—প্রতীকী ছবি।
শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও, অন্তত এক দিনের জন্য হলেও সনিয়া গাঁধী পশ্চিমবঙ্গে ভোটের প্রচারে যেতে চান। কিন্তু রাহুল গাঁধী কবে পশ্চিমবঙ্গের ভোটের প্রচারে যাবেন, বা আদৌ যাবেন কি না, এখনও তার কোনও খবর নেই।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, আগামী ১৯ ও ২০ মার্চ রাহুল গাঁধী অসমে ভোটের প্রচারে যাবেন। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা অসমের প্রচারে যাবেন তার পরের দু’দিন, ২১ ও ২২ মার্চ। রাহুল-প্রিয়ঙ্কা টানা চার দিন অসমে প্রচার করলেও পশ্চিমবঙ্গে প্রচারের বিষয়ে এআইসিসি নীরব। প্রশ্ন উঠেছে, কেরলের রাজনৈতিক সমীকরণের জন্যই কি বাংলার ভোট আপাতত এড়িয়ে যেতে চাইছেন রাহুল? তিনি কি ৬ এপ্রিল কেরলে ভোটগ্রহণের পরে বাংলায় যাবেন?
রাহুলের বিষয়ে নিশ্চয়তা না-থাকলেও এআইসিসি-র তরফে পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে, সনিয়া এক দিনের জন্য হলেও বাংলায় প্রচারে যেতে আগ্রহী। রাজ্য নেতৃত্ব দিনক্ষণ ঠিক করলে সনিয়া এক দিনে দু’টি সভা করে আসতে পারেন। তার মধ্যে একটি সভা বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানের কেন্দ্রে হতে পারে।
রাহুল যখন পশ্চিমবঙ্গে প্রচার এড়িয়ে যাচ্ছেন, তখন জাতীয় রাজনীতিতে কংগ্রেসের শরিক এনসিপি-র প্রধান শরদ পওয়ার, আরজেডি-র তেজস্বী যাদব পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে প্রচারের পরিকল্পনা নেওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছে কংগ্রেস। রাজ্যের নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য পওয়ার-তেজস্বীদের চিঠি লিখে অনুরোধ করেছেন— তাঁরা তৃণমূলের হয়ে প্রচার করলে বিভ্রান্তি তৈরি হবে।
এই ‘বিভ্রান্তি’ এড়াতেই রাহুল আপাতত বাংলায় প্রচার এড়িয়ে যাচ্ছেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠদের দাবি। এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেডে বাম-কংগ্রেসের মঞ্চে জোটের নেতারা রাহুলকে বক্তা হিসেবে চেয়েছিলেন। কিন্তু রাহুল ব্রিগেডের সভা এড়িয়ে যান। পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস বামেদের সঙ্গে হাত মেলালেও কেরলে কংগ্রেস বাম সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া। রাহুল নিজে এখন কেরল থেকে লোকসভায় সাংসদ। ফলে কেরলে কংগ্রেস হেরে গেলে তার দায় রাহুলের উপরেও এসে পড়বে। কেরলে এখন নিয়মিত বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের বাগ্যুদ্ধ চলছে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে বামেদের সঙ্গে এক মঞ্চে যেতে চাইছেন না রাহুল।
কেরলের কংগ্রেস নেতা তথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা রমেশ চেন্নিথালা এ দিন অভিযোগ তুলেছেন, সিপিএম বিজেপি-কে সাহায্য করতে নিজের দলের নেতাদের বিজেপিকে প্রার্থী হিসেবে ভাড়া দিচ্ছে। সিপিএমের পার্টি অফিস রাতারাতি বিজেপি অফিসে রূপান্তরিত হচ্ছে। কেরলে এখন মাত্র একটি মাত্র আসনে বিজেপির বিধায়ক রয়েছেন। সেই নেমম কেন্দ্রেও সিপিএম দুর্বল প্রার্থী খাড়া করেছে বলে রমেশের অভিযোগ। আরএসএসের তাত্ত্বিক নেতা আর বালাশঙ্কর দাবি করেছেন, বিজেপি-সিপিএমের গোপন আঁতাত হয়েছে। বিজেপি নেতারা এই দাবি অস্বীকার করলেও কংগ্রেস পাল্টা অস্ত্র পেয়ে গিয়েছে। উল্টো দিকে বাম সরকারের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন কেরলের বিজেপি বিধায়ক ও রাজাগোপালের মন্তব্যকে হাতিয়ার করেছেন। রাজাগোপাল বলেছেন, অতীতে কেরলে বামেদের বিরুদ্ধে কংগ্রেস, বিজেপি, ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগের আঁতাত হয়েছে।
আবার বিজেপি নেতা প্রকাশ জাভড়েকরের কটাক্ষ, “কেরলের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, কংগ্রেসকে ভরসা করা যায় না। কিন্তু তাঁর দল সিপিএম বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধেছে। বাম ও কংগ্রেসের মধ্যে মানসিক সুস্থতা অবশিষ্ট নেই।”