ফাইল চিত্র।
ভোটের সময়ে পুলিশের একাংশের ভূমিকা নিয়ে এর মধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে খবর, এরই মধ্যে বিভিন্ন জেলার পুলিশ অফিসারদের নিয়ে খোঁজখবরও শুরু হয়ে গিয়েছে কলকাতার। কোন অফিসার ভোটে কী ভূমিকা পালন করেছেন, কোন অফিসার বাইরে এক কথা বললেও কাকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতা গিয়ে কার সঙ্গে দেখা করে এসেছেন, কোন আইসি বা ওসি প্রকাশ্যে বিজেপির গুনগান করেছেন, সব খতিয়ে দেখা হতে পারে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে তৃণমূল সূত্রে।
দলের রাজ্যের অন্যতম এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘অষ্টম দফার ভোটের সময় থেকে জেলা ধরে ধরে এই কাজ শুরু করা হয়েছে। সব তালিকা জমা পড়ছে হরিশ মুখার্জি রোড বাড়িতে। সেখান থেকে পাশের হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে নেত্রীর বাড়িতে তা পাঠানো হচ্ছে৷’’ তিনি জানান, প্রতি জেলা থেকে নাম জমা পড়ছে। সেগুলি আবার বিভিন্ন মাধ্যম থেকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সরকার গঠনের পরে করোনা কালেই পুলিশে ব্যাপক রদবদলের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, গত ছ’মাস ধরে রাজ্যে বিজেপির তীব্র হাওয়া বইছে বলে প্রচার চলেছে। এতে পালা বদলের আশঙ্কা, অনুমান করে পুলিশের একটা বড় অংশ মনে করতে থাকে, বিজেপির সরকার রাজ্যে আসতে চলেছে। সেই মতো তাঁরা কাজও শুরু করে দেন বলে তৃণমূলের দাবি। আইপিএস পদমর্যাদার অফিসার থেকে এএসআই, এসআই, ইন্সপেক্টর, ডিএসপি স্তরের অফিসারেরা ওই প্রচারে বিশ্বাস করেন। একদল বিজেপির দিকে ঝুঁকে পড়েন বলেও শাসকদল সূত্রে দাবি। ফলে শাসকদলের নেতাদের কথা না শোনা, রাতবিরেতে ফোন না ধরা, বিশেষ করে অভিযোগ শুনে ব্যবস্থা না নেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয় বলেও অভিযোগ করছেন তৃণমূলের লোকজনেরা।
তৃণমূলের ওই সূত্রের বক্তব্য, বিজেপি নেতাদের সঙ্গে পুলিশ অফিসারদের একাংশের সখ্য বাড়ানোর চেষ্টা, বিজেপি ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো— এ সবই তখন সকলের চোখে পড়েছে। এর ফলে তৃণমূল কর্মীদের উপরে অত্যাচার বা মারধরের ঘটনাতেও কান না দেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয় বলে ওই অংশের অভিযোগ। বিভিন্ন জেলার পুলিশ ছাড়াও কমিশনারেটের বেশ কয়েক জন কর্তা ও অফিসার এই দলে সামিল ছিলেন বলে তৃণমূলের দাবি। তাদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী তো বটেই, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব চেয়েছিলেন, ভোটের সময়ে পুলিশ সঠিক ভূমিকা পালন করবে, নিরপেক্ষ থাকবে। তাদের সেই সময়ের ‘গেরুয়া প্রীতি’ ও ‘অতিসক্রিয়তা’ ভাল চোখে দেখা হচ্ছে না, বলছেন তৃণমূলের ওই নেতারা। রাজ্যে পুলিশের উত্তরের এক কর্তার কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কড়া অবস্থান নেবেন তা স্পষ্ট। এখন দেখা যাক পরিস্থিতি কী দাঁড়ায়।’’