ভোটের-সাজ। বহরমপুরে। ছবি: বিদ্যুৎ মৈত্র
আশঙ্কা উড়িয়ে জেলার প্ৰথম দফার নির্বাচন নির্বিঘ্নে ও শান্তিতে হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার জেলায় দ্বিতীয় দফায় ১১টি কেন্দ্রে নির্বাচন। প্ৰথম দফার মতো শান্তিতে নির্বাচন করতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে। জেলার ১১টি কেন্দ্রের জন্য ২১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় সাত হাজার ২০৬ জন রাজ্য পুলিশ কর্মী ও আধিকারিককে নির্বাচনে নিরাপত্তার জন্য কাজে লাগানো হচ্ছে। শুধু এসবেই সন্তুষ্ট নয় নির্বাচন কমিশন। নিরাপত্তা ব্যবস্থা আঁটসাট করতে মাইক্রো অবজারভার, ওয়েব কাস্টিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরই মধ্যে বিরোধীরা শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভয় দেখানো, নগদ অর্থ বিলি-সহ নানা অভিযোগ তুলেছেন। যদিও তৃণমূল সে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী বলেন, ‘‘অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে কমিশনের নির্দেশ মেনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের খড়গ্রাম, বড়ঞা, কান্দি, ভরতপুর, রেজিনগর, বেলডাঙ্গা, বহরমপুর, হরিহরপাড়া, নওদা, ডোমকল ও জলঙ্গিতে নির্বাচন হবে। এমনিতেই ভোটকে কেন্দ্র করে মুর্শিদাবাদের অশান্তির কালো মেঘ বেশি দেখা যায় ডোমকল, হরিহরপাড়া, নওদা, বেলডাঙ্গা, ভরতপুরের মতো বিধানসভা এলাকায়। এসব এলাকায় বাড়তি সর্তকতা রয়েছে। বিশেষ করে ডোমকলে অতিরিক্ত নজর রেখেছে প্রশাসন। তবে জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘তৃণমূল জয়ী হওয়ার জন্য একদিকে যেমন বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিরোধীদের ভয় দেখাচ্ছে, তেমনই নগদ টাকা বিলি করছে, মিথ্যা মামলায় পুলিশকে দিয়ে গ্রেফতার করাচ্ছে। আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন করব এবারে পঞ্চায়েত ভোটের দৃশ্য যেন কাউকে দেখতে না হয়। মানুষকে নিজের ভোট নিজে দেওয়ার সুযোগ করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।’’ বিজেপির মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক সৌমেন মণ্ডল বলেন, ‘‘এর আগে দফার নির্বাচনে রানিনগর সহ কয়েকটি জায়গায় তৃণমূল অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনী তা আটকে দিয়েছে। এবারেও কয়েকটি বিধানসভায় অশান্তির আশঙ্কা রয়েছে। আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। আমরা আশাবাদী নির্বাচন কমিশন অবাধ নির্বাচন করতে পারবে।’’
জেলা তৃণমূলের অন্যতম কো-অর্ডিনেটর অশোক দাস বলেন, ‘‘হারের ভয়ে এখন থেকেই ওরা আমাদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছেন। মানুষ আমাদের সঙ্গে আছেন। তাই ভোটে জেতার জন্য তৃণমূলকে গন্ডগোল পাকাতে হয় না।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদের এই ১১টি কেন্দ্রের মোট ভোটার হলেন ২৭ লক্ষ ২৫ হাজার ৩১ জন। তার মধ্যে ১৩লক্ষ ৯০ হাজার ৬৮৮ জন পুরুষ, ১৩ লক্ষ ৩৪ হাজার ২৮৪ জন মহিলা এবং ৫৯ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে। এই ১১টি কেন্দ্রে ৮৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের মধ্যে ৭ জন মহিলা প্রার্থী আছেন। ৩ হাজার ৭৯৬টি বুথে ভোটগ্রহণ করা হবে। তার মধ্যে ৭৬৫টি বুথ স্পর্শকাতর। মোট ১৭ হাজার ৯৪১ জন ভোট কর্মী রয়েছে।