নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মুখ’ দেখেই যেন ব্রিগেড সমাবেশ শুরু করতে হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। এমনটাই চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। আগামী ৭ মার্চ রবিবার ব্রিগেডে মোদীর জনসভা। তার আগে গোটা শহর মমতার পোস্টার, ফেস্টুন এবং তৃণমূলের পতাকায় মুড়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। লক্ষ্য, বিমানবন্দর-ব্রিগেড যাত্রাপথে মোদীর যেন বুঝতে অসুবিধা না হয়, ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’।
বাংলার নির্বাচনকে মাথায় রেখে বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে বৈঠকে বসেছিলেন দলের শীর্য নেতৃত্ব। সেখানে ছিলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী এবং ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। ভোটের আগে দলের রণকৌশল ঠিক করাই ছিল বৈঠকের প্রধান আলোচ্য বিষয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর ব্রিগেড সমাবেশের কথাও ওঠে বলে দলীয় সূত্রে খবর। বৈঠকে তৃণমূল নেতৃত্ব স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতারা শহরে আসছেন। তাঁদের যেন মনে না হয়, তৃণমূল পিছিয়ে আছে। প্রধানমন্ত্রীর ব্রিগেড সমাবেশের আগে গোটা শহর ‘বাংলা নিজের মেয়েকে চায় পোস্টারে’ মুড়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। মোদীর সভার আগে তৃণমূলের পতাকা-ফেস্টুনে ছেয়ে ফেলতে হবে গোটা শহর— এমন নির্দেশও দেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।
ভোটপ্রচারকে এ বার একটা সুরে বাঁধতে চাইছে তৃণমূল। যথেচ্ছ প্রচার নয়, তৃণমূল চাইছে ব্যানার-ফেস্টুনে সামঞ্জস্য রাখতে। মোট ১২টি ব্যানারের একটি ডিভিডি সোমবার দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুরসভার বিদায়ী কাউন্সিলরদের হাতে। সেই ব্যানার দিয়ে কী ভাবে প্রতি ওয়ার্ডে প্রচার চালাতে হবে, তা-ও বলা হয়েছে। প্রত্যেক ওয়ার্ডে ১ হাজার দলীয় পতাকা এবং ১ হাজার ব্যানার দিয়ে প্রচার করতে হবে। ডিভিডি থেকেই বানাতে হবে ব্যানার। এ ছাড়া পুরভোটে যেমন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করেন, ঠিক সে ভাবেই বিধানসভা ভোটের জন্যও প্রার্থীর হয়ে বাড়ি বাড়ি যেতে বলা হয়েছে কাউন্সিলরদের। ভোটারদের হাতে তুলে দিতে হবে রিপোর্ট কার্ডও। তবে প্রচারের কাজে নামার আগে তৃণমূলের ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটরদের আত্মসমীক্ষা করার কথা বলা হয়েছে দলীয় বৈঠকে। বলা হয়েছে, এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচন। প্রত্যেক জায়গায় প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে জেতাতে হবেই। সেটা মাথায় রেখে পরিশ্রম করার নির্দেশে দেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর।
শুক্রবার প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করবে তৃণমূল। এ বারের প্রার্থিতালিকায় পুরনো অনেক মুখকেই বাদ দেওয়া হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। এ নিয়ে দলের অন্দরে অসন্তোষের খবর মিলছিল। তেমন অসন্তোষ যাতে বড় আকার না নেয়, তা নিশ্চিত করতে তৃণমূল নেতৃত্ব বৃহস্পতিবারের বৈঠকে হুইপ জারি করেছে। বলা হয়েছে, দল যাঁকে প্রার্থী করবে তাঁকেই মেনে নিতে হবে। কারণ, প্রার্থী দলনেত্রী নিজেই ঠিক করেছেন। এ নিয়ে কোনও ক্ষোভ বিক্ষোভের জায়গা নেই। তালিকা মেনে নিয়েই চলতে হবে। প্রার্থিতালিকা পেলেই প্রচারে নেমে পড়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।