আহত বিজেপি কর্মী সুভাষ রায়। নিজস্ব চিত্র।
‘জয় শ্রী রাম’ বলায় এক বিজেপি কর্মীর কান স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা কেটে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। এই ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছে জলপাইগুড়িতে। আহত বিজেপি কর্মীর নাম সুভাষ রায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনি জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। অভিযোগ, ওই কর্মীকে আঘাত করা ছাড়াও ভাঙচুর করা হয়েছে বিজেপি-র কার্যালয়। ঘটনাস্থলে রয়েছে কোতোয়ালি থানার বিশাল বাহিনী। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী নীরদ রায়-সহ ১০ জন স্থানীয় তৃণমূলকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে বিজেপি। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বিজেপি-র অভিযোগ, সোমবার সন্ধ্যায় পাদ্রিকুটি বাজারের দলীয় কার্যালয়ে দোল উৎসব পালন করা হচ্ছিল। সেখানেই এক পরিচিতের কপালে আবির মাখিয়ে দেন বিজেপি কর্মী সুভাষ রায়। তার পর ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি দেন। এই ধ্বনিতেই ঘটে বিপত্তি। ওই ব্যক্তি তৃণমূলের কর্মী হওয়ায় তার সঙ্গে বিবাদ বাধে সুভাষের। অভিযোগ, এর কিছু সময় পরে স্থানীয় গ্রামপঞ্চায়েত সদস্যা মমতা রায়ের স্বামী নীরদ প্রায় ১৫০ জন তৃণমূলকর্মী নিয়ে জড়ো হন সেখানে। বিজেপি-র ওই কার্যালয়েও ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়৷ তখনই ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সুভাষের কানের একটা অংশ কেটে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি সুভাষের মাথাতেও লাগে আঘাত। সুভাষ ছাড়াও আরও দুই বিজেপি কর্মীকে ব্যাপক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এ নিয়ে বিজেপি-র জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সহ-সভাপতি অলোক চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘আমাদের কর্মীরা দোল খেলছিলেন। তাঁদের উপর কৃষ্ণ দাস দলবল নিয়ে হামলা চালায়। নীরদ কৃষ্ণের অনুগামী। আমদের কর্মীরা দশ জনকে চিনতে পেরেছে। তাঁদের নামে অভিযোগ দায়ের করেছি। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার না করলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।’’
খবর পেয়ে ঘটনারস্থলে যায় বিশাল পুলিশবাহিনী। কোতয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার ও ডিএসপি হেডকোয়ার্টার সমীর পালের নেতৃত্বাধীন পুলিশ বাহিনী ঘিরে রাখে এলাকা। আহত বিজেপি কর্মী সুভাষকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। অভিযুক্ত নীরদের খোঁজে তাঁর বাড়িতেও হানা দিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু তাঁকে পাওয়া যায়নি। যদিও এই ঘটনায় এখনও অবধি ৪ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত নীরদ এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ দাসের অনুগামী। কৃষ্ণের নির্দেশেই এই হামলা চালানো হয়েছে বলে বিজেপি-র অভিযোগ। যদিও তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ গোটা ঘটনা অস্বীকার করেছেন। তৃণমূল নেতা প্রধান হেমব্রমের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেছেন, ‘‘দোলের দিন আমি বা কৃষ্ণ কেউ বাইরে বেরোই না। নিজেরাই মদ খেয়ে মারামারি করে পার্টি অফিস ভেঙেছে ওরা। আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করছে।’’