নজরে: অষ্টম ও শেষ দফার ভোটের আগে শহরে চলছে নাকা-তল্লাশি। বুধবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্যে অষ্টম তথা শেষ দফার নির্বাচনে শহরের উত্তর, মধ্য এবং পূর্ব কলকাতার সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট হবে। ভোটগ্রহণ-পর্ব শান্তিপূর্ণ করতে দাগি দুষ্কৃতীদের দিকে নজররাখছে লালবাজার। ভোটের সময়ে তারা যাতে কোথাও যেতে না পারে, তার জন্য তাদের নজরবন্দি করে রাখবে পুলিশ। একই সঙ্গে বহিরাগতেরা যাতে এলাকায় ঢুকে গোলমাল পাকায়, সে দিকেও নজর রাখবে বাহিনী।
লালবাজার সূত্রের খবর, বাহিনীর অন্যতম লক্ষ্য, পক্ষপাতহীন থেকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট-পর্ব শেষ করা। গোলমালের আশঙ্কায় সব থেকে বেশি নজর থাকছে মানিকতলা, বেলেঘাটা এবং কাশীপুর-বেলগাছিয়া কেন্দ্রে। গত লোকসভা ভোটে এ সব জায়গায় বিক্ষিপ্ত গোলমাল হয়েছিল। এ বার ভোট প্রক্রিয়া শুরুর পর থেকেই মানিকতলা এবং কাশীপুর-বেলগাছিয়া কেন্দ্রের বিভিন্ন জায়গা থেকে গোলমালের খবর আসছিল। ওই এলাকাগুলির দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে বচসা থেকে হাতাহাতি, সবই চলেছে প্রায় নিত্যদিন।
পুলিশের একটি সূত্রের মতে, মানিকতলা, বেলেঘাটা, কাশীপুরের মতো এলাকায় এমনিতেই গোলমাল লেগেই থাকে। রাজনৈতিক ভাবেও স্পর্শকাতর ওই এলাকাগুলিতে ভোটের দিন শান্তি বজায় রাখাই বাহিনীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
লালবাজার জানাচ্ছে, ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের দুশো মিটারের বাইরে রাজনৈতিক দলের শিবির থাকতে পারে, তবে সেখানে দু’জনের বেশি যেন না বসেন। এই নিয়ম কঠোর ভাবে মানতে বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া আছে। কোথাও গোলমালের আঁচ পেলেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে গঠিত কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) যাতে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়, সেই ব্যবস্থা প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল, হাওড়া কিংবা সল্টলেক, রাজারহাট থেকে আসা দুষ্কৃতীরা যাতে কলকাতার ভোটে গোলমাল করতে না পারে, সে জন্য সচেষ্ট লালবাজার। কলকাতায় ঢোকার সব দিকেই রয়েছে সাদা পোশাকের পুলিশের নজরদারি। হাওড়া এবং উত্তর ২৪ পরগনা থেকে যাতে জলপথে গঙ্গা পেরিয়ে শহরে দুষ্কৃতীরা ঢুকতে না পারে, সে দিকেও নজর থাকছে। পুলিশের মতে, বহিরাগত দুষ্কৃতীদের ঠেকাতে পারলেই শেষ দফার ভোট নির্বিঘ্নে শেষ হবে।
আজকে ভোট হবে উত্তর, মধ্য এবং পূর্ব কলকাতার ২৯টি থানা এলাকায়। সাতটি বিধানসভা এলাকার ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৫৪৭টি। বুথ থাকছে ২০৮৩টি। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা
জানান, ওই এলাকাকে ভাগ করা হয়েছে ৯৮টি সেক্টরে। প্রতি সেক্টরের জন্য থাকছে একটি করে সেক্টর মোবাইল বাহিনী।
কিউআরটি-র মতো ওই বাহিনী নিজেদের এলাকায় বুধবার থেকেই টহল দিতে শুরু করেছে। এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে ৮৭টি আর টি মোবাইল ভ্যান। শহরের ২৯টি বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় ঘাঁটি গেড়েছে হেভি রেডিয়ো ফ্লাইং স্কোয়াড বাহিনীর গাড়ি।
গত দফার ভোটের মতো এ বারেও বিভিন্ন ট্র্যাফিক গার্ডের সার্জেন্টদের নিয়ে তৈরি হয়েছে মোটরবাইক পেট্রোলিং টিম। দু’জন করে সার্জেন্টকে নিয়ে গঠন করা হয়েছে একটি করে
বাইক-টিম। প্রতি টিমে থাকছেন দু’জন সার্জেন্ট, দু’জন কনস্টেবল এবং দু’টি বাইক। একটি বাইকে এক জন সার্জেন্ট এবং এক জন কনস্টেবল সওয়ার হবেন। এক-একটি টিম অর্থাৎ, দু’টি বাইক তিন থেকে চারটি বুথের বাইরের এলাকা ঘুরে টহল দেবে। ইতিমধ্যেই ২৯টি থানায় অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়েছেন এক জন করে এসি পদমর্যাদার ২৯ জন অফিসার।