প্রতীকী ছবি।
পুরনো নাম বাদ। ঢুকল নতুন মুখ। কেন্দ্র বদল হল জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের। তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় রীতিমতো চমক উত্তর দিনাজপুরে।
গত বারের দুই বিধায়ক অমল আচার্য এবং মনোদেব সিংহকে আর এ বার বিধানসভায় টিকিট দিচ্ছে না তৃণমূল। শুক্রবার দুপুরে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন অমল আচার্যের তালুক ইটাহারে মোশারফ হোসেন এবং করণদিঘিতে মনোদেবের পরিবর্তে দলের যুব নেতা গৌতম পালের নাম ঘোষণা করেন, তখন থেকেই গুঞ্জন শুরু হয়। দলেরই অন্দরের খবর, ইটাহারের বিদায়ী বিধায়ক এবং করণদিঘির বিধায়কের রিপোর্ট ভাল নয় বলে পিকের টিম এলাকা ঘুরে তথ্য পায়। অমলবাবুকে এ বার ভোটে প্রার্থী করলে ওই আসন ধরে রাখা শক্ত হবে বলে দলের কাছে রিপোর্ট যায়। দুই নেতার জনসংযোগ নিয়েও দলের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল। অন্য দিকে ইটাহার বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় ৫২ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে। সেই সব ভেবেই এ বার তরুণ নেতা মোশারফ হোসেনকে টিকিট দিয়েছে দল। মোশারফ বর্তমানে উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের কৃষি কমার্ধ্যক্ষও।
রায়গঞ্জ আসনটিতে কাকে প্রার্থী করা হবে, তা নিয়েও চর্চা চলছিল। সেখানে দলের জেলা সভাপতি তথা এক সময় ইসলামপুরের বিধায়ক কানাইয়ালাল আগরওয়ালকে টিকিট দিয়েছে দল। রায়গঞ্জের স্থানীয় কাউকে প্রার্থী না-করায় দলের মধ্যে কিছু অসন্তোষ থাকলেও তা মিটে যাবে বলেই মনে করেন জেলা সভাপতি। তিনি বলেন, ‘‘পুরনো, নতুন মিলিয়েই প্রার্থী হয়েছে। সব আসনেই লড়াই হবে।’’ অমলবাবুকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তাঁর ফোন যিনি ধরেছিলেন, তাঁর কথায়, ‘‘মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাঁর প্রতিক্রিয়া তিনি সময় মতো জানাবেন।’’ মনোদেববাবুর ফোনে বেজে গিয়েছে।
জেলার ৯টি আসনে পুরনো নেতাদের একাংশের উপরে ভরসা রেখেছে দল। আবার কিছু আসনে নতুন মুখ আনা হয়েছে। চোপড়ায় তিনবারের বিধায়ক হামিদুল রহমানকে প্রার্থী করা হয়েছে। ইসলামপুরে এ বারেও বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরীর উপরেই ভরসা রেখে তাঁকে প্রার্থী করেছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। গোয়ালপোখরের প্রার্থী করা হয়েছে দু’বারের বিধায়ক তথা বিদায়ী মন্ত্রী গোলাম রব্বানিকে। কালিয়াগঞ্জের প্রার্থী হিসেবে দলের বিধায়ক তথা কালিয়াগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি তপন দেবসিংহের উপরেই ভরসা রেখেছে দল। চাকুলিয়া, করণদিঘি, হেমতাবাদ ও ইটাহার আসনে দলের তরুণ নেতাদের প্রার্থী করা হয়েছে। চাকুলিয়ায় প্রার্থী জেলা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য মিনহাজুল আরফিন আজাদ। ওই আসনে আরও একাধিক নেতা প্রার্থী পদের দাবিদার ছিলেন। তা নিয়ে দলের মধ্যেও দ্বন্দ্ব রয়েছে। হেমতাবাদে প্রার্থী করা হয়েছে রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সত্যজিৎ বর্মণকে।
কানাইয়া প্রার্থী হচ্ছে আঁচ করে এ দিন সকালে রায়গঞ্জে দলের জেলা কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখান সংশ্লিষ্ট পুরসভার তৃণমূলের উপপুরপ্রধান অরিন্দম সরকারের অনুগামীরা। তাঁরা ইসলামপুরের বাসিন্দা কানাইয়াকে ‘বহিরাগত’ তকমা দিয়ে তাঁর বদলে অরিন্দমকে রায়গঞ্জ থেকে প্রার্থী করার দাবি তোলেন। অরিন্দম বলেন, “রায়গঞ্জের দলের বহু নেতা ও কর্মী আমাকে প্রার্থী হিসেবে চেয়েছিলেন।” অসন্তোষ থাকলেও তা সকলে মিলে বসে মিটিয়ে সকলে মিলে লড়াইতে সামিল হবে বলেই আশাবাদী কানাইয়া।
(সহ-প্রতিবেদন: মেহেদি হেদায়েতুল্লা এবং অভিজিৎ পাল)