তনুশ্রী চক্রবর্তী
দেখতে দেখতে ১০টা বছর কাটিয়ে ফেলেছি টলিউডে। তনুশ্রী চক্রবর্তী সাধারণ মানুষের কাছে একজন নায়িকা বা অভিনেত্রী। সেটা আমার একটা পরিচয় ঠিকই, কিন্তু শুধু তাতেই নিজেকে আর সীমাবদ্ধ রাখতে চাইনি। যাঁদের এত বছর বিনোদন উপহার দিয়েছি, তাঁদের জন্য আরও কিছু করার ভাবনাই ঘুরপাক খাচ্ছিল মনে।
অনেককেই বলতে শুনেছি, যে সব নায়িকাদের হাতে কাজ নেই, তাঁরাই নাকি এসে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছে। এই কথাটার সঙ্গে আমি একেবারেই সহমত নই। এই মুহূর্তে আমার হাতে অনেক কাজ। অর্থ উপার্জনের জন্য অন্য কোনও পেশার কথা ভাবার প্রয়োজন আমার নেই। আমি ছবির জগৎ থেকে কখনওই সরে যাব না। ভাল চিত্রনাট্য পেলে নিশ্চয়ই অভিনয় করব। কিন্তু এ বার পালাবদল ঘটানোর প্রয়োজন মনে হচ্ছিল। এই সময়ে রাজনীতিকেই তাই পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে ধরে নিয়েছি। জিততে পারিনি। কিন্তু রাজনীতি অনেক কিছু শিখিয়েছে।
দলের পতাকা হাতে তুলে নিতেই অনেকে প্রশ্ন করেছেন, আচমকা কেন মানুষকে সাহায্য করার ইচ্ছা জাগল আমার। আসলে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ভাবনা নতুন নয়। আগাগোড়া নিজের সাধ্যমতো চেষ্টাও করেছি সকলকে সাহায্য করার। তবে সেই দায়বদ্ধতা যখন বেড়ে যায়, তখনই একটা বড় রাজনৈতিক দলের সাহায্যের প্রয়োজন হয়। তাই যে দলকে আমার ভাল লাগে, যে দলে দুর্নীতি নেই, সেই দলের পতাকাই নিজের হাতে তুলে নিয়েছি।
দলে যোগ দেওয়া থেকে একটা দিনও ফাঁকা বসে থাকিনি। পথেঘাটে প্রচার করেছি। সাধারণ মানুষের দুঃখ দুর্দশা দেখেছি। ওঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। ওঁদের কথা শুনেছি। দল আমাকে প্রার্থী করবে, এই আশায় কিন্তু কাজ করতে নামিনি। শ্যামপুর কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা হওয়ার পরও তাই আলাদা করে যাদবপুর কেন্দ্র কেন পেলাম না, তা নিয়ে ভাবিনি। মানুষের কাছে কী ভাবে পৌঁছে যাওয়া যায়, এই কথাই ভেবেছি।
যে দায়িত্ব তাঁরা আমাকে দিয়েছেন, সেটা মনেপ্রাণে পালন করেছি বলে আমি মনে করি। আরও একটা দায়িত্ব রয়েছে নিজের কাজের জায়গার প্রতি। করোনা অতিমারি ইতিমধ্যেই যথেষ্ট ক্ষতি করেছে ইন্ডাস্ট্রির। টলিউডে এই মুহূর্তে লগ্নি প্রয়োজন। অনেক ছবি বিক্রির ক্ষেত্রেও বেশ সমস্যা দেখা যায়। আমার মনে হয় এ বার সে বিষয়টা নিয়েও ভেবে দেখা দরকার।
বিজেপি খারাপ না ভাল, তা নিয়ে অনেক তরজা হতে দেখলাম পশ্চিমবঙ্গে। তবে আমি বলতে পারি যে, বাংলার ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার কর্মযজ্ঞে শামিল হতে পেরেছি। জীবনের নতুন অধ্যায়ে এর থেকে বড় পাওনা আর কী হতে পারে!