হামলার অভিযোগ, মারধর, বোমাবাজি
West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: উত্তপ্ত হাবড়া-অশোকনগর

তৃণমূল ও বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মারপিট হয়। অভিযোগ, এক তৃণমূল কর্মীকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপ মারা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাবড়া শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২১ ০৫:২২
Share:

ভাঙচুর: বাণীপুরে বিজেপির কার্যালয়। ছবি: সুজিত দুয়ারি

কোথাও বাড়িতে হামলা চালিয়ে মারধর ভাঙচুর। কোথাও বোমাবাজি সংঘর্ষের ঘটনা। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত একের পর এক ঘটনায় আতঙ্কিত মানুষ।

Advertisement

অশোকনগর বিধানসভার দিঘরা এলাকায় সোমবার রাতে বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ওই ঘটনায় জড়িত। তৃণমূল ও বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মারপিট হয়। অভিযোগ, এক তৃণমূল কর্মীকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপ মারা হয়েছে। তাঁর পায়ের শিরা কেটে গিয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে।

হাবড়ার বাণীপুর এলাকায় সোমবার রাতে বিজেপি নেতা তথা শিক্ষক শুভঙ্কর হালদারের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শূন্যে গুলি চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। শুভঙ্কর বাড়িছাড়া। তিনি বলেন, ‘‘হামলার সময়ে বাবাকে নিয়ে পিছনের দরজা দিয়ে কোনও ভাবে পালিয়ে প্রাণে বেঁচেছি। পুলিশের কাছে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই।’’ বাণীপুর এলাকায় বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয় এবং কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। অনেকে ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছেন।

Advertisement

মঙ্গলবার দুপুরে অশোকনগরের খোশদেলপুর এলাকায় তৃণমূল-আইএসএফ সংঘর্ষ হয়। বাড়িঘর ভাঙচুর, মারপিটের ঘটনা হয়। প্রতিবাদে যশোর রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। তাদের এক জখম কর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। অশোকনগরের বালিয়াডাঙা এবং সহরা এলাকায় তৃণমূল-আইএসএফ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

হাবড়ার পুরপ্রশাসক তথা তৃণমূল নেতা নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘এখানে কোনও রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ঘটেনি। শান্ত পরিবেশ। হাবড়ায় বিজেপি সব ক’টি মিথ্যে অভিযোগ করছে। ভোটে হেরে মানুষের সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করছে।’’

রবিবার রাতে আমডাঙা বিধানসভার দত্তপুকরের জিরাট ঘোষপাড়া এলাকায় বিজেপি কর্মী তন্ময় ঘোষের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তৃণমূলের লোকজন ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। তন্ময়কে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। তন্ময়ের বাবা করোনা আক্রান্ত। তিনি বাড়িতে চিকিৎসাধীন। ওই ঘটনায় তন্ময়ের মা কল্পনা ঘোষ (৪২) অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরিবারের দাবি, কল্পনা ঘোষের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাঁকে বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার রাতে তিনি মারা যান। এ নিয়ে অবশ্য থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।

আমডাঙার জয়ী তৃণমূল প্রার্থী রফিকুর রহমান বলেন, ‘‘আমডাঙা বিধানসভা এলাকায় তৃণমূল কোথাও কোনও গোলমালে যুক্ত নয়। মৃত্যু নিয়ে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে।’’

জেলা জুড়ে গোলমাল, মারপিট, সংর্ঘষ, ভাঙচুর, বোমাবাজির ঘটনা নিয়ে জেলা সিপিএম সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মুখে কর্মীদের বলছেন (মুখ্যমন্ত্রী) কোভিড পরিস্থিতিতে মোকাবিলা করতে নেমে পড়ুন। আর পিছনে ভয়-ভীতি-সন্ত্রাস করে বিরোধীরা যাতে মাথা তুলতে না পারেন, সেই কাজ করছেন।’’

এ দিন ফেসবুক লাইভ করে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সন্ত্রাস বন্ধ করার আবেদন করে বলেন, ‘‘বনগাঁ-সহ রাজ্য জুড়ে বিজেপি কর্মীদের উপরে আক্রমণ হচ্ছে, তাঁদের হত্যা করা হচ্ছে। আপনি আপনার কর্ম প্রয়োগের মাধ্যমে সেই সন্ত্রাস-লুটপাট বন্ধ করুন। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, আপনারা পদক্ষেপ করুন। বনগাঁয় আমরা জয়ী হওয়ার পরেও কর্মীদের উপরে মতুয়া পরিবারের উপরে হামলা করা হচ্ছে।’’ দলীয় কর্মীদের কাছে তাঁর আবেদন, ‘‘হিংসা-সন্ত্রাস বন্ধ না হলে আপনারা আর চুপ করে বসে থাকবেন না।’’

জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীদের বলে দিয়েছি সংযত থাকতে হবে। বিজয় মিছিল, আবির খেলা বন্ধ। কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিগ্রেডে বিজয় সমাবেশ করা হবে। বিজেপি বিভিন্ন এলাকায় উসকানি দিচ্ছে। সাধারণ মানুষ প্রতিরোধ করছেন। জেলায় কোনও গোলমাল হতে দেব না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement