প্রতীকী ছবি।
অভিযোগ এল বুথে বা ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের বাইরে গোলমাল হচ্ছে। যা শুনে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লালবাজারে রিপোর্ট পাঠান পুলিশকর্মীরা। এ বার রিপোর্টের সঙ্গে পাঠাতে হবে ঘটনাস্থলের ছবিও। কলকাতায় তৃতীয় দফার ভোটের আগে এমনই নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার।
আগামী সোমবার কলকাতা পুলিশ এলাকার ২৬টি থানার অধীন চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। ওই চার কেন্দ্র হল বালিগঞ্জ, রাসবিহারী, ভবানীপুর এবং কলকাতা বন্দর। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের মোট সংখ্যা ৪২৮ এবং বুথের সংখ্যা ১২৫৪। লালবাজার সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ওই ২৬টি থানার ওসি-সহ বাহিনীর শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র। সেখানে পুলিশকর্তাদের তরফে বাহিনীকে বলা হয়েছে, অভিযোগ পেয়ে সেখানে পৌঁছেই ছবি তুলে লালবাজার কন্ট্রোল রুমে পাঠাতে হবে। কারণ, পুলিশকর্তাদের মতে, বিভিন্ন বুথ এবং ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের বাইরে কিংবা এলাকা থেকে অনিয়মের খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছে অনেক সময়েই দেখে, অভিযোগ ভিত্তিহীন। অথচ
অভিযোগ ওঠে, পুলিশকে খবর দেওয়া সত্ত্বেও সেখানে বাহিনী পৌঁছয়নি। তাই এ বার থেকে ভোটের দিন গোলমালের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে কী পরিস্থিতি দেখল, সেই ছবি তুলে পাঠাতে হবে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশবাহিনী যে রিপোর্ট লালবাজারকে পাঠাবে, তার সঙ্গে ওই ছবিও দিতে হবে। যা পরে নির্বাচন কমিশনকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। বাহিনীর ভুমিকা নিয়ে কোনও প্রশ্ন যাতে না ওঠে, তাই এই পদক্ষেপ বলে মনে করছেন পুলিশ আধিকারিকেরা।
লালবাজার সূত্রের খবর, আগের দফাগুলির মতো ওই ভোটপর্বও শান্তিপূর্ণ এবং নিরপেক্ষ করতে বাহিনীকে ফের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। এ দিনের বৈঠকে সিপি গত দু’দফার (৬ এপ্রিল ও ১০ এপ্রিল) ভোটের মতোই আধিকারিকদের নির্বাচনী বিধি মেনে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। ওই দিন তাঁদের রাস্তায় থেকে নজরদারি চালানোর জন্যও বলা হয়েছে। ভোট চলাকালীন সর্বদা যাতে তাঁরা পথেই থাকেন সেই নির্দেশও দিয়েছেন সিপি। শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট করাতে যা যা করণীয়, তার সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে দাবি লালবাজারের। দাগি অপরাধী বা ভোটে গোলমাল পাকাতে পারে, এমন দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে আগেই বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
আগের দিন থেকে ভোটগ্রহণ পর্যন্ত কুইক রেসপন্স টিমকে (কিউআরটি) যাতে ঠিক মতো ব্যবহার করা হয়, এ দিনের বৈঠকে পুলিশকর্তাদের সে দিকেও নজর রাখতে বলা হয়েছে। ওই টিমে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি থাকবেন কলকাতা পুলিশের এক জন অফিসার। পুলিশের একটি সূত্রের মতে, কোথাও গোলমাল হলে কিউআরটি দ্রুত যাতে সেখানে পৌঁছতে পারে, তাই ওই নির্দেশ।
শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট করানো এবং করোনার থেকে বাহিনীর সদস্যদের রক্ষা করা― এই দুটোই এই মুহূর্তে সমান গুরুত্বপূর্ণ কলকাতা পুলিশের কর্তাদের কাছে। তাই সকলকে করোনা-বিধি মেনে সতর্কতার সঙ্গে ভোটের ডিউটি করতে বার বার বৈঠকে বলা হয়েছে।
ভোটের দিন রাস্তায় ঘুরে ডিউটি করা পুলিশকর্মীদের জন্যই ১২টি ভ্রাম্যমাণ ক্যান্টিন বিভিন্ন এলাকায় ঘুরবে। যাতে কর্তব্যরত অবস্থায় খাওয়ার সমস্যা না হয়, তাই লালবাজারের এই সিদ্ধান্ত।