দিলীপ ঘোষ এবং নরেন্দ্র মোদী।
শনিবার রাজ্যে চতুর্থ দফার ভোটের দিনে রাজ্যে জোড়া সভা করার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। তার প্রথমটি শিলিগুড়িতে। সেই সভায় বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে পাশে চান মোদী। শুক্রবার বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন উত্তরবঙ্গ সফররত থাকা দিলীপের মোদীর সমাবেশ থাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে মোদীর ইচ্ছাতেই। সূত্রের খবর, কোচবিহারের শীতলকুচিতে দিলীপের উপরে হামলার পরেই এই সিদ্ধান্ত।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় ব্রিগেড সমাবেশে রাজ্য স্তরের প্রায় সব নেতাই মোদীর মঞ্চে হাজির ছিলেন। কিন্তু এর পরেই নীতি বদল করেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ঠিক হয় মোদী, অমিত শাহ, জেপি নড্ডারা রাজ্য জুড়ে সমাবেশ করলেও সেখানে ডাক না পেলে রাজ্য নেতাদের উপস্থিত থাকতে হবে না। সেই সময়ে তাঁরা নিজের নিজের বিধানসভায় বা তাঁদের দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকায় নিজেদের মতো সভা করবেন। ভোটগ্রহণ পর্ব শুরু হওয়ার আগে থেকেই এই নীতিতেই প্রচার চলছে পদ্মশিবিরের। ইতিমধ্যেই সেই নীতিতেই মোদী-শাহ-নড্ডারা দু’ডজনের বেশি সমাবেশ করে ফেলেছেন।
ব্যতিক্রম শুধু মোদীর খড়্গপুরের সমাবেশে। দলের তারকা প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের প্রচারে ২০ মার্চ খড়্গপুরে সভা করেছিলেন মোদী। ওই কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক তথা স্থানীয় মেদিনীপুর লোকসভা আসনের সাংসদ দিলীপও ডাক পেয়েছিলেন সেই সভায়। সে দিন মোদী দিলীপকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘আমার গর্ব হয় যে, আমাদের দলে দিলীপ ঘোষের মতো একজন সভাপতি রয়েছেন। দলকে জেতানোর জন্য গত কয়েক বছরে দিলীপ ঘোষ শান্তিতে ঘুমোননি। দিদির ধমকেও ভয় পাননি। ওঁর উপর অনেক হামলা হয়েছে। ওঁকে মেরে ফেলার চেষ্টাও হয়েছে। কিন্তু বাংলার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পণ নিয়ে উনি এগিয়ে গিয়েছেন। আর তার ফলেই বাংলায় নতুন শক্তি তৈরি হয়েছে।’’
ওই দিন মোদী দিলীপের উপরে বারবার হামলার কথা উল্লেখ করেছিলেন। এটা ঠিক যে, গত কয়েকবছরে বহুবার হামলার মুখে পড়েছেন দিলীপ। তবে নীলবাড়ির লড়াই পর্বে বুধবার প্রথম বড়মাপের হামলা হয়েছে তাঁর উপর। বিজেপি-র অভিযোগ অনুযায়ী, বুধবার কোচবিহারের শীতলকুচি পঞ্চায়েত সমিতির মাঠে সভা শেষে ফেরার পথে তৃণমূল কর্মীদের একাংশ হামলা চালায় দিলীপের গাড়িতে। সেই সঙ্গে তাঁর কনভয়ের আরও কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। দিলীপ হাতে চোট পান। এ ছাড়াও কয়েক জন বিজেপি কর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের।
ঘটনাচক্রে, বুধবার থেকেই উত্তরবঙ্গে রয়েছেন দিলীপ। শুক্রবারও জলপাইগুড়ি জেলায় বেশ কয়েকটি কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, মোদীর সভায় উপস্থিত থাকার জন্য শুক্রবার রাতেই শিলিগুড়ি পৌঁছে যাবেন তিনি। শনিবের দুপুরে সভা মোদীর। সেই সভায় যোগ দিয়ে কলকাতায় ফিরবেন দিলীপ। মোদীর সভায় ডাক-পাওয়া প্রসঙ্গে দিলীপ কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও বিজেপি শিবিরের অনেকেই মনে করছেন, এর আগে অতীতে দিলীপের উপরে হামলার কথা উল্লেখ করেছেন মোদী। শনিবার প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে শীতলকুচিতে সদ্য ঘটে যাওয়া হামলার কথা থাকতে পারে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি-র নেতা-কর্মীদের উপরে হামলা চলছে বলে অভিযোগ তুলেছে পদ্মশিবির। বৃহস্পতিবারেও হাওড়ায় দলের প্রার্থী রন্তিদেব সেনগুপ্ত এবং ভবানীপুরে রুদ্রনীল ঘওষ আক্রান্ত হয়েছেন। শনিবার দিলীপকে পাশে রেখে সেই অভিযোগকে তীব্রতর করতে পারেন মোদী।