কাছে: বিজেপি নেতার বাড়িতে পার্থপ্রতিম রায়। সোমবার। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল প্রার্থী পার্থপ্রতিম রায় ভোট চাইতে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি হেমচন্দ্র বর্মণের বাড়িতে গেলেন। সোমবার সকালে আচমকাই তিনি চলে যান ওই বিজেপি নেতার বাড়ি। বিজেপি নেতাও তাঁকে আপ্যায়ণ করেন। হেমচন্দ্রের বাড়ি শীতলখুচিতে। ওই বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই প্রার্থী হয়েছেন পার্থ। এর আগেও তিনি দু’বার বিজেপি পার্টি অফিসে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করেছেন। ঘন ঘন বিজেপি-নেতা কর্মীদের কাছে কেন ভোট চাইতে যাচ্ছেন পার্থপ্রতিম, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাম নেতারা। তাঁদের ব্যাখ্যায়— এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে বিজেপি-তৃণমূলের আঁতাত রয়েছে।
তৃণমূলের দাবি, সৌজন্যের পরিচয় দিচ্ছেন তাঁরা। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতির দায়িত্বে থাকা পার্থ বলেন, “আমি শীতলখুচি কেন্দ্রের প্রার্থী। তাই দলমত নির্বিশেষে সবার কাছেই ভোট প্রার্থনা করছি। সবার কাছ থেকেই আশীর্বাদ নিচ্ছি।”
এ দিন বিজেপি নেতা হেমচন্দ্র পার্থকে আপ্যায়ণ করেও প্রশ্ন তোলেন, তৃণমূল প্রার্থী বিজেপি নেতা-কর্মীদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন, অথচ বিজেপি প্রার্থীর বাড়ি ঘেরাও করা হচ্ছে। হেমচন্দ্র বলেন, “কেউ বাড়িতে এলে তাঁকে আপ্যায়ণ করা আমাদের কর্তব্য। তৃণমূলের প্রার্থীর সঙ্গে সৌজন্যমূলক কথা হয়েছে। আমাদের কর্মীদের উপর হামলা হচ্ছে, সে কথা তাঁকে জানিয়েছি।’’হামলা-সন্ত্রাস বন্ধ হলে তবেই না সৌজন্যতার পরিচয় পাওয়া যাবে।”
গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে দেড় হাজারের কিছু বেশি ভোটে শীতলখুচি কেন্দ্রে এগিয়েছিল তৃণমূল। লোকসভার পরে ওই এলাকায় তৃণমূল-বিজেপি মধ্যে বহুবার সংঘর্ষ হয়েছে বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের বেশ কিছু কর্মী, সমর্থক জখম হন। দু’তরফের নানা কর্মী, সমর্থকদের বাড়ি থেকে শুরু করে দু’দলের একাধিক পার্টি অফিসও ভাঙচুর হয়। এই অবস্থায় বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারও শুরু হয়েছে জোরকদমে। সেখানে পার্থর সৌজন্যের রাজনীতি নিয়ে জেলায় সোরগোল পড়ে গিয়েছে।
তৃণমূল-বিজেপি ছাড়াও বাম-কংগ্রেস জোট শীতলখুচিতে তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। পার্থপ্রতিম ভোট প্রচার শুরু করার পর থেকেই বিজেপি কর্মীদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেন। কইমারি ও ভাওয়ের থানা এলাকায় দু’টি বিজেপি পার্টি অফিসে ঢুকে বিরোধী দলের কর্মীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কোলাকুলি করেন। তা নিয়ে দুইপক্ষের কর্মী-সমর্থকদের অনেকেই ওই ঘটনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। কেউ কেউ সমালোচনাও করেছেন। পার্থর ‘সৌজন্য’ নিয়ে শীতলখুচির সিপিএম প্রার্থী সুধাংশু প্রামাণিক বলেন, “আমরা তো আগেই বলেছি ‘বিজেমূল’ থেকে সাবধান। সেটাই প্রমাণ হচ্ছে বার বার। সাধারণ মানুষের কাছে বামেরাই একমাত্র বিকল্প।”