রিসভাকেই ভোটের ময়দানে নামিয়ে দিয়েছিল বিজেপি। সঙ্গে ছিলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারী ব্রিগেডও। উল্টো দিকে মমতা এবং অভিষেক।
ভোট প্রচারে নেমে দুর্নীতি ইস্যুতে অভিষেককেই নিশানা করেছিলেন বিজেপি-র নেতারা। একের পর এক বাক্যবাণে তাঁরা বিঁধেছেন অভিষেককে। বিজেপি নেতাদের মুখে ভাইপো ছিল অন্যতম উচ্চারণ। ঘটনাচক্রে এই ভোট পর্বেই অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কয়লা-কাণ্ডে নোটিস পাঠায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)-র। তাঁর বাড়িতেও পৌঁছে যান সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। ঘটনাচক্রে সেই ঘটনাপ্রবাহের স্রোত আছ়ড়ে পড়ে ভোটযুদ্ধে, অভিষেকের বিরুদ্ধেও। কিন্তু একের পর এক ‘চাপ’ সহ্য করে ঠান্ডা মাথায় ‘খেলা’ চালিয়ে গিয়েছেন ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ। যার ফল মিলেছে হাতেনাতে। অভিষেকের গড় দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩১টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে কেবলমাত্র ভাঙড় জয় করেছেন সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর নওশাদ সিদ্দিকি। বাকি ৩০টি আসনই গিয়েছে জোড়াফুল শিবিরের দখলে।
বঙ্গ-যুদ্ধের প্রতি পর্বে বিজেপি যেখানে একের পর এক তারকা প্রচারককে লড়াইয়ে নামিয়েছে। সেখানে তৃণমূলের প্রচারের মুখ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক। বস্তুত দলের তারকা প্রচারক ছিলেন তাঁরা দু’জনেই। মমতার মতোই উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ— রাজ্যের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ছুটে বেড়িয়েছেন অভিষেক। তৃণমূলের এই কৌশল যে বিজেপি-কে ধারে এবং ভারে টেক্কা দিয়েছে তা সামনে এল ফল ঘোষণা হতেই।
(এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির নাম ‘শান্তিকুঞ্জ’ লেখা হয়েছিল। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত।)