গিয়াসউদ্দিন মোল্লা। নিজস্ব চিত্র।
প্রার্থিতালিকা ঘোষণার আগেই উঠল প্রার্থী বদলের দাবি। মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রে এই দাবি উঠেছে সেখানকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী গিয়াসউদ্দিন মোল্লার বিরুদ্ধে। দুর্নীতির অভিযোগে গত কয়েকদিন ধরেই তাঁর বিরুদ্ধে লাগাতার পোস্টার পড়ছে মগরাহাটে। মন্ত্রী নিজে এই ব্যাপারে বিরোধী শিবিরে যাওয়া দলের ‘গদ্দার’-দের দোষারোপ করেছেন। যদিও বিরোধীদের পাল্টা দাবি, এ আসলে তৃণমূলেরই কাজ, ঘর সামলাতে না পেরে বিরোধীদের দুষছেন মন্ত্রী।
সংখ্যালঘু ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী গিয়াসউদ্দিন মোল্লা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তাঁর নিজের কেন্দ্র মগরাহাট পশ্চিমের বিভিন্ন এলাকায় চোখে পড়ে তাঁর বিরুদ্ধে পোস্টার। কোথাও লেখা হয়েছে, ‘দলের নামে দুর্নীতি, উন্নয়নের নামে শোষণের কারিগর মোল্লার বদল চাই’। কোথাও গিয়াসউদ্দিনের পরিবর্তে নতুন প্রার্থী দাঁড় করানোর জোরালো দাবি তোলা হয়েছে। উস্তি থানার হটুগঞ্জ, বানেশ্বরপুর, উত্তর কুসুম-সহ বিভিন্ন এলাকায় বিধায়কের বিরুদ্ধে লেখা ওইসব পোস্টার চোখে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের। বৃহস্পতিবার এই পোস্টার নিয়ে মগরাহাট কেন্দ্রে জটিল হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
মন্ত্রী বলেছেন, ‘‘কিছু গদ্দার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি ও আব্বাসের হাত ধরেছে। তারাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে রাতের অন্ধকারে এই পোস্টার লাগিয়েছে। মিথ্যে অপপ্রচার করে কোনও লাভ নেই। বিধানসভা ভোটে মগরাহাট পশ্চিম থেকে বিপুল ভোটে তৃণমূলই জিতবে।’’
গিয়াসউদ্দিনের বিরুদ্ধে এমনই পোস্টার পড়েছে তাঁর নিজের কেন্দ্রে।
জেলার বিজেপি সহ-সভাপতি সুফল ঘাটু পাল্টা বলেছেন, ‘‘তৃণমূলই দলের বিধায়কের বিরুদ্ধে পোস্টার ফেলেছে। এটা তাদেরই নেতা কর্মীদের কাজ। কতটা দুর্নীতি করলে দলের লোকজন এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পোস্টার ফেলে! মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের বাসিন্দারা নিশ্চয়ই তা বুঝতে পারছেন।’’ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ‘গদ্দারি’-র অভিযোগ এনেছেন গিয়াসউদ্দিন। জবাবে বিজেপি বলেছে, ‘‘কথায় কথায় বিজেপি-সহ অন্যান্য বিরোধী দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে লাভ নেই। নিজের ঘর সামলাতে না পেরে অন্যকে দোষারোপ করার মিথ্যে নাটকে কেউই কান দেবেন না।’’
প্রসঙ্গত, মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের অধিকাংশ ভোটারই সংখ্যালঘু এবং তফশিলি জাতিভুক্ত। গত পঞ্চায়েত এবং লোকসভা নির্বাচনে সংখ্যালঘু ভোটারদের ভোট তৃণমূলের দিকেই ছিল। কিন্তু আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট নিয়েও বেশ সাড়া পড়েছে মগরাহাট পশ্চিম বিধানসভার কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, যদি বামেদের সঙ্গে জোট বেঁধে আব্বাস সিদ্দিকি এই বিধানসভায় প্রার্থী দেন, তাহলে সংখ্যালঘু এবং তফশিলি ভোটের একটা বড় অংশ যাবে তাঁদের দিকেই।