অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
দেশে করোনার গ্রাফ উর্ধ্বমুখী। অথচ কেন্দ্রীয় সরকার দেশে উৎপাদিত টিকার মধ্যে ১ কোটি রেখে বাকি ১০ কোটি বিদেশে পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ করলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী নবীনচন্দ্র বাগের সমর্থনে আয়োজিত নির্বাচনী সভায় তিনি বলেন, ‘‘করোনার টিকা আমেরিকা, নেপাল,পাকিস্তান, বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে। অথচ দেশের লোক টিকা পাচ্ছে না।’’ ১৩০ কোটি ভারতবাসীর প্রতি নরেন্দ্র মোদী সরকার বঞ্চনা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
খণ্ডঘোষের সালুনে আয়োজিত সভায় নরেন্দ্র মোদী সরকারের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকেও নিশানা করেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘তামিলনাড়ু, কেরলে একদফায় ভোট হচ্ছে। অথচ একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের জন্য ৮ দফায় নির্বাচন হচ্ছে বাংলায়।’’ পাশাপাশি তাঁর দাবি, প্রথম চার দফার ভোটে বিজেপি-র মাজা, কোমর ভাঙা হয়েছে। পঞ্চম থেকে অষ্টম দফার ভোটে ঘাড়, মাথা ভাঙতে হবে।
মমতাকে আটকানোর জন্য কমিশনের তরফে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে অভিযোগ তুলে অভিষেক বলেন, ‘‘আগে পা ভাঙা হল। তারপর বিভিন্ন এজেন্সি দিয়ে ধমকানো-চমকানো হল। অমিত শাহ বলছেন, ২০০ পার। তা হলে এখনও কেন প্রতিদিনই বাংলায় ডেলি প্যাসেঞ্জারি করতে হচ্ছে? মোদী ২০১৪ সালে বলেছিলেন, ‘অচ্ছে দিন আসছে’। কিন্তু হয়নি। নোটবন্দি করেছে। কিন্তু কালো টাকা ধ্বংস হয়নি। প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতিশ্রুতি রাখননি।’’
কোচবিহারের শীতলখুচির ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘‘চার জনকে গুলি করে মারল কেন্দ্রীয় বাহিনী। বুলেটের জবাব ব্যালটের মাধ্যমে দিতে হবে। এই মাটি উত্তরপ্রদেশের মাটি নয়। বাংলার মাটি।’’
তৃণমূল সরকারের সাফল্য তুলে ধরতে গিয়ে অভিষেক মঙ্গলবার বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে কেউ বাদ নেই। স্কুলে স্কুলে ট্যাব দেওয়া হয়েছে। ১০ কোটি মানুষকে খাদ্যসাথীর আওতায় আনা হয়েছে।’’ তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তাহারের ১০ অঙ্গীকারের প্রসঙ্গ তুলে অভিষেক বলেন, ‘‘আমাদের রাজ্যে অনেক ভালো ছাত্র আছে। তারা টাকাপয়সার অভাবে পড়াশোনা ঠিক মত করতে পারে না। তাই ১০ লক্ষ টাকার ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’ দেওয়া হবে। আমরা ক্ষমতায় ফিরলে রাজ্যের ১ কোটি সাত লক্ষ পরিবারের গৃহকর্ত্রীর হাতে ৫০০ টাকা দেওয়া হবে প্রতি মাসে। বাড়িতে গিয়ে সরকার রেশন দেবে। আর লাইনে দাঁড়িয়ে রেশন নিতে হবে না।’’
অভিষেকের বক্তব্য প্রসঙ্গে পূর্ব বর্ধমান জেলা বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক শ্যামল রায় বলেন, ‘‘এখন বলা হচ্ছে বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে দেওয়া হবে। শুধুমাত্র পূর্ব জেলাতেই বহু মানুষের রেশন কার্ড নেই। আগে সকলের বাড়িতে রেশন কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করুক। ২ মের পর তৃণমূলকে আর রাজ্যে খুঁজে পাওয়া যাবে না।’’ করোনা টিকা নিয়ে অভিষেকের মন্তব্য প্রসঙ্গে তাঁর অভিযোগ, অভিষেক না জেনে আলটপকা মন্তব্য করছেন। বাংলায় করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে। গোটা দেশেই বিনামূল্যে টিকাকরণের প্রক্রিয়া চলছে জোরকদমে। টিকার আকাল নেই। পর্যাপ্ত পরিমাণে কোভিড ভ্যাকসিন মজুত রয়েছে।