রুটমার্চের এলাকা বাড়ল কেন্দ্রীয় বাহিনীর। ফাইল চিত্র।
বিধানসভা ভোট ঘোষণার আগেই এ বার রাজ্যে পৌঁছেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। শনিবার থেকেই দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় আধাসেনার টহল শুরু হয়ে গিয়েছিল। রবিবার রুটমার্চের এলাকা আরও বাড়ল। তবে উত্তরবঙ্গে রবিবার পর্যন্ত বাহিনী আসেনি।
ভাটপাড়া, গোঘাট, পুরশুড়া, কেশপুরের মতো ‘উত্তেজনাপ্রবণ’ এলাকার পাশাপাশি জঙ্গলমহলের বিভিন্ন গ্রাম এবং সাম্প্রতিক কালে যেখানে রাজনৈতিক সংঘর্ষ বেধেছে, মূলত সেই সব এলাকাতেই এ দিন রুটমার্চ করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সঙ্গে ছিলেন পুলিশকর্মীরাও। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার মানছেন, ‘‘আধাসামরিক বাহিনীর টহল শুরু হয়ে গিয়েছে। রয়েছে পুলিশি টহলও।’’ গ্রামের পথে ভারী বুটের শব্দে উৎসুকদের মধ্যে নানা ফিসফিসানিও চলেছে। কেশপুরেই যেমন একজন বলছিলেন, ‘‘এত আগে থেকেই বাহিনী!’’ আর এক জনের মন্তব্য, ‘‘ভালই তো। বাহিনী থাকলে নিরাপত্তাও থাকবে।’’
গত লোকসভা ভোটের পর থেকেই অশান্ত উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়া। শনিবার রাতে এখানে এক কোম্পানি বাহিনী পৌঁছেছে। এ দিন সকাল থেকে ভাটপাড়ার ভট্টপাড়া এবং কাঁকিনাড়ার কিছু এলাকায় টহল চলে। একটি দল নৈহাটির গরিফা এলাকাতেও টহল দেয়। সন্ধ্যাতেও ভাটপাড়ার বিভিন্ন এলাকায় টহল দেয় বাহিনী। হুগলির সন্ত্রাসপ্রবণ আরামবাগ মহকুমার চারটি থানা এলাকাতেই রবিবার আধাসেনা রুটমার্চ করেছে। দিন কয়েক আগে পুরশুড়ার সুঁদরুশে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণে এক জন মারা যান। এ দিন ওই এলাকায় টহল চলে। সম্প্রতি তৃণমূল-বিজেপির বোমাবাজিতে তপ্ত খানাকুলের বালিপুরে ও গোঘাটের সন্ত্রস্ত এলাকাতেও রুটমার্চ চলেছে। জওয়ানরা গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলেন। সকালে ডায়মন্ড হারবারের সরিষা এলাকায় টহল দেন জওয়ানরা। তবে ভাঙড়ে রুটমার্চ হয়নি। পূর্ব মেদিনীপুরে পটাশপুর এবং ভূপতিনগরে রুটমার্চ হয়েছে।
রবিবার সকালে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের সেরেংসগড়া শিবিরের জওয়ানেরা বারিকুল থানার রাওতোড়া, বগডুবি গ্রামে রুটমার্চ করেন। পাত্রসায়রে আসা বাহিনী এ দিন সোনামুখী শহরে রুটমার্চ করেছে। দু’জায়গাতেই পুলিশ ছিল। মাইকে ঘোষণা করা হয়, ‘শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট দেবেন। পুলিশ-প্রশাসন আপনাদের সঙ্গে রয়েছে। কোথাও ভয়-ভীতি থাকলে পুলিশকে জানান।’
এক কোম্পানি বাহিনী এসেছে পূর্ব বর্ধমানে। সকালে কালনা ২ ব্লকের বালিন্দর, বিকেলে বৈদ্যপুর থেকে গোপালদাসপুর পর্যন্ত রুটমার্চ হয়। বীরভূমেও সকালেই জওয়ানদের একটি দলকে সিউড়ির সদাইপুর থানার সাহাপুরে, অন্য দলটিকে ওই থানার ভুরকুনা পঞ্চায়েতে টহল দিতে দেখা গিয়েছে। পুলিশ তাদের পথ চিনিয়ে দিয়েছে। বিকেলেও দু’টি জায়গায় রুটমার্চ হয়েছে। জনবসতিপূর্ণ এলাকার মধ্যে দিয়ে রুটমার্চ করলেও এখানে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেননি জওয়ানরা।
দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বাহিনীর টহল চললেও উত্তরবঙ্গে এখনও বাহিনী আসেনি। এখানে প্রথম পর্যায়ে ২৯ কোম্পানি আধাসেনা আসার কথা। প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার রাতে, না-হলে সোমবার থেকে বাহিনী আসবে। মঙ্গলবার থেকে শুরু হতে পারে রুটমার্চ।