মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নরেন্দ্র মোদী।
নন্দীগ্রাম ছাড়াও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য কোনও আসন থেকে লড়বেন কি! সেই প্রসঙ্গে ফের আক্রমণাত্মক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ বার টেনে আনলেন মমতার বারাণসী থেকে ভোটে লড়ার সম্ভাবনার প্রসঙ্গ। নীলবাড়ারি লড়াইয়ে মমতার দ্বিতীয় আসন নিয়ে আলোচনার মধ্যেই টুইট করে মোদীকে কটাক্ষ করে নিজের আসন বারাণসী নিয়ে ভাবতে বলে তৃণমূল। শনিবার রাজ্যে প্রচারে এসে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরে মোদী সেই প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘দিদির পার্টি বলছে, দিদি বারাণসী থেকে লোকসভায় লড়বেন। এতে দুটো কথা স্পষ্ট। দিদি বাংলায় নিজের হার স্বীকার করে নিয়েছেন। তাই বাইরে যাওয়ার কথা ভাবছেন। দিদি এখন বাংলার বাইরে নিজের জন্য জায়গা খুঁজছেন।’’
দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের দিন রাজ্যে প্রচারে এসে মোদী বলেছিলেন, ‘‘নন্দীগ্রামের অবস্থা দেখেই স্পষ্ট, দিদি হারছেন।’’ সঙ্গে আরও এক প্রসঙ্গ তুলে কটাক্ষ করেছিলেন মোদী— ‘‘দিদি কি এ বার অন্য কোনও আসনে লড়বেন?’’ এর পরে পরেই তৃণমূলের তরফে মোদীর এই বক্তব্যকে নাকচ করে দেওয়া হয়। শনিবার মোদী বলেন, ‘‘ভালই। বিধানসভায় হেরে লোকসভায় অবশ্যই যান। একটা কথা কানে কানে বলি শুনে রাখুন, আমার বারাণসী, কাশী এবং উত্তরপ্রদেশের মানুষ এত বড় মনের যে ওঁরা আপনাকে ‘বহিরাগত’, ‘পর্যটক’ বলবেন না। বাংলার মানুষের মতোই বড় মন ওঁদের।’’ এখানেই থামেননি মোদী। মমতার উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, ‘‘ওখানে তিলক কাটা লোক অনেক মিলবে, টিকিধারী লোক দেখতে পাবেন। এখানে ‘জয় শ্রীরাম’ শুনে তো আপনি চটে যান। আর ওখানে গেলে দু’মিনিট অন্তর ‘হর হর মহাদেব’ শুনবেন। তখন কী করবেন? কার উপর রাগ দেখাবেন?’’ সেই সঙ্গে মোদীর খোঁচা, ‘‘দিদি, আপনার প্রতি আমার প্রার্থনা, দয়াকরে বারাণসী, উত্তরপ্রদেশের মানুষের উপর রাগ করবেন না। ওখানকার মানুষ আমাকে অনেক ভালবাসা দিয়েছেন। ওঁরা আপনাকেও ভালবাসা দেবেন। ওখানেই রেখে দেবেন। দিল্লিও যেতে দেবেন না।’’
গত বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রামে যে দিন ভোট ছিল, সেই দিন মথুরাপুরে সভা করেছিলেন মোদী। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘বাংলা যা চাইছে সেটাই হয়েছে নন্দীগ্রামে। দিদি, প্রথমে ভবানীপুর ছেড়ে নন্দীগ্রামে গিয়েছিলেন। পরে বুঝলেন সেটা ভুল করেছি।’’ শনিবার ওই জেলারই সোনারপুর থেকে মোদী বললেন, ‘‘শুনলাম তৃণমূলে যে সব বিচক্ষণ লোকেরা রয়েছেন, তাঁরা সকলেই দিদির নন্দীগ্রাম যাওয়ার সমালোচনা করছেন। বলছেন, নন্দীগ্রাম গিয়ে ভুল করেছেন দিদি। আমি জানতে পারলাম, নন্দীগ্রামে হারছেন বুঝে তৃণমূলের লোকজন ঠিক করে ফেলেছিলেন মমতাদিদিকে অন্য আসনে নামানো হোক। কিন্তু অনেকে আবার বুঝিয়েছেন যে, সেটা আরও ভুল হবে। কারণ দুটো আসনে হারলে তৃণমূলের পরবর্তী রাজনৈতিক যাত্রা আরও কঠিন হয়ে যাবে।’’