—প্রতীকী ছবি।
তাঁদের আপত্তি গ্রাহ্য হয়নি। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সিঙ্গুরের প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে বদল করেননি। তাই এই বিধানসভা কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নিলেন বিজেপির ‘বিদ্রোহী’ নেতারা। তাঁরা দলত্যাগের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। এ দিকে, শুক্রবার ওই এলাকায় দলের জেলা সহ-সভাপতি সঞ্জয় পাণ্ডের বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় স্থানীয় আহ্বায়ক সৌরেন পাত্রকে শো-কজ় করা হয়েছে জেলা নেতৃত্বের তরফে।
বিজেপির সিঙ্গুর মণ্ডলের সহ-সভাপতি গৌতম মোদক বলেন, ‘‘শুধু আমি নয়, সিঙ্গুরে দলের ৯৫ শতাংশ নেতা-কর্মীই দলত্যাগের জন্য তৈরি। আমরা এখানে প্রার্থী বদলের জন্য জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের কাছে যে আবেদন করেছিলাম, তার কোনও সাড়া পাইনি। তাই আমরা নির্দল প্রার্থী দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি।’’
তৃণমূল-ত্যাগী রবীন্দ্রনাথবাবুকে প্রার্থী হিসেবে মানতে না-পেরে বৃহস্পতিবার সন্ধে থেকে সিঙ্গুরের বুড়োশান্তি মাঠে মঞ্চ বেঁধে অনশনে বসেছেন বিজেপির আট ‘বিদ্রোহী’ নেতা। দলের রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব প্রার্থী বদলের দাবি না-মানায় তাঁরা রবীন্দ্রনাথবাবুকেই প্রার্থিপদ থেকে সরে দাঁড়াতে লিখিত আবেদন করেছিলেন। আলোচনাতেও বসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথবাবু রাজি হননি।
প্রার্থী বদল না-হওয়ায় শুক্রবার রাতে অনশন মঞ্চের কাছে দলের জেলা সহ-সভাপতি সঞ্জয় পাণ্ডের বাড়িতে অনশনকারীদেরই কয়েকজন হামলা চালান বলে অভিযোগ। তার জেরেই শনিবার সিঙ্গুরে দলের আহ্বায়ক সৌরেন পাত্রকে শো-কজ় করা হয় দলের জেলা নেতৃত্বের তরফে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সৌরেনবাবুকে জবাব দিতে বলা হয়েছে বলে জেলা বিজেপি সূত্রের খবর।
এ নিয়ে সৌরেনবাবুর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। বিজেপির হুগলি (সদর) সাংগঠনিক জেলা সভাপতি গৌতম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই ঘটনার নেপথ্যে আমাদের মোট চার জন ছিলেন বলে আমাদের কাছে খবর। তাই আহ্বায়ককে চিঠি দিয়ে কারণ দর্শানোর কথা বলা হয়েছে। আমরা ওই চিঠির যথাযথ উত্তর পাই ভাল। না পেলে রাজ্য নেতৃত্বকে বিষয়টি জানাব। রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশেই দলীয় স্তরে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। দলে শৃঙ্খলার প্রশ্নে কোনও আপস করব না।’’
সঞ্জয়বাবু শনিবার বলেন, ‘‘আমি সিঙ্গুরে বিজেপির সবচেয়ে পুরনো কর্মী। আর আমার বাড়িই ভাঙচুর করল দলের ছেলেরা? আমি এটা কিছুতেই মানতে পারছি না। এখন যাঁরা দল নিয়ে লাফালাফি করছেন, তারা এতদিন দলের অসময়ে ছিলেন কোথায়?’’ রবীন্দ্রনাথবাবু অবশ্য তাঁকে নিয়ে দলের এই আকচা-আকচি প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।