Mamata Banerjee

Bengal Polls: আহত হওয়ার আগে নন্দীগ্রাম সফরে অবিরাম ‘লাইভ’ মমতা, দেড় দিনে মোট ২০ বার

মঙ্গলবার বিকেলে নন্দীগ্রামে গিয়েছিলেন মমতা। প্রথমে কর্মিসভা করেন। বুধবার হলদিয়ায় মনোনয়ন পত্র জমা দেন। তারপর একের পর এক ধর্মস্থানে যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২১ ১৬:৫৫
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

দেড়দিনে ২০ বার! নন্দীগ্রামে আহত হওয়ার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ফেসবুক লাইভ’-এর সংখ্যা। এর মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশের মেয়াদ তিন, চার বা পাঁচ মিনিট। ধরে নেওয়া যেতে পারে গড়ে পাঁচ মিনিট।

Advertisement

এমনিতে নেটমাধ্যম ব্যবহারে বিজেপি এগিয়ে। এগিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু নন্দীগ্রামের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেশ করতে গিয়ে সেই ধারনাকে টলিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার থেকে শুরু করে বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত দেড় দিনে মোট ২০ বার ‘ফেসবুক লাইভ’ করেছেন তিনি। নেটমাধ্যমের হিসেব বলছে বুধবার বিকেল পর্যন্ত ২০ বার লাইভে এসে তিনি ৪০ লক্ষের উপর ‘ভিউজ’ পেয়েছেন। অর্থাৎ, ফেসবুকে তাঁর ওই ‘লাইভ’ দেখেছেন ৪০ লক্ষের উপর দর্শক।

মঙ্গলবার বিকেলে নন্দীগ্রামে গিয়েছিলেন মমতা। প্রথমে কর্মিসভা করেন। বুধবার হলদিয়ায় মনোনয়ন পত্র জমা দেন। মূল কর্মসূচি এই দু’টি হলেও ‘শাখা কর্মসূচি’ হিসেবে তিনি একের পর এক ধর্মস্থানে গিয়েছেন। পুজো দিয়েছেন একের পর এক মন্দিরে। আর প্রতিটি জায়গায় কর্মসূচিই মমতার ‘অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ’ থেকে ‘লাইভ’ অর্থাৎ, সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে।

Advertisement

মমতার প্রথম ফেসবুক ‘লাইভ’ ছিল মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে কর্মিসভায়। বেলা ৩টের সময়। সেই ‘লাইভ’ ‘ভিউজ’ পায় ১০ লক্ষের উপর। নন্দীগ্রামে বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন মমতা। মঙ্গলবার তার কাছাকাছি মঙ্গলবার সোনাচূড়ায় বাসুলি মন্দিরে পুজো দেন তিনি। যান তেখালির চণ্ডীমাতা মন্দিরে। পর পর তিনটি ফেসবুক ‘লাইভ’ করেন। সেখান থেকে যান নন্দীগ্রামের শহিদবেদীতে শ্রদ্ধা জানাতে। সেখানেও হয় ‘ফেসবুক লাইভ’। সেখান থেকে স্থানীয় পারুল মন্দির পরিদর্শনের পরে যান একটি মাজারে। ওই দু’জায়গা থেকেও ‘ফেসবুক লাইভ’ করেন মমতা।

সেখানেই শেষ হয়নি মমতার ‘লাইভ’ নন্দীগ্রাম সফর। অতীতে অনেকবার গৃহস্থ বাড়ির দাওয়ায় বসে চা খেতে দেখা গিয়েছে বিরোধী নেত্রী অথবা মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে। কয়েক বছর আগে প্রশাসনিক বৈঠকে গিয়ে দিঘার একটি চায়ের দোকানে নিজের হাতে চা বানিয়েছিলেন। এ বার নন্দীগ্রামের প্রার্থী হওয়ার পরে সেই ভূমিকায় ফের দেখা গিয়েছে মমতাকে। নন্দীগ্রাম বাজারে চায়ের দোকানে। চা বানিয়ে গ্রামবাসীদের তা বিতরণ করেন। আবার ফেসবুক লাইভ। এর পরে জানকীনাথ মন্দির দর্শন এবং সাংবাদিক বৈঠক। দু’টি ক্ষেত্রেই দু’বার ফেসবুক লাইভ। মঙ্গলবার সেটিই ছিল মমতার দশম ফেসবুক লাইভ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

মঙ্গলবারের লাইভ পর্ব সেখানেই শেষ। এক বেলায় ১০ বার। বুধবার সকালে মমতা গিয়েছিলেন স্থানীয় একটি শিবমন্দিরে পুজো দিতে। আবার ‘লাইভ’। এর পরে হলদিয়ায় পদযাত্রা, মনোনয়ন জমা এবং সাংবাদিক বৈঠক। দফায় দফায় ‘লাইভ’। এর কোনও কোনও ‘লাইভ’-এর সময় কম হলেও বারবার ফেসবুকে বাড়তে থাকে ‘ভিউজ’-এর সংখ্যা। নন্দীগ্রামের শিবরামপুর মন্দির, চালমারি মন্দির এবংআমদাবাদ দুর্গা মন্দির দর্শনে যান মমতা। প্রতিটি জায়গাতেই ফেসবুক ‘লাইভ’। বিকেল ৫টায় ফের মমতাকে ফেসবুক ‘লাইভে’ আসতে দেখা যায় শিবালয় মন্দির থেকে। এর পরে রানিচকগিরি বাজার এলাকায়। সেটি একটি মন্দিরে। আবার ‘লাইভ’।

মনে করা হয়েছিল বুধবার সন্ধ্যা, রাত এবং বৃহস্পতিবার দুপুরে কলকাতায় ফেরার আগে পর্যন্ত আরও কয়েকবার ‘লাইভ’ করবেন মমতা। কারণ, রাতে নন্দীগ্রামে থাকার কথা ছি তাঁর। কিন্তু সন্ধ্যায় পায়ে চোট পেয়ে কলকাতা ফিরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী।

অতঃপর বৃহস্পতিবার এসএসকেএম হাসপাতালের বেড থেকে আরও একটি ফেসবুক ‘লাইভ’ করেন মমতা। তবে সেটি মমতার ‘অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ’ থেকে নয়। সেটি তিনি করেছেন সর্বভারতীয় তৃণমুলের ফেসবুক পেজ থেকে। এক ঘন্টায় সেটির ‘ভিউজ’ তিন লক্ষ।

মঙ্গল ও বুধবার কেন এতবার ‘লাইভ’ করলেন মমতা? এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘শুধু নন্দীগ্রাম নয়, গোটা রাজ্যের সব আসনেই দিদি প্রার্থী। নেটমাধ্যমে রাজ্যের সর্বত্র কর্মী-সমর্থকরা তাঁর লড়াই দেখতে চায়।’’ একই মত রাজনৈতিক মহলেরও। নীলবাড়ির লড়াইয়ে তৃণমূলের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের আসন নন্দীগ্রাম। সেখানে নিজে প্রার্থী হয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের ‘বার্তা’ দিয়েছিলেন মমতা। সেই লড়াইয়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ সকলকে দেখিয়ে সকলের মনে ‘লাইভ’ থাকতে চেয়েছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement